দ্বীনী প্রশ্নোত্তর হজ্জ ও উমরা আবদুল হামীদ ফাইযী ১ টি
এক শ্রেণীর হাজী আছে, যারা জোরেশোরে দুআ পড়ে। প্রত্যেক চক্করে নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত দুআ পাঠ করে। একজন বলে, তার পিছনে সকলে বলে চলে। এতে ডিস্টার্ব হয় বড়। এ ব্যাপারে শরীয়তের বিধান কি?

পবিত্র কাবায় তওয়াফ একটি ইবাদত, যাতে আছে মহান আল্লাহ্‌র দরবারে বিনয় নম্রতা প্রকাশ। তওয়াফকারীর কর্তব্য হল, সত্য হৃদয় নিয়ে দুআ ও প্রশংসা, আশা, ভয় ও ভরসার সাথে আল্লাহ্‌র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা। কিন্তু তওয়াফের চক্করে চক্করে কোন নির্দিষ্ট দুআ বর্ণিত হয়নি। কেবল দুই পাথরের মধ্যবর্তী জায়গায় ‘রাব্বানা আ-তিনা’ দুআ বলতে হয়। অথচ প্রচলিত ভুলগুলির মধ্যে একটি ভুল এই যে, লোকেরা সঙ্গে এমন বই পত্র নিয়ে দেখে দেখে প্রত্যেক চক্করের জন্য খাস এমন সব দুআ পড়ে থাকে, কিতাব ও সুন্নাহতে যার দলীল নেই। বরং তা মনগড়া বিদআত। অনেকে হয়তো যা পড়ে, তার মানেও বুঝে না। বরং তার সঠিক উচ্চারণও জানে না। অনেকে দোহারের মত অপরের পঠিত দুআর সম্পূর্ণ বুঝতে বা শুনতে না পেয়ে শেষের শব্দগুলি বলে। অথচ তাতে অর্থ বিগড়ে যায়। তাছাড়া এতে পার্শ্ববর্তী তওয়াফকারীদের বড় ডিস্টার্ব হয়। আল্লাহ্‌র রাসুল (সঃ) সাহাবাগণকে সশব্দে কুরআন পড়তে নিষেধ করে বলেন, ‘তোমরা একে অপরকে কষ্ট দিয়ো না এবং একে অপরের উপর কিরাআতে শব্দ উঁচু করো না।’ ৪৪২ (আহমাদ ৩/৯৪, আবূ দাঊদ ১২৩২ নং, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রমুখ) এ যদি কুরআন পড়ার কথা হয়, তাহলে মনগড়া বিদআতী দুআ জোরেশোরে পড়ে অপরকে ডিস্টার্ব করা কত বড় ভুল? যে দুআ পড়ে তওয়াফকারী কোন মিষ্টতা অনুভব করে না। পক্ষান্তরে তারা যদি এমন দুআ ও যিকর পড়ত, যার মানে বুঝে এবং যা তাদের মুখস্থ আছে, তাহলে তা-ই তাদের জন্য উত্তম হত এবং কবুল হওয়ার অধিক উপযুক্ত হত। পরন্ত তা-ই যথেষ্ট ও বরকতময় হত।