এখন উচিৎ হল, তাঁর পরিত্যক্ত সম্পত্তি থেকে হজ্জের খরচ নিয়ে কোন হাজীকে দিয়ে বদল হজ্জ করানো। ৩১৮ (লাজনাহ দায়েমাহ)
উমরাহ বা অন্য কোন ইবাদতের সফর হলেও কোন মহিলার একাকিনী সফর বৈধ নয়। যেহেতু মহানবী (সঃ) বলেছেন, “কোন পুরুষ যেন কোন বেগানা নারীর সঙ্গে তাঁর সাথে এগানা পুরুষ ছাড়া অবশ্যই নির্জনতা অবলম্বন না করে। আর মাহরাম ব্যতিরেকে কোন নারী যেন সফর না করে।” এক ব্যক্তি আবেদন করল, “হে রাসুন! আমার স্ত্রী হজ্জ পালন করতে বের হয়েছে। আর আমি অমুক অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি।” তিনি বললেন, “যাও, তুমি তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ্জ কর।” ৩১৯ (বুখারী ও মুসলিম)
এখানে এ কথা বলা ঠিক নয় যে, প্লেনের সফর নিরাপদ। এক এয়ারপোর্টে চড়ে পরবর্তী এয়ারপোর্টে সহজেই নামতে পারবে। কারণ হাদীসে সে শর্ত আরোপ করা হয়নি যে, সফর বিপদজ্জনক হলে মহিলা এগানা পুরুষ ছাড়া সফর করতে পারবে না। ৩২০ (ইবনে উষাইমীন)
স্পেশালিষ্ট ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে যদি জানা যায় যে, তাঁর ফলে মহিলার স্বাস্থ্যগত কোন ক্ষতি হবে না, তাহলে মাসিক বন্ধ রেখে হজ্জ-উমরাহ করতে পারে। ৩২১ (লাজনাহ দায়েমাহ)
আপনার স্বামীর উচিৎ নয়, ফরয পালনে আপনাকে বাধা দেওয়া। সুতরাং নামায রোযার মতোই হজ্জ করতে স্বামীর অনুমতি না থাকলেও আদায় করতে হবে। ৩২২ (ইবনে জিবরীন)যেহেতু আল্লাহ্র ফরয হক সবার উপরে। আর নবী (সঃ) বলেছেন, “স্রষ্টার অবাধ্যতা করে কোন সৃষ্টির অনুগত্য নেই।” ৩২৩ (আহমাদ)
স্ত্রী হজ্জ করতে চাইলে এবং স্বামী তাতে বাধা দিলে স্বামীর কথা না মেনে কোন মাহরামের সাথে অবশ্যই হজ্জ করবে। এ ক্ষেত্রে স্বামীর বাধা মানলে তাকে গোনাহগার হয়ে মরতে হবে। ৩২৪ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ)
ঋণ করে হজ্জ করা যায়, যদি পরিশোধ করার সহজ উপায় থাকে (অথবা ঋণের তাগাদা না থাকে) তবে। অন্যথা ঋণ করে হজ্জ না করাই ভাল। কারণ সম্ভবতঃ ঋণ করার পরে পরিশোধ করার সামর্থ্য নাও হতে পারে। রোগাক্রান্ত বা মৃত্যু কবলিত হলে পরিশোধ নাও হতে পারে। অতএব পূর্ণ সামর্থ্যবান হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই শ্রেয়ঃ। ৩২৫ (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ ২/১৮৪)
সরকারকে ধোঁকা দিয়ে জাল নাম ও পাসপোর্ট নিয়ে হজ্জ করলে হজ্জ হয়ে যাবে, তবে ধোঁকা দেওয়ার জন্য গোনাহগার হতে হবে। ৩২৬ (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৬৭৫)
বহু দিন সাউদিয়ায় থেকে ছুটির সময় হজ্জ হলে এবং পরিবার পরিজন হজ্জ না করে বাড়ী ফিরতে আদেশ করলে এবং হজ্জ করাতে তাঁদের সম্মতি না হলে, যদি ফরয হজ্জ হয়, তবে তাঁদের কথা না মেনে হজ্জ করবে অতঃপর বাড়ী ফিরবে। নফল হলে তাঁদের মন খুশী করার জন্য হজ্জ না করে বাড়ী ফিরবে। ৩২৭ (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ ১৩/৬৭)
উড়ো কিংবা পানি জাহাজে হজ্জ বা উমরায় এলে নির্দিষ্ট মীকাত ববাবর জায়গায় আসার পূর্বে (জাহাজের কর্মীদের ইঙ্গিত পেলে) ইহরাম বাঁধতে হবে। অবশ্য চড়ার পূর্বে এয়ারপোর্ট থেকে গোসলাদি সেরে কাপড় পরে কেবল নিয়ত করা ভালো। জিদ্দা থেকে ইহরাম বাঁধা যথেষ্ট নয়। বিনা ইহরামে জেদ্দায় নামলে নির্দিষ্ট মীকাতে ফিরে গিয়ে ইহরাম বাঁধতে হবে। জেদ্দা থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ করে থাকলে দম (একটি ছাগল অথবা একটি ভেড়া অথবা সাত ভাগের এক ভাগ গরু বা উট) লাগবে; যা মক্কায় যবেহ করে মক্কার ফকীরদের মাঝে বণ্ঠন করতে হবে। ৩২৮ (ফাতাওয়া মুহিম্মাহ ৩৪ পৃঃ)
অবশ্য যদি কেউ না জেনে কোন আলেমকে জিজ্ঞেসা করে ‘জেদ্দা থেকে ইহরাম বাঁধা হবে’ এই ফতোয়া নিয়ে জেদ্দা থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্জ উমরাহ করে ফেলে, তবে তাঁর উপর দম নেই। কারণ, সে তাঁর ওয়াজেব পালন করেছে। আর ঐ ভুলের মাসূল ঐ মুফতীর ঘাড়ে।৩২৯ (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৫৬৯)
সফরের শুরুতেই মদ্বীনা যাওয়ার নিয়ত থাকলে পথে মীকাতে ইহরাম না বেঁধে মদ্বীনার যিয়ারতের পর মদ্বীনা থেকে ইহরাম বেঁধে মক্কা এসে হজ্জ উমরাহ করা চলবে।