অবশেষে যখন সে সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে একটি কর্দমাক্ত পানির ঝর্ণায় ডুবতে দেখতে পেল এবং সে এর কাছে একটি জাতির দেখা পেল। আমি বললাম, ‘হে যুলকারনাইন, তুমি তাদেরকে আযাবও দিতে পার অথবা তাদের ব্যাপারে সদাচরণও করতে পার’। আল-বায়ান
চলতে চলতে যখন সে সূর্যাস্তের স্থানে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে অস্বচ্ছ জলাশয়ে ডুবতে দেখল আর সেখানে একটি জাতির লোকেদের সাক্ষাৎ পেল। আমি বললাম, ‘হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার কিংবা তাদের সঙ্গে (সদয়) ব্যবহারও করতে পার।’ তাইসিরুল
চলতে চলতে যখন সে সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌঁছল তখন সে সূর্যকে এক পংকিল পানিতে অস্ত যেতে দেখল এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল; আমি বললামঃ হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা তাদেরকে সদয়ভাবে গ্রহণ করতে পার। মুজিবুর রহমান
Until, when he reached the setting of the sun, he found it [as if] setting in a spring of dark mud, and he found near it a people. Allah said, "O Dhul-Qarnayn, either you punish [them] or else adopt among them [a way of] goodness." Sahih International
৮৬. চলতে চলতে সে যখন সূর্যের অস্ত গমন স্থানে পৌছল(১) তখন সে সূর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তগমন করতে দেখল(২) এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল। আমরা বললাম, হে যুল কারনাইন! তুমি এদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা এদের ব্যাপার সদয়ভাবে গ্ৰহণ করতে পার।
(১) কোন কোন মুফাস্সির বলেন, তিনি পশ্চিম দিকে দেশের পর দেশ জয় করতে করতে স্থলভাগের শেষ সীমানায় পৌঁছে যান, এরপর ছিল সমুদ্র। এটিই হচ্ছে সূর্যাস্তের সীমানার অর্থ। হাবীব ইবন হাম্মায বলেনঃ আমি আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় এক লোক তাকে জিজ্ঞেস করল যে, যুলকারনাইন কিভাবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যদেশে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছিল? তিনি বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ আকাশের মেঘকে তার নিয়ন্ত্রণাধীন করেছিলেন। পর্যাপ্ত উপায়-উপকরণ দিয়েছিলেন। এবং প্রচুর শক্তি-সামৰ্থ দান করেছিলেন। তারপর আলী বললেনঃ আরও বলব? লোকটি চুপ করলে আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুও চুপ করে যান। [আল-মুখতারাহ: ৪০৯] [ইবন কাসীর]
(২) حَمِئَةٍ এর শাব্দিক অর্থ কালো জলাভূমি অথবা কাদা। অর্থাৎ তিনি সূর্যকে তার দৃশ্যে মহাসাগরে ডুবতে দেখলেন। আর সাধারণত: যখন কেউ সমুদ্র তীরে দাঁড়িয়ে সূর্য অস্ত যাওয়া প্রত্যক্ষ করবে, তখনই তার এটা মনে হবে, অথচ সূর্য কখনও তার কক্ষপথ ত্যাগ করেনি। [ইবন কাসীর]। এখানে সে জলাশয়কে বোঝানো হয়েছে, যার নীচে কালো রঙের কাদা থাকে। ফলে পানির রঙও কালো দেখায়। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হওয়া উচিত, তা হলো, কুরআন একথা বলেনি যে, সূর্য কালো জলাশয়ে ডুবে। বরং এখানে যুলকারনাইনের অনুভূতিই শুধু ব্যক্তি করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া(৮৬) চলতে চলতে যখন সে সূর্যের অস্তগমন স্থলে পৌঁছল, তখন সে সূর্যকে এক কর্দমাক্ত ঝরনায় অস্তগমন করতে দেখল[1] এবং সে সেখানে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল; আমি বললাম,[2] ‘হে যুলকারনাইন! তুমি তাদেরকে শাস্তি দিতে পার অথবা তাদের ব্যাপারে সদুপায় অবলম্বন করতে পার।’ [3]
[1] عَين এর অর্থঃ ঝরনা বা সমুদ্র। حَمِئَة এর অর্থঃ কর্দম, কাদা বা দলদল। وَجَد অর্থঃ পেল, দেখল বা অনুভব করল। অর্থাৎ, যুলক্বারনাইন দেশের পর দেশ জয় করে যখন পশ্চিম প্রান্তে শেষ জনপদে পৌঁছলেন। সেখানে কাদাময় পানির ঝরনা বা সমুদ্র ছিল; যেটা নীচে থেকে কালো মনে হচ্ছিল। তাঁর মনে হল, যেন সূর্য ঐ পানিতে অস্ত যাচ্ছে। সমুদ্র-তীর থেকে বা দূর থেকে সেখানে পানি ব্যতীত আর কিছু দেখা যায় না, সেখানে যারা সূর্যাস্ত প্রত্যক্ষ করবে তাদের মনে হবে যেন সূর্য সমুদ্রেই অস্ত যাচ্ছে অথচ সূর্য মহাকাশে স্বস্থানেই অবস্থান করে।
[2] ‘আমি বললাম---’ অহীর মাধ্যমে। এর দ্বারা কিছু সংখ্যক উলামা তাঁর নবী হবার দলীল গ্রহণ করেছেন। পক্ষান্তরে যাঁরা তাঁকে নবী বলে স্বীকার করেন না, তাঁরা এর অর্থে বলেন, ‘সেই সময়কার নবীর মাধ্যমে আমি তাকে বললাম।’
[3] অর্থাৎ, আমি তাকে ঐ জাতির উপর বিজয়ী করে পূর্ণ অধিকার দিলাম যে, ইচ্ছা হলে তুমি তাদেরকে হত্যা কর অথবা বন্দী কর অথবা মুক্তিপণ নিয়ে তাদেরকে অনুগ্রহ করে মুক্ত করে দাও।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান