যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মোবাইল ফোন এখন আর শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। চীনের সুবাদে ইন্টারনেট, চ্যাটিং, অডিও, ভিডিও সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেটের মূল্য সকলের সাধ্যের মধ্যেই আছে। আকাশ সংস্কৃতি, ইন্টারনেট, মোবাইল, ভিডিও’র মত প্রযুক্তি এখন সবার জন্য অবারিত। নিত্য নতুন বহুরূপী সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ মোবাইল সেট তরুণদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মোবাইল সেট নিয়ে সব চেয়ে বেশী মাতামাতি লক্ষ্য করা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কখনও প্রয়োজনে কখনও সময়ের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে অভিভাবকরা বাধ্য হয়েই অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্র। কিন্তু কখনও কি অভিভাবকরা চিন্তা করে দেখেছে মোবাইলের পার্শ্ব কিছু অপব্যবহারের কারণে তার সন্তান বিপথগামী হয়ে পড়ছে? সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সংবাদের দিকে একটু নজর দিলেই বোঝা যায় মোবাইল মানুষের নৈতিকতাকে কিভাবে ধ্বংস করছে। খুন, ধর্ষণ, ইভ-টিজিং সহ যে সকল ঘটনা অহরহ ঘটে চলেছে তার পিছনে মোবাইলের একটা ভূমিকা বরাবরই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ জড়িয়ে পরেছে মোবাইল পর্ণোগ্রাফি বা ব্লু ফিল্ম আসক্তিতে। ইন্টারনেটের সুবাদে এবং বিভিন্ন মোবাইল সার্ভিসিং সেন্টার থেকে গান ঢুকানোর নামে শিক্ষার্থীরা সুলভেই তাদের মোবাইল ম্যামোরীতে নগ্ন ভিডিও ক্লিপস লোড করে নিচ্ছে। এ সব নগ্ন ভিডিও এক সাথে অনেকে মিলে দেখছে এবং ব্লুটুথ এর সুবাদে তা এক হাত অন্য হাত হয়ে ছড়িয়ে পরছে সবার হাতে হাতে। শুধু তাই নয় ক্লাসের পিছনের বেঞ্চে বসে ক্লাসের সময় শিক্ষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোবাইলের অপব্যবহারের কথাও শোনা গেছে। ভাবার বিষয় হচ্ছে, এ আসক্তি শুধু ছেলেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, মেয়েদের ও একটা বড় অংশ ব্লু ফিল্ম আসক্তিতে জড়িয়ে পরেছে। এর ফলে খুব অল্প বয়সেই ছেলে মেয়েদের মাঝে যৌন আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, ইভ-টিজিং, আত্মহত্যা, অপহরণসহ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে অল্পবয়সী ছেলে মেয়েরা। আধুনিকতার নামে এই উগ্র আধুনিকতার কবলে পড়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দিন দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এগিয়ে যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে এই ধ্বংস থেকে বাঁচাতে তাদের নৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা সব থেকে বেশী জরুরী। পাশাপাশি সন্তানদের মোবাইল সেট কিনে দেওয়ার সময় অভিভাবকদের ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে করে মোবাইলের অপব্যবহার না হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে করে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠা সার্ভিসিং সেন্টারগুলো থেকে মোবাইলে পর্ণোগ্রাফি ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে মাধ্যমিক পড়ুয়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে বিধি নিষেধের ব্যাপারে সরকারীভাবে ভেবে দেখার সময় এসেছে।