২৪ সূরাঃ আন-নূর | An-Nur | سورة النور - আয়াতঃ ১২
২৪:১২ لَوۡ لَاۤ اِذۡ سَمِعۡتُمُوۡهُ ظَنَّ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتُ بِاَنۡفُسِهِمۡ خَیۡرًا ۙ وَّ قَالُوۡا هٰذَاۤ اِفۡکٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۲﴾
لو لا اذ سمعتموه ظن المومنون و المومنت بانفسهم خیرا ۙ و قالوا هذا افک مبین ۱۲

যখন তোমরা এটা শুনলে, তখন কেন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা তাদের নিজদের সম্পর্কে ভাল ধারণা পোষণ করল না এবং বলল না যে, ‘এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ’? আল-বায়ান

তোমরা যখন এটা শুনতে পেলে তখন কেন মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন স্ত্রীরা তাদের নিজেদের লোক সম্পর্কে ভাল ধারণা করল না আর বলল না, ‘এটা তো খোলাখুলি অপবাদ।’ তাইসিরুল

এ কথা শোনার পর মু’মিন পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের লোক সম্পর্কে উত্তম ধারনা করেনি এবং বলেনিঃ এটাতো সুস্পষ্ট অপবাদ? মুজিবুর রহমান

Why, when you heard it, did not the believing men and believing women think good of one another and say, "This is an obvious falsehood"? Sahih International

১২. যখন তারা এটা শুনল তখন মুমিন পুরুষ এবং মুমিন নারীগণ তাদের নিজেদের সম্পর্কে কেন ভাল ধারণা করল না এবং (কেন) বলল না, এটা তো সুস্পষ্ট অপবাদ?(১)

(১) এ আয়াতের দু'টি অনুবাদ হতে পারে। এক, যখন তোমরা শুনেছিলে তখনই কেন মু'মিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা নিজেদের সম্পর্কে সুধারণা করেনি? অন্য একটি অনুবাদ এও হতে পারে, নিজেদের লোকদের অথবা নিজেদের সমাজের লোকদের ব্যাপারে ভালো ধারণা করনি কেন? আয়াতের শব্দাবলী দু’ধরনের অর্থের অবকাশ রাখে। অর্থাৎ তোমরা যখন এই অপবাদের সংবাদ শুনলে, তখন মুসলিম পুরুষ ও নারী নিজেদের মুসলিম ভাই-বোনদের সম্পর্কে সুধারণা করলে না কেন এবং একথা বললে না কেন যে, এটা প্ৰকাশ্য মিথ্যা? এ আয়াতে কয়েকটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। প্রথমতঃ (بِأَنْفُسِهِمْ) শব্দ দ্বারা কুরআনুল কারীম ইঙ্গিত করেছে যে, যে মুসলিম অন্য মুসলিমের দুর্নাম রটায় ও তাকে লাঞ্ছিত করে, সে প্রকৃতপক্ষে নিজেকেই লাঞ্ছিত করে। কারণ, ইসলামের সম্পর্ক সবাইকে এক করে দিয়েছে। সর্বক্ষেত্রে কুরআন এই ইঙ্গিত ব্যবহার করেছে। যেমন এক জায়গায় বলা হয়েছে (وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ) [সূরা আল হুজরাতঃ ১১] অর্থাৎ তোমাদের নিজেদের প্রতি দোষারোপ করো না।

উদ্দেশ্য, কোন মুসলিম পুরুষ ও নারীর প্রতি দোষারোপ করো না। এ আয়াতে দ্বিতীয় প্রণিধানযোগ্য বিষয় এই যে, এখানে (ظَنَّ الْمُؤْمِنُونَ) বলা হয়েছে। এতে হাল্কা ইঙ্গিত রয়েছে যে, যাদের দ্বারা এই কাজ সংঘটিত হয়েছে, তারা এই কাজের প্রেক্ষাপটে মুমিন কথিত হওয়ার যোগ্য নয়। কেননা, এক মুসলিম অন্য মুসলিমের প্রতি সুধারণা পোষণ করবে এটাই ছিল ঈমানের দাবী। এখানে তৃতীয় প্রণিধানযোগ্য বিষয় হলো, এই আয়াতের শেষ বাক্য (هَٰذَا إِفْكٌ مُبِينٌ) এ শিক্ষা দেয়া হয়েছে যে, খবরটি শুনামাত্রই মুসলিমদের ‘এটা প্রকাশ্য অপবাদ’ বলে দেয়াই ছিল ঈমানের দাবী। অর্থাৎ তাদের এ সব অপবাদ তো বিবেচনার যোগ্যই ছিল না। একথা শোনার সাথে সাথেই প্রত্যেক মুসলিমের একে সুস্পষ্ট মিথ্যাচার, মিথ্যা বানোয়াট কথা ও অপবাদ আখ্যা দেয়া উচিত ছিল। [বাগভী]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১২) এ কথা শোনার পর বিশ্বাসী পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের বিষয়ে সুধারণা করেনি এবং বলেনি, ‘এ তো নির্জলা অপবাদ?’ [1]

[1]এখান থেকে তরবিয়তী ও শিক্ষণীয় সেই দিকগুলি স্পষ্ট করা হয়েছে, যা এই ঘটনায় নিহিত রয়েছে। সেগুলির মধ্যে সর্বপ্রথম শিক্ষা এই যে, মুসলিমরা আপোসে একটি দেহের মত। অতএব যখন আয়েশা (রাঃ) ­-র প্রতি অপবাদ আরোপ করা হল, তখন তা তারা নিজেদেরই প্রতি আরোপিত অপবাদ মনে করে কেন তার সত্বর প্রতিবাদ করল না এবং স্পষ্ট অপবাদ বলে তার খন্ডন করল না?

তাফসীরে আহসানুল বায়ান