সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াতঃ ৬৫
৩:৬৫ یٰۤاَهۡلَ الۡکِتٰبِ لِمَ تُحَآجُّوۡنَ فِیۡۤ اِبۡرٰهِیۡمَ وَ مَاۤ اُنۡزِلَتِ التَّوۡرٰىۃُ وَ الۡاِنۡجِیۡلُ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِهٖ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۶۵﴾
یاهل الکتب لم تحاجون فی ابرهیم و ما انزلت التورىۃ و الانجیل الا منۢ بعدهٖ افلا تعقلون ۶۵

হে কিতাবীগণ, তোমরা ইবরাহীমের ব্যাপারে কেন বিতর্ক কর? অথচ তাওরাত ও ইনজীল তো তার পরই অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমরা কি বুঝবে না? আল-বায়ান

হে আহলে কিতাব! তোমরা কেন ইবরাহীম সম্পর্কে তর্ক করছ? তাওরাত এবং ইঞ্জিল তো তারপরেই অবতীর্ণ হয়েছে, তোমরা কি তাও বুঝ না? তাইসিরুল

হে আহলে কিতাব! তোমরা ইবরাহীম সম্বন্ধে কেন বির্তক করছ? অথচ তার পরে ব্যতীত তাওরাত ও ইঞ্জীল অবতীর্ণ হয়নি - তবুও কি তোমরা বুঝছনা? মুজিবুর রহমান

O People of the Scripture, why do you argue about Abraham while the Torah and the Gospel were not revealed until after him? Then will you not reason? Sahih International

৬৫. হে আহলে কিতাবগণ! ইবরাহীম সম্বন্ধে কেন তোমরা তর্ক কর, অথচ তাওরাত ও ইঞ্জীল তো তার পরেই নাযিল হয়েছিল! সুতরাং তোমরা কি বুঝ না।(১)

(১) এ আয়াতে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে আহলে কিতাবদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিষয়টি বর্ণিত হয় নি। তবে অন্য স্থানে সেটি এভাবে বিবৃত হয়েছে যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কে তাদের ঝগড়ার কারণ হচ্ছে, প্রত্যেকেই তাকে তাদের দলে ভিড়ানোর চেষ্টা করছে। ইয়াহুদীরা বলে যে, ইবরাহীম ইয়াহুদী ছিলেন। আর নাসারারা বলে যে, তিনি নাসরানী ছিলেন। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা কি বল যে, অবশ্যই ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তার বংশধরগণ ইয়াহুদী বা নাসারা ছিল? বলুন, ‘তোমরা কি বেশী জান, না আল্লাহ? [সূরা আল বাকারাহ: ১৪০] তবে পরবর্তী ৬৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা'আলা আহলে কিতাবদের বিবাদের বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। কারণ সেখানে বলা হয়েছে, “ইবরাহীম ইয়াহুদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না”।

হাদীসে এসেছে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার মতে, নাজরানের নাসারা ও মদীনার ইয়াহুদী সর্দাররা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে একত্রিত হয়ে বিবাদে লিপ্ত হলো। ইয়াহুদীরা বলতে লাগল যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ইয়াহুদী ছিলেন, আর নাসারারা বলতে লাগল যে, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম নাসরানী ছিলেন। তখন আল্লাহ তা'আলা আলোচ্য আয়াত নাযিল করে জানিয়ে দিলেন যে, তোমাদের কি হলো যে, একটি প্রকাশ্য বিষয়কে ভিন্ন রূপ দিচ্ছ? তাওরাত ও ইঞ্জল তো ইবরাহীম আলাইহিস সালামের পরে নাযিল হয়েছে। আর সে কিতাবদ্বয়ের নাযিলের পরে ইয়াহুদীবাদ ও খ্রীস্টানবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাহলে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কিভাবে ইয়াহুদী বা নাসারা হতে পারে? [তাবারী; আত-তাফসীরুস সহীহ]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬৫) হে ঐশী গ্রন্থধারিগণ! ইব্রাহীম সম্বন্ধে তোমরা কেন বিতর্ক করছ, অথচ তাওরাত ও ইঞ্জীল তো তার পরেই অবতীর্ণ করা হয়েছিল? তোমরা কি বুঝ না? [1]

[1] ইবরাহীম (আঃ)-এর ব্যাপারে বিতর্কের অর্থ হল, ইয়াহুদী এবং খ্রিষ্টান উভয় জাতিই দাবী করত যে, তিনি তাদের ধর্মাবলম্বি ছিলেন। অথচ তাওরাত যার উপর ইয়াহুদীরা ঈমান রাখতো এবং ইঞ্জীল যেটাকে খ্রিষ্টানরা মান্য করে চলতো, এই উভয় গ্রন্থ ইবরাহীম (আঃ)-এর শত সহস্র বছর পর অবতীর্ণ হয়েছে। কাজেই তিনি ইয়াহুদী বা খ্রিষ্টান কিভাবে হতে পারেন? বলা হয় যে, ইবরাহীম এবং মূসা (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর মধ্যে এক হাজার বছরের ব্যবধান ছিল। আর ঈসা ও ইবরাহীম (আলাইহিমাস্ সালাম)-এর মধ্যে দু’হাজার বছরের ব্যবধান ছিল। (ক্বুরত্ববী)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান