মহানবী (সঃ) বলেছেন, “ইয়াহুদি একাত্তর দলে এবং খ্রিস্টান বাহাত্তর দলে দ্বিধা বিভক্ত হয়েছে। আর এই উম্মত তিয়াত্তর দলে বিভক্ত হবে। যার মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সব কটি জাহান্নামে যাবে।” অতঃপর ওই একটি দল প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসিত হলে তিনি বলেন, “তারা হল জামাআত, যে জামাআত আমি ও আমার সাহাবা যে মতাদর্শের উপর আছি তার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।” (সুনান আরবাআহ, মিশকাত ১৭১-১৭২। সিলসিলাহ সহিহাহ ২০৩, ১৪৯২ নং)
সুতরাং নব আলোকপ্রাপ্ত মুসলিম বা নও মুসলিমরা সেই দলে বা জামাআতে শামিল হবে, যে দলে নবী (সঃ) ও তার সাহাবাদের মতাদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত আছে। সব দলের দাবি একই হলে, জ্ঞান ও বিবেককে কাজে লাগিয়ে সঠিক দল অনুসন্ধান করা ওয়াজেব। যে দল সবার কথার উপর নবী (সঃ) এর কথাকে প্রাধান্য দেয়, যে দল কোন মাজহাবী তাকলিদে ফাঁসে না, কোন বুজুর্গের তাজিম ও তাকলিদে বাড়াবাড়ি করে না, সে দল কোন বিদআত ও বিদআতিকে প্রশ্রয় দেয় না, যে দল কোন শিরকের মৌন সমর্থনও করে না, যে দল গদির লোভে পাশ্চাত্য রাজনীতির গড্ডালিকা স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয় না, যে দল কিতাব ও সহিহ সুন্নাহর উপর আমল করে, কোন জাল জইফ হাদিসকে ভিত্তি করে আমল করে না ইত্যাদি। আর নিদর্শন আছে সেই হক পন্থি দলের, জ্ঞানী ও উদার মানুষের তা চিনতে ভুল হয় না। মহান আল্লাহ বলেছেন,
“ যারা তাগুতের পূজা হতে দুরে থাকে এবং আল্লাহর অনুরাগী হয়, তাদের জন্য আছে সুসংবাদ। অতএব সুসংবাদ দাও আমার দাসদেরকে--- যারা মনোযোগ সহকারে কথা শোনে এবং যা উত্তম তারই অনুসরণ করে। ওরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেন এবং ওরাই বুদ্ধিমান।” (সূরা জুমার ১৭-১৮ আয়াত)
উক্ত প্রশ্নটি ‘নির্দল কি কমিউনিস্ট পার্টির লোক’ - এর মতো। যে নির্দল, সে কোন দলের হতে পারে না। অবশ্য নির্দল কোন নির্দিষ্ট দল হলে হতে পারে। অনুরূপ ধর্ম নিরপেক্ষ বা ধর্মহীন যে, সে মুসলিম থাকতে পারে না। বরং কোন ধর্মেরই হতে পারে না। তবে ধর্মহীন মানবতাবাদী হতে পারে। এ হল আসল অর্থে। অবশ্য যদি কেউ ইসলামে বিশ্বাস রেখে ‘রাজনীতিতে ধর্মের স্থান নেই’ বলে, তাহলে তার বিধান ভিন্ন। কিন্তু সে যদি ‘সব ধর্ম সমান’ বলে, তাহলে সে মুসলিম থাকতে পারে না। কারন মহান আল্লাহ বলেন,
“নিশ্চয় ইসলাম আল্লাহর নিকট (একমাত্র মনোনীত) ধর্ম।” (আলে ইমরানঃ ১৯)
যে কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্ম অন্বেষণ করবে, তার পক্ষ হতে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না। আর সে হবে পরলোকে ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত । (আলে ইমরানঃ ৮৫)
সুফীপন্থিরা হকপন্থি নয়। কারন তাদের আকিদাহ সহিহ নয়। তাদের আকিদা ও আমল, দুয়া ও দুরদ শিরক ও বিদআতে ভর্তি। তাদের অনেকের দাবি যে, মসজিদে নববিতে মহানবী (সঃ) এর খিদমতে যে সকল সাহাবা আসহাবে সুফফাহ নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন, তাদের প্রতি সম্পর্ক জুড়েই ‘সুফী’ বলা হয়। কিন্তু এ কথা ঠিক নয় কারণ তা হলে তাদেরকে ‘সুফী’ না বলে ‘সুফফি’ বলা হত। কেউ বলেছে, সাফওয়াহ’র দিকে সমৃদ্ধ করে ‘সুফী’ বলা হয়। এ কথাও ঠিক নয়। কারণ তা হলে তাদেরকে ‘সুফী’ না বলে ‘সাফাবি’ বলা হত। তাছাড়া তাদের হৃদয় মন সাফ নয় বরং শিরক ও বিদআতে পরিপূরণ। সঠিক কথা এই যে, তারা যে লেবাস পরত, সাধারনতঃ তা ‘সুফ’ দ্বারা তৈরি হত। এক জন্য সেই দিকে সম্বন্ধ করে তাদেরকে ‘সুফী’ বলা হয়। ভাষাগত ভাবে এটাই সঠিক। (লাজনাহে দায়েমাহ)