অনেকের মতে উযূতে তরতীব ওয়াজেব। যেহেতু মহান আল্লাহ উযূর আয়াতে তরতীব বজায় রেখে মাথা মাসাহর পরে পা ধোয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। অথচ ধোয়ার কথা মাসাহর পূর্বে আছে এবং তারই ইরাবে “আরজুলাকুম”-এ জবর হয়েছে। কিন্তু হাদীসে এসেছে,
“আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) এর কাছে উযূর পানি আনা হল। তিনি উযূ করতে নিজের হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর নিজ মুখ তিনবার ধুলেন। অতঃপর কুল্লি করলেন ও নাকে পানি নিলেন তিনবার এবং মাথা মাসাহ করলেন। দুই কানের উপর ও ভিতরের অংশ মাসাহ করলেন। আর পা দুটিকে তিনবার করে ধুলেন। ১১৩ (আহমাদ, আবূ দাঊদ)
বোঝা গেল, নবী (সঃ) কখনো কখনো কুল্লি করা ও নাকে পানি দেওয়ার আগে মুখণ্ডহাত ধুয়েছেন। ওয়াজেব হলে তা করতেন না। তবে অধিকাংশ বর্ণনায় যে তরতীব এসেছে, তাঁর ভিত্তিতে তা সুন্নত বলা যায়। ১১৪ (আলবানী)
অপবিত্রতা দুই শ্রেণীরঃ ছোট অপবিত্রতা, যাতে উযূ জরুরী হয় এবং বড় অপবিত্রতা, যাতে গোসল জরুরী হয়। ছোট অপবিত্র অবস্থায় থাকলে কুরআন স্পর্শ না করে মুখস্থ পড়া জায়েয। আর বড় অপবিত্র অবস্থায় কুরআন পড়া জায়েয নয়। অবশ্য এ অবস্থায় কুরআনী আয়াতের যিকর যেমন, “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, ইন্না লিল্লাহি অইন্না ইলাইহি রাজিঊন” ইত্যাদি পড়া যায়। ১১৫ (ইবনে ঊষাইমীন)
হযরত আলী (রঃ) বলেন, “বড় নাপাকির অবস্থা ছাড়া অন্যান্য অবস্থায় আল্লাহ্র রাসুল (সঃ) আমাদেরকে কুরআন পড়াতেন।” ১১৬ (আহমাদ ৬২৭, তিরমিযী ১৩১ নং, আলবাণীর নিকট হাদীসটি যয়ীফ)
হ্যাঁ, কুরআন জুযদান, বক্স, ব্যাগ বা অন্য কোন মোড়কের ভিতরে থাকলে অপবিত্র অবস্থায় তা স্পর্শ করা বৈধ। (সাফা)
অপবিত্র বা মাসিক অবস্থায় কুরআনের ক্যাসেট স্পর্শ করা বৈধ, টেপ লাগানো ইত্যাদি বৈধ। যেহেতু তা মুসফাক নয়। ১১৭ (লাজনাহ দায়েমাহ)
না, কেবল স্ত্রীদের চুম্বন ও স্পর্শ করার ফলে স্বামীর উযূ ভাঙ্গে না, স্ত্রীরও না। মহানবী (সঃ) স্ত্রী চুম্বন করে নামায এবং (তাঁর আগে) উযূ করতেন না। ১১৮ (আহমাদ, আবূ দাঊদ, নাসাঈ, সঃ জামে’ ৪৯৯৭ নং)
অবশ্য সেই চুম্বন বা স্পর্শের ফলে প্রস্রাব-দ্বার হতে “মাযী” (পাতলা আঠালো পদার্থ) বের হলে উযূ ভেঙ্গে যাবে।
বৈধ, যদি তাতে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যগত ক্ষতি না থাকে তবে। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। ১১৯ (লাজনাহে দায়েমাহ)
যে সেন্টে স্পিরিট বা এ্যালকোহল আছে, তা ব্যবহার করার ব্যাপারে উলামাগণের মতভেদ আছে। পূর্বসতর্কতামুলকভাবে তা ব্যবহার না করাই উত্তম, বিশেষ করে নামাযের আগে। ১২০ (ইবনে বায)
কোন অপবিত্র জিনিসকে পবিত্র করতে হলে পবিত্র পানি জরুরী। অন্য কোন তরল পদার্থ দ্বারা পবিত্রতা লাভ হয় না।২২১ (আলবানী)
এ কথা ঠিক নয়। এ ব্যপারে বর্ণিত হাদিসটি জাল। সুতরাং অপবিত্রতা এক দিরহাম থেকে কম হলেও তা দূর করতে হবে। নচেৎ তাতে নামায শুদ্ধ হবে না। ১২২ (আলবানী)
এ ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। তবে সঠিক মতে তা অপবিত্র নয়। ১২৩ (আলবানী)