কবরেও মানুষ ফিতনার সম্মুখীন হবে। যখন একজন মানুষকে কবরে রাখা হয়, তখন দুইজন ফেরেশতা এসে তাকে বসাবে এবং তাকে জিজ্ঞাসা করবে- তোমার রব কে? তোমার দীন কি? তোমার নবী কে? এ তিনটি প্রশ্নের উত্তরের ওপর নির্ভর করবে লোকটির ভাগ্য। যদি লোকটি সঠিক উত্তর- আমার রব আল্লাহ, আমার দীন ইসলাম এবং নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম- দিতে পারে, তখন একজন আহ্বানকারী আহ্বান করে বলবে, আমার বান্দা উত্তর সঠিক দিয়েছে, তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দাও। অতঃপর তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হবে। জান্নাতের শীতল বাতাস ও সুঘ্রাণ আসতে থাকবে। সে জান্নাতের বড় বড় প্রাসাদ দেখতে পাবে এবং বলবে হে রব! তুমি কিয়ামত কায়েম কর, যাতে আমি আমার পরিবার পরিজনের নিকট ফিরে যেতে পারি।
আর যখন লোকটি তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না। তখন সে বলবে, হায়! আমি কিছুই জানি না। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে সে বলবে, হায়! আমি কিছুই জানি না। আমি লোকদের এ ধরনের কথা বলতে শুনেছি। লোকটি দুনিয়াতে ঈমান আনে নি, দীনের আনুগত্য করে নি। সে দুনিয়াতে অন্ধ-অনুকরণ করত। অথবা দুনিয়ার ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে ঈমান প্রকাশ করত আর অন্তরে কুফরকে লুকিয়ে রাখত। তখন কবরে লোকটি বলবে আমি দুনিয়াতে কতক লোককে এ ধরনের কিছু কথা বলতে শুনেছি তাই আমিও তা বলেছি। তখন একজন আহ্বানকারী আহ্বান করে বলবে- আমার বান্দা মিথ্যা কথা বলছে। তোমরা তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও। তখন জাহান্নামে তার অবস্থান দেখতে পাবে এবং বলবে হে রব! তুমি কিয়ামত কায়েম করো না।
এ হলো একজন মানুষের কবরের পরীক্ষা ও ফিতনা। আদম সন্তান তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতি নিয়তই পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। হায়াত মাওত এবং কবর সব জায়গায় পরীক্ষা দিতে হবে। তবে উত্তম পরিণতি তাদের জন্য যারা ধৈর্য ধরে হকের ওপর অটল অবিচল থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿يُثَبِّتُ ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱلۡقَوۡلِ ٱلثَّابِتِ فِي ٱلۡحَيَوٰةِ ٱلدُّنۡيَا وَفِي ٱلۡأٓخِرَةِۖ وَيُضِلُّ ٱللَّهُ ٱلظَّٰلِمِينَۚ وَيَفۡعَلُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُ ٢٧﴾ [ابراهيم: ٢٧]
“আল্লাহ অবিচল রাখেন ঈমানদারদেরকে সুদৃঢ় বাণী দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে। আর আল্লাহ যালিমদের পথভ্রষ্ট করেন এবং আল্লাহ যা ইচ্ছা তা করেন”। [সূরা ইবরাহীম, আয়াত: ২৭]
﴿جَنَّٰتُ عَدۡنٖ يَدۡخُلُونَهَا وَمَن صَلَحَ مِنۡ ءَابَآئِهِمۡ وَأَزۡوَٰجِهِمۡ وَذُرِّيَّٰتِهِمۡۖ وَٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يَدۡخُلُونَ عَلَيۡهِم مِّن كُلِّ بَابٖ ٢٣ سَلَٰمٌ عَلَيۡكُم بِمَا صَبَرۡتُمۡۚ فَنِعۡمَ عُقۡبَى ٱلدَّارِ ٢٤﴾ [الرعد: ٢٣، ٢٤]
“স্থায়ী জান্নাতসমূহ, যাতে তারা এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, তাদের স্ত্রীগণ ও তাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সৎ ছিল তারা প্রবেশ করবে। আর ফিরিশতারা প্রতিটি দরজা দিয়ে তাদের নিকট প্রবেশ করবে। (আর বলবে) ‘শান্তি তোমাদের ওপর, কারণ তোমরা সবর করেছ, আর আখিরাতের এ পরিণাম কতই না উত্তম”। [সূরা রা‘দ, আয়াত: ২৩-২৪]
অর্থাৎ দুনিয়ার জীবনে দীনের ওপর অটল-অবিচল থাকা এবং ধৈর্য ধারণ করার কারণে এ সম্মানের অধিকারী হলে। তোমরা ধৈর্য ধারণ করছ বলেই তোমাদের ওপর শান্তি। তোমরা এ পুরস্কার বা বিনিময় এমনিতে পাও নি। তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আনা, ধৈর্য ধারণ করা ও হকের ওপর অটুট থাকার কারণেই এ ধরনের সাওয়াব বা বিনিময় লাভ করবে। তাদের বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, سَلَٰمٌ عَلَيۡكُم بِمَا صَبَرۡتُمۡۚ فَنِعۡمَ عُقۡبَى ٱلدَّارِ ‘শান্তি তোমাদের ওপর, কারণ তোমরা সবর করেছ, আর আখিরাতের এ পরিণাম কতই না উত্তম’।
আর যারা কাফির (আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন) তাদের বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلَوۡ تَرَىٰٓ إِذۡ يَتَوَفَّى ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ يَضۡرِبُونَ وُجُوهَهُمۡ وَأَدۡبَٰرَهُمۡ وَذُوقُواْ عَذَابَ ٱلۡحَرِيقِ ٥٠ ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتۡ أَيۡدِيكُمۡ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَيۡسَ بِظَلَّٰمٖ لِّلۡعَبِيدِ ٥١﴾ [الانفال: ٥٠، ٥١]
“আর যদি তুমি দেখতে, যখন ফেরেশতারা কাফিরদের প্রাণ হরণ করছিল, তাদের চেহারায় ও পশ্চাতে আঘাত করে, আর (বলছিল) ‘তোমরা জ্বলন্ত আগুনের আযাব আস্বাদন কর’। তোমাদের হাত আগে যা প্রেরণ করেছে সে কারণে এ পরিণাম। আর নিশ্চয় আল্লাহ বান্দাদের প্রতি যুলুমকারী নন”। [সূরা আল-আনফাল, আয়াত: ৫০-৫১]
একজন মানুষ জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ফিতনার মধ্যেই বাস করতে হয় এমনকি যখন তাকে কবরে রাখা হয় তখনও তাকে ফিতনার সম্মুখীন হতে হয়। সুতরাং যে কোন ফিতনাকে হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ ফিতনা থেকে নাজাত পাওয়ার একমাত্র উপায়, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের সুন্নতকে আঁকড়ে ধরা। কুরআন ও সন্নাহকে আঁকড়ে ধরার জন্য আল্লাহর দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার কোনো বিকল্প নেই। দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য চেষ্টা ও সাধনা দরাকার। শুধু আশা আর ধারণা-প্রসূত হলে আল্লাহর দীনের জ্ঞান লাভ করা যায় না। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمِنۡهُمۡ أُمِّيُّونَ لَا يَعۡلَمُونَ ٱلۡكِتَٰبَ إِلَّآ أَمَانِيَّ وَإِنۡ هُمۡ إِلَّا يَظُنُّونَ ٧٨﴾ [البقرة: ٧٨]
“আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিতাবের কোনো জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে”। [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ৭৮]
অধিক অধ্যয়ন করা, অনেক কিতাব পড়া ও বেশি বেশি লেখা পড়া দ্বারা দীনি ইলম লাভ করা সম্ভব নয়। দীন লাভ করতে হলে আলেম ও আহলে ইলমদের নিকট শিক্ষা লাভ করতে হবে। তবেই সত্যিকার ইলম শেখা হবে। ইলম আলেমদের থেকেই শিখতে হবে। নিজে নিজে পড়া-শুনা করে ইলম অর্জন করা যায় না। বর্তমানে অনেক মানুষ মনে করে বই পড়ে পড়ে আলেম হওয়া যায়। আবার অনেককে দেখা যায় অনেক কিতাব পড়ে হাদীসের ‘জারহ ও তাদিল’-এর কিতাব পড়ে বা তাফসীর ইত্যাদির কিতাবাদি পড়েন। তারা এভাবে পড়া শুনা করে নিজেদের আলেম মনে করেন। না, এ ধরণের পড়া লেখা দ্বারা এলম অর্জন বা কোন বুনিয়াদি শিক্ষা অর্জন নিয়মের আওতায় পড়ে না। কারণ, সে তো ইলম কোন জ্ঞানীদের কাছ থেকে শিখে নি। সুতরাং তাকে অবশ্যই আলেম ফকীহ ও শিক্ষকদের আলোচনায় ও দরসে বসতে হবে। ইলেম শিখার জন্য ত্যাগ শিকার করতে হবে।
ومــن لـم يــذق ذل التعلــم ســاعـــة * تجـــرع كـــأس الجهــل طول حيــاتــه
“যে ব্যক্তি কিছু সময় শেখার জন্য অপদস্থ হওয়ার স্বাদ গ্রহণ করেন নি, সে সারা জীবন অজ্ঞতার গ্লানিই পান করতে থাকবে”।
ইলম দীনদার আলেম এবং ফকীহ যারা আল্লাহ কিতাব ও সুন্নতের গভীরতা সম্পর্কে অবগত তাদের থেকে শিখতে হবে। শুধু নিজে নিজে বই পড়া দ্বারা ইলম হাসিল করা সম্ভব নয়। শেখার জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা থাকা খুবই জরুরি। শেখার জন্য শিক্ষার দরজাসমূহ দিয়ে প্রবেশ করতে এবং বের হতে হবে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَمِنۡهُمۡ أُمِّيُّونَ لَا يَعۡلَمُونَ ٱلۡكِتَٰبَ إِلَّآ أَمَانِيَّ وَإِنۡ هُمۡ إِلَّا يَظُنُّونَ ٧٨﴾ [البقرة: ٧٨]
“আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিতাবের কোনো জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৭৮]
শিক্ষার অনেক দরজা রয়েছে। ইলম বহনকারীর সংখ্যাও কম নয়। এ ছাড়াও রয়েছে অনেক শিক্ষক। তোমাদের অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই মসজিদ হোক, মাদরাসা হোক এবং কলেজ, ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি হোক।
মোটকথা, যতদিন পর্যন্ত আলেমগণ থাকবেন, তাদের থেকে জ্ঞান আহরণ করার সুযোগ থাকবে, ততদিন আমরা তাদের থেকে দীনি ইলম হাসিল করব। আর যদি আমরা নিজ গৃহে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করি এবং তাতে কিতাবের লাইব্রেরি বানিয়ে বই পড়তে থাকি, তাতে ইলম শিক্ষা করা হবে না -এতে সময় নষ্ট হবে। আল্লাহর দীন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ কেবলই ফকীহদের থেকে শিখতে হবে। আর একা একা ইলম অর্জন করা কোনো নিয়মের আওতায় পড়ে না।
অনুরূপভাবে নাজাতের উপায় হলো, মুসলিম জামা‘আতের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং মতবিরোধ, মতানৈক্য, দলাদলি এবং সালফে সালেহীনের বিপক্ষ দলের প্রতি ঝুঁকে পড়া হতে বিরত থাকা। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাতপ্রাপ্ত দল সম্পর্কে বলেন, هم من كان على مثل ما أنا عليه اليوم وأصحابي তারা হলো, যারা আমি এবং আমার সাহাবীদের আদর্শের ওপর আছে তারা। তারপর যারা ইহসানের সাথে তাদের অনুকরণ করেন। অর্থাৎ যারা পূর্বের মনিষী যারা অতিবাহিত হয়েছেন তাদের অনুসরণ করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَٱلَّذِينَ جَآءُو مِنۢ بَعۡدِهِمۡ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [الحشر: ١٠]
“যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে: ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু”। [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ১০]
বিরুদ্ধ দলের সাথে বিচ্ছিন্ন হওয়া, সাহাবীগণকে গালি দেওয়া, উলামা, ইমাম ও মুজতাহিদদের ভুল ধরা তাদের মূর্খ-কাণ্ডজ্ঞানহীন ইত্যাদি বলে সম্বোধন করা একজন মানুষকে গোমরাহির দিকেই নিয়ে যায়। তবে যাকে আল্লাহর রহমত পেয়ে বসে বা আল্লাহর দিকে ফিরে আসে এবং মুসলিম জামা‘আতের সাথে যোগদান করে তারা ছাড়া। আর মুক্তিপ্রাপ্ত দল এখানে একটিই। যাদের বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এ উম্মতের মধ্যে তেহাত্তর ফিরকা হবে তাদের একটি ছাড়া আর বাকী সবাই জাহান্নামী হবে। জাহান্নামী হওয়া বিভিন্ন কারণ হবে। কেউ হবে কারণ সে কাফের। আবার কেউ হবে কারণ সে গোমরাহ, আর কেউ হবে কারণ সে ফাসেক। মোট কথা একমাত্র একটি দল ছাড়া বাকীরা সবাই জাহান্নামী হবে। সাহাবীরা জিজ্ঞাসা করল, তারা কারা? উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, من كان على مثل ما أنا عليه اليوم وأصحابي রাস্তা একটিই এবং মুক্তিপ্রাপ্ত দলও একটি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَأَنَّ هَٰذَا صِرَٰطِي مُسۡتَقِيمٗا فَٱتَّبِعُوهُۖ وَلَا تَتَّبِعُواْ ٱلسُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمۡ عَن سَبِيلِهِۦۚ ذَٰلِكُمۡ وَصَّىٰكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٥٣﴾ [الانعام: ١٥٣]
“আর এটি তো আমার সোজা পথ। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং অন্যান্য পথ অনুসরণ করো না, তাহলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এগুলো তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর”। [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১৫৩]
গোমরাহীর পথ অসংখ্য অগণিত, যার কোনো নির্ধারিত সংখ্যা নেই। বর্তমানে ফিরকা ও দল এত বেশি যে এদের কোন নির্ধারিত সংখ্যা নেই। কিন্তু সঠিক ও হক দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত মাত্র একটি। যাদের বিষয়ে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لَا تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ، لَا يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ، حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَلِكَ».
“আমার উম্মত হতে একদল সব সময় হকের ওপর অটল অবিচল থাকবে। যারা তাদের বিরোধিতা করবে বা তাদের অপদস্থ করবে কিয়ামত পর্যন্ত তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না”।[1] তবে তাদেরকে মানুষ হালকা ভাবে দেখবে তাদেরকে মানুষ মূর্খ বলে গালি দিবে, তাদের গাফেল বলবে। অথচ তারা সত্যকে জানে অন্যরা জানে না। এ সব ক্ষেত্রে মুসলিমের ওপর দায়িত্ব হলো সে কারও কথা শুনবে না। তাদের কথা শুনবে যারা রাসূলের বাণী অনুসারে ‘এখন আমি এবং আমার সাহাবীরা যার ওপর আছে’, তাদের অনুসরণ করে। এ ছাড়া নাজাতের কোনো উপায় নেই।