সূরাঃ আল-আন'আম | Al-An'am | سورة الأنعام - আয়াতঃ ১১৬
৬:১১৬ وَ اِنۡ تُطِعۡ اَكۡثَرَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ یُضِلُّوۡكَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ هُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ﴿۱۱۶﴾
و ان تطع اكثر من فی الارض یضلوك عن سبیل الله ان یتبعون الا الظن و ان هم الا یخرصون ﴿۱۱۶﴾

আর যদি তুমি যারা যমীনে আছে তাদের অধিকাংশের আনুগত্য কর, তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা শুধু ধারণারই অনুসরণ করে এবং তারা শুধু অনুমানই করে। আল-বায়ান

তুমি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের অনুসরণ কর তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে ফেলবে, তারা তো কেবল আন্দাজ-অনুমানের অনুসরণ করে চলে, তারা মিথ্যাচার ছাড়া কিছু করে না। তাইসিরুল

তুমি যদি দুনিয়াবাসী অধিকাংশ লোকের কথামত চল তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যূত করে ফেলবে, তারাতো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে, আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে। মুজিবুর রহমান

And if you obey most of those upon the earth, they will mislead you from the way of Allah. They follow not except assumption, and they are not but falsifying. Sahih International

১১৬. আর যদি আপনি যমীনের অধিকাংশ লোকের কথামত চলেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে।(১)। তারা তো শুধু ধারণার অনুসরণ করে; আর তারা শুধু অনুমানভিত্তিক কথা বলে।

(১) এ আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অবহিত করেছেন যে, পৃথিবীর অধিবাসীদের অধিকাংশই পথভ্রষ্ট। [ইবন কাসীর] আপনি এতে ভীত হবেন না এবং তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। কুরআন একাধিক জায়গায় এ বিষয়টি বর্ণনা করেছে। এক জায়গায় বলা হয়েছে, “আর তাদের আগেও পূর্ববতীদের বেশীর ভাগ বিপথগামী হয়েছিল” [সূরা আস-সাফফাত: ৭১] অন্যত্র বলা হয়েছে, “আপনি যতই চান না কেন, বেশীর ভাগ লোকই ঈমান গ্রহণকারী নয়।” [সূরা ইউসুফ ১০৩] সুতরাং অনুসরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আলেমদেরই অনুসরণ করতে হবে। যারা জানে না তারা যত বেশীই হোক না কেন তাদের অনুসরণ পথভ্রষ্টতাই ডেকে আনবে। [আইসারুত তাফসীর]

এ আয়াত দ্বারা আরো বুঝা গেল যে, সংখ্যাধিক্যতা কোন অবস্থাতেই সঠিক হওয়ার দলীল নয়। কারণ হক বা সঠিক পথ ও মত দলীল-প্রমাণাদির ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে, সংখ্যাধিক্য বা সংখ্যালঘুতার ভিত্তিতে নয়। সাধারণত, হকপন্থীরা সংখ্যায় কম থাকে, কিন্তু তারা আল্লাহর নিকট সওয়াবের দিক থেকে অধিক অগ্রগামী। [সা’দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১১৬) আর যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল, তাহলে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করে দেবে। তারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথাবার্তাই বলে থাকে। [1]

[1] কুরআনে বর্ণিত এই সত্যের বাস্তব চিত্র প্রত্যেক যুগে লক্ষ্য করা যেতে পারে। অন্যত্র মহান আল্লাহ বলেন, {وَمَا أَكْثَرُ النَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ} অর্থাৎ, তোমার আগ্রহ সত্ত্বেও অধিকাংশ লোক বিশ্বাসী নয়। (সূরা ইউসুফ ১০৩) এ থেকে জানা গেল যে, ন্যায় ও সত্য পথের পথিকদের সংখ্যা সব সময় কমই হয়। আর এ থেকে এটাও সাব্যস্ত হয় যে, হক ও বাতিলের মাপকাঠি হল দলীল ও প্রমাণাদি, অনুসারীদের সংখ্যায় বেশী হওয়া অথবা কম হওয়া এর মাপকাঠি নয়। অর্থাৎ, এমন নয় যে, যে কথাটা অধিকাংশ মানুষ অবলম্বন করেছে, সেটাই হক এবং যেটা অল্প সংখ্যক লোক অবলম্বন করেছে, সেটা বাতিল। বরং উল্লেখিত ঐ কুরআনী তত্ত্ব ও বাস্তবতার ভিত্তিতে এটাই বেশী সম্ভবপর যে, হকপন্থীরা সংখ্যালঘু এবং বাতিলপন্থীরা সংখ্যাগুরু হবে। আর এর সমর্থন সেই হাদীস থেকেও হয়, যাতে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হয়ে যাবে এবং এর মধ্য থেকে কেবল একটি দল জান্নাতী হবে, অবশিষ্টরা হবে জাহান্নামী। আর এই জান্নাতী দলের নিদর্শন সম্পর্কে তিনি (সাঃ) বলেছেন, (مَا أَنَا عَلَيْهِ وَأَصْحَابِي) যারা আমার ও আমার সাহাবার তরীকার উপর কায়েম থাকবে।’’ (আবূ দাউদঃ সুন্নাহ অধ্যায়, তিরমিযীঃ ঈমান অধ্যায়)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান