মানবজাতি তাদের মু‘আমালা (লেনদেন) মু‘আশারা (দাম্পত্যজীবন)সহ জীবনের যাবতীয় ক্ষেত্রে যা কিছুর প্রয়োজন অনুভব করে তার সবকিছুর বর্ণনাই আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে দিয়েছেন। হয় সরাসরি বর্ণনা করেছেন অথবা ইশারায় বা অর্থ দ্বারা বুঝিয়েছেন অথবা কথা দ্বারা বুঝিয়ে দিয়েছেন।
হে আমার ভাইয়েরা! অনেকেই আল্লাহ তা‘আলার বাণী-
﴿وَمَا مِن دَآبَّةٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ وَلَا طَٰٓئِرٖ يَطِيرُ بِجَنَاحَيۡهِ إِلَّآ أُمَمٌ أَمۡثَالُكُمۚ مَّا فَرَّطۡنَا فِي ٱلۡكِتَٰبِ مِن شَيۡءٖۚ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّهِمۡ يُحۡشَرُونَ ٣٨﴾ [الانعام: ٣٨]
“আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণী এবং দু’ডানা দিয়ে উড়ে এমন প্রতিটি পাখি, তোমাদের মতো এক একটি উম্মত। আমরা কিতাবে কোনো ত্রুটি করি নি। অতঃপর তাদেরকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ৩৮] -এর তাফসীর করতে গিয়ে এ ব্যাখ্যা করেছেন যে, مَّا فَرَّطۡنَا فِي ٱلۡكِتَٰبِ مِن شَيۡءٖۚ এখানে ٱلۡكِتَٰبِ কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্য কুরআন – বস্তুত এ ব্যাখ্যটি সঠিক নয়।
সঠিক ব্যাখ্যা হলো, এখানে কিতাব দ্বারা উদ্দেশ্য লাওহে মাহফুয বুঝানো হয়েছে। কারণ, কুরআনের গুণাগুণ আল্লাহ তা‘আলা উল্লিখিত আয়াতের নাফী তথা না সূচক বর্ণনা (ত্রুটি করি নি) এর ছেয়েও অধিক প্রাঞ্জল ও স্পষ্ট ভাষায় হাঁ সূচক শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করেছেন। আর তা হলো, আল্লাহ তা‘আলার বাণী, তিনি বলেন,
﴿وَنَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ تِبۡيَٰنٗا لِّكُلِّ شَيۡءٖ وَهُدٗى وَرَحۡمَةٗ وَبُشۡرَىٰ لِلۡمُسۡلِمِينَ ٨٩﴾ [النحل: ٨٩]
“আর আমরা আপনার ওপর কিতাব নাযিল করেছি প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট বর্ণনা, হিদায়াত, রহমত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদস্বরূপ”। [সূরা আন-নাহাল, আয়াত: ৮৯] এ কথাটি উল্লিখিত আয়াত— مَّا فَرَّطۡنَا فِي ٱلۡكِتَٰبِ مِن شَيۡءٖۚ ثُمَّ إِلَىٰ رَبِّهِمۡ يُحۡشَرُونَ -এর তুলনায় অধিক সুন্দর ও স্পষ্ট।