৩১ সূরাঃ লুকমান | Luqman | سورة لقمان - আয়াত নং - ১৯ - মাক্কী

৩১ : ১৯ وَ اقۡصِدۡ فِیۡ مَشۡیِكَ وَ اغۡضُضۡ مِنۡ صَوۡتِكَ ؕ اِنَّ اَنۡكَرَ الۡاَصۡوَاتِ لَصَوۡتُ الۡحَمِیۡرِ ﴿۱۹﴾

‘আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর, তোমার আওয়াজ নীচু কর; নিশ্চয় সবচাইতে নিকৃষ্ট আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ’। আল-বায়ান

চলাফেরায় সংযত ভাব অবলম্বন কর এবং কণ্ঠস্বর নীচু কর। স্বরের মধ্যে নিশ্চয়ই গাধার স্বর সর্বাপেক্ষা শ্রুতিকটু। তাইসিরুল

পদচারণায় মধ্য পন্থা অবলম্বন করবে এবং তোমার কন্ঠস্বর করবে নীচু; স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর। মুজিবুর রহমান

And be moderate in your pace and lower your voice; indeed, the most disagreeable of sounds is the voice of donkeys." Sahih International

১৯. আর তুমি তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর(১) এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু করো(২); নিশ্চয় সুরের মধ্যে গর্দভের সুরই সবচেয়ে অপ্ৰীতিকর।(৩)

(১) অর্থাৎ দৌড়-ধাপসহ চলো না, যা সভ্যতা ও শালীনতার পরিপন্থী। এভাবে চলার ফলে নিজেরও দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার আশংকা থাকে বা অপরের দুর্ঘটনার কারণও ঘটতে পারে। আবার অত্যধিক মন্থর গতিতেও চলো না—যা সেসব গর্বস্ফীত আত্মাভিমানীদের অভ্যাস, যারা অন্যান্য মানুষের চাইতে নিজের অসার কৌলিন্য ও শ্রেষ্ঠত্ব দেখাতে চায়। অথবা সেসব স্ত্রীলোকদের অভ্যাস, যারা অত্যধিক লজ্জা-সংকোচের দরুন দ্রুতগতিতে বিচরণ করে না। অথবা অক্ষম ব্যাধিগ্রস্তদের অভ্যাস। প্রথমটি তো হারাম। দ্বিতীয়টি যদি নারী জাতির অনুসরণে করা হয় তাও না-জায়েয। আর যদি এ উদ্দেশ্য না থাকে, তবে পুরুষের পক্ষে এটা একটা কলঙ্ক। তৃতীয় অবস্থায় আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রদর্শন—সুস্থ থাকা সত্বেও রোগগ্রস্তদের রূপ ধারণ করা। [ইবন কাসীর, কুরতুবী]

(২) অর্থাৎ তোমাদের স্বর ক্ষীণ কর। যার অর্থ স্বর প্রয়োজনীতিরিক্ত উচ্চ করো না। [ইবন কাসীর, কুরতুবী]

(৩) অর্থাৎ চতুস্পদ জন্তুসমূহের মধ্যে গাধার চীৎকারই অত্যন্ত বিকট ও শ্রুতিকটু। [কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৯) তুমি তোমার চলনে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর[1] এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু কর;[2] স্বরের মধ্যে গাধার সবরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’

[1] অর্থাৎ চলন যেন এমন ধীর গতির না হয়, যাতে দেখে অসুস্থ মনে হয় এবং এমন দ্রুত গতিরও না হয়, যা সম্ভ্রম ও গাম্ভীর্যের পরিপন্থী হয়। এ কথাকে অন্য জায়গায় এভাবে বলা হয়েছে, (يَمْشُوْنَ عَلَى الاَرْضِ هَوْنًا) ‘‘(আল্লাহর বান্দাগণ) পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে।’’ (সূরা ফুরকান ৬৩ আয়াত)

[2] অর্থাৎ, উচ্চ স্বরে (চিৎকার করে) কথা বলবে না। কারণ বেশি চিৎকার করে কথা বলা যদি পছন্দনীয় হতো, তাহলে গাধার আওয়াজ সব থেকে উত্তম গণ্য হতো। কিন্তু তা হয় না, বরং গাধার আওয়াজ সর্বনিকৃষ্ট ও সকলের কাছে অপছন্দনীয়। এই জন্য হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘‘গাধার চিৎকার শুনলে শয়তান থেকে (আল্লাহর নিকট) আশ্রয় প্রার্থনা করো।’’ (বুখারীঃ বাদউল খালক অধ্যায়, মুসলিম ইত্যাদি)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান