যেসব জড়তা ও প্রতিবন্ধকতা দাওয়াতের ক্ষেত্রে মানুষের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। কেননা অনেক দা‘য়ী ভাইদেরকে দেখেছি তারা মানুষের মাঝে অসৎ কাজ দেখলে তাদের মধ্যে একধরনের অহমিকা ও অপছন্দ সৃষ্টি হয়, ফলে তারা তার কাছে যায় না এবং তাকে ভাল উপদেশও দেয় না। অথচ এরূপ করা কখনো হিকমতপূর্ণ নয়। বরং হিকমত হলো তার কাছে গিয়ে তাকে দাওয়াত দেয়া ও তাকে এ কাজের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করা। এ কথা কখনো বলবেন না যে, তারা ফাসিক ফুজ্জার, সুতরাং তাদের আশে পাশে যাওয়া যাবে না। তাহলে হে দা‘য়ী ভাই, আপনি যদি তাদের পাশে না যান এবং তাদেরকে দাওয়াত না দেন তাহলে কে এ দায়িত্ব নিবে? তাহলে অসৎ কাজ সম্পাদনকারী কেউ কি তাদের দায়িত্ব নিবে? অজ্ঞ লোকেরা কি এ কাজের দায়ভার নিবে? না, কখনও না। এজন্যই দা‘য়ীকে ধৈর্য ধরতে হবে। এ ধৈর্যের কথাই ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি। নিজে ধৈর্য ধরবে এবং মনে মনে অন্যায় কাজটি ঘৃণা করবে।
মানুষের মাঝে দাওয়াতের ক্ষেত্রে জড়তা ও প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে ফেলতে হবে, যাতে যাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছানো দরকার তাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছাতে পারে। পক্ষান্তরে তাদেরকে অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্য করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের বিপরীত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বের মৌসুমে মিনায় অবস্থানের দিনে মুশরিকদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে দাওয়াত দিতেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে, তিনি মানুষের মাঝে দাওয়াত দিতে নিজেকে পেশ করতেন,
" هَلْ مِنْ رَجُلٍ يَحْمِلُنِي إِلَى قَوْمِهِ، فَإِنَّ قُرَيْشًا قَدْ مَنَعُونِي أَنْ أُبَلِّغَ كَلَامَ رَبِّي "
“কেউ কি আছে যে আমাকে তার সম্প্রদায়ের কাছে নিয়ে যাবে (তাদের মাঝে আমি দাওয়াত দিব), কেননা কুরাইশরা আমাকে আল্লাহর বাণী প্রচারে বাধা দেয়”।[1]এরূপ ঐকান্তিকতা ও অধ্যবসায় যখন আমাদের নবী, ইমাম ও মডেল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের, তাহলে আমাদের উপর ফরয হলো আমরা তাঁর মতো হয়ে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিব।