পেছনের আলোচনা দ্বারা কেউ যেন এটা মনে না করেন যে, কেবল ‘যুক্তি-তর্ক’, ‘বাকযুদ্ধ’ আর ‘দলীল-প্রমাণ’ এর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীতে নাস্তিক্যবাদের বিস্তার রোধ করবো। কারণ ইসলাম ও তাওহীদ নিছক কোনো মৌখিক শব্দমালার নাম নয়; বরং এটি জীবনের ময়দানে বাস্তব প্রয়োগের নাম। আর তাই ইসলামের সত্যতার প্রমাণ কেবল মুখে নয়; কাজের মাধ্যমেও দেওয়া অপরিহার্য। উদাহরণত, কেউ ইসলামকে ‘পশ্চাৎপদ’ ও ‘প্রগতিবিরোধী’ বলে অপবাদ দিলো। তাহলে এই অপবাদের দাঁত-ভাঙা জবাব দিতে হবে মুসলিমদের শক্তিশালী, উন্নত ও ‘সুস্থ’ প্রগতির ধারক-বাহক হওয়ার মধ্য দিয়ে। একইভাবে কেউ যদি বলে যে, ইসলাম আধুনিক জীবনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তবে এই অভিযোগ পরিপূর্ণ অর্থে খণ্ডন করতে হলে জীবনের ময়দানে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। এভাবেই পৃথিবীতে সত্য সত্যরূপে আর মিথ্যা মিথ্যারূপে প্রকাশ পাবে।
সংক্ষেপে বলা যায়, আধুনিক যুগের নাস্তিক্যবাদ মুকাবিলা করতে হলে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। কেবল কথা-বার্তা, যুক্তি-তর্ক আর বই-পুস্তক দিয়ে নয়; জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামকে শ্রেষ্ঠ ও উপযোগী বলে প্রমাণ করতে হবে। নতুবা এই যুদ্ধে আমাদের জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই।
নাস্তিক্যবাদের কথার জবাব যেমন মুখে দিতে হবে। তেমনি কাজের জবাব কাজের মাধ্যমেই দিতে হবে। সমাজে নাস্তিক্যবাদ যদি বিকৃতি, বিশৃঙ্খলা, ভঙ্গুরতা ও আবিলতার অন্ধকার জন্ম দেয়, তবে তাওহীদের সেখানে সুস্থতা, শৃঙ্খলা, স্থিতি ও নির্মলতার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে। একইভাবে নাস্তিক্যবাদের প্রকাশ যদি হয় জুলুমের দ্বারা, তবে তাওহীদের প্রকাশ ঘটাতে হবে অর্থ হতে হবে ইনসাফের মাধ্যমে। একইভাবে ইসলামের পতাকাবাহীরা যদি এই দাবি করেন যে, ইসলাম হলো পৃথিবীর একমাত্র বাস্তবসম্মত দীন ও প্রকৃত সফলতার পথ, তবে কেবল চেঁচামেচি না করে ইসলামের বস্তুনিষ্ঠ প্রয়োগের মাধ্যমে একটি সত্যিকারার্থে সুখী ও আদর্শ সমাজ পৃথিবীকে উপহার দিয়ে দাবির যথার্থতা ও ন্যায্যতার প্রমাণ দিতে হবে।
এভাবেই যদি আজকের মুসলিম জাতি নাস্তিক্যবাদের সকল সন্দেহের জবাব দিতে সক্ষম হয়, কেবল কথার পরিবর্তে কাজের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর আস্থার জায়গাটুকু অধিকার করে নেয়, তবে একদিন না একদিন অবশ্যই আমাদের পৃথিবী থেকে নাস্তিক্যবাদ উন্মূলিত হবে। বিশ্বাসের ফুল বাগান অবিশ্বাসের হুতোম পেঁচা থেকে চিরদিনের জন্য মুক্তি পাবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সহায় হোন। আমীন।