দৃষ্টির হেফাজত করার কয়েকটি উপকারিতা:

চক্ষুকে অবনত রাখার কয়েকটি উপকারিতা ইমাম ইবনুল কাইয়েম রহ. বর্ণনা করেন:

এক- আফসোসের যন্ত্রণা ও না পাওয়ার বেদনা থেকে অন্তরকে মুক্ত রাখা। কারণ, যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়, তার আফসোস আর না পাওয়ার বেদনা লেগেই থাকে।

দুই- দৃষ্টির হেফাযত মানুষের অন্তরে নূর ও আলো সৃষ্টি করে। অনুরূপভাবে দৃষ্টিকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেওয়া দ্বারা অন্তর, চেহারা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আচ্ছন্ন হয়ে যায়।

তিন- দৃষ্টির হেফাযত করা দ্বারা একজন মানুষের দূরদর্শিতা বৃদ্ধি পায় এবং সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সক্ষম হয়। যেমন আল্লামা কিরমানী রহ. বলেন, যে ব্যক্তি তার বাহ্যিক দিকসমূহকে সুন্নাত দারা সাজায়, আর সবসময় অন্তর দিয়ে আল্লাহর কথা চিন্তা করে, নিষিদ্ধ বস্তু হতে চোখকে হেফাযত করে, প্রবৃত্তিকে অন্যায় কর্ম হতে বিরত রাখে এবং হালাল খায় সে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে কখনোই অক্ষম হবে না।

চার- তার জন্য ইলমের পথ ও দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হবে এবং ইলমের উপকরণসমূহ তার জন্য সহজ হবে। আর এটি অন্তরের নূরের কারণেই হয়ে থাকে। কারণ, যখন অন্তর নূর দ্বারা আলোকিত হবে, তখন তার মধ্যে সব কিছুর হাকিকত স্পষ্ট হবে। আর যে ব্যক্তি তার দৃষ্টিকে যেভাবে ইচ্ছা ছেড়ে দেবে, তার অন্তর অন্ধকার ও আবর্জনাময় হবে।

পাঁচ- চোখের হেফাযত করা দ্বারা মানুষের আত্মার শক্তি, দৃঢ়তা ও সাহসিকতা বৃদ্ধি পায়।

ছয়- চোখের হেফাযত করা মানুষের অন্তরে তৃপ্তি, আনন্দ ও উজ্জ্বলতাকে বৃদ্ধি করে। চোখে দেখে কোনো কিছু উপভোগ করার লজ্জা হতে, অন্তরের আনন্দ ও খুশি অনুভব করা অনেক বড়।

সাত- চোখের হেফাযত একজন মানুষকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে। কারণ, খারাপ বস্তুর দিক তাকানো মানুষকে অশ্লীল কর্মের দিকে ধাবিত করে। আর যখন কোনো ব্যক্তি তার চোখের হেফাযত করে, সে অশ্লীল কাজের মধ্যে পতিত হওয়া থেকে নিরাপদ থাকে। আর যখন সে তার দৃষ্টিকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেবে, তখন তার ধ্বংস অনিবার্য।

পরিশেষে আমরা বলব, আজ আমাদের যুব সমাজের সমস্যা অত্যন্ত প্রকট আকার ধারণ করছে। তারা আজ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। যুব সমাজকে যদি রক্ষা করা সম্ভব না হয়, তাহলে সমাজের অবক্ষয় দূর করা কোনভাবেই সম্ভব হবে না। তাই আমরা সবাই সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করতে এবং তাদেরকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানো প্রাণপণ চেষ্টা যেন চালিয়ে যাই।

আল্লাহর নিকট আমাদের কামনা আল্লাহ তা‘আলা যেন, আমাদের যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদেরকে একটি সুন্দর সমাজ উপহার দেন। আমীন।