লগইন করুন
৩ সূরাঃ আলে-ইমরান | Al-i-Imran | سورة آل عمران - আয়াত নং - ৪৪ মাদানী
এটি গায়েবের সংবাদসমূহের অন্তর্ভুক্ত, যা আমি তোমার প্রতি ওহী পাঠাচ্ছি। আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের দায়িত্ব নেবে? আর তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন তারা বিতর্ক করছিল । আল-বায়ান
এসব অদৃশ্যের সংবাদ, আমি তোমার কাছে তা ওয়াহী দ্বারা পৌঁছে দিচ্ছি। বস্তুতঃ তুমি তাদের নিকট উপস্থিত ছিলে না যখন তাদের কোন্ ব্যক্তি মারইয়ামকে লালন-পালন করবে সেই ভাগ্য নির্ণয়ের জন্য কলম নিক্ষেপ করছিল এবং তুমি তাদের নিকট উপস্থিত ছিলে না, যখন তারা (মারইয়ামের অভিভাবক কে হবে তা নিয়ে) বাদানুবাদ করছিল। তাইসিরুল
এটা সেই অদৃশ্য বিষয়ক সংবাদ যা আমি তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করছি; এবং যখন তারা স্বীয় লেখনীসমূহ নিক্ষেপ করছিল যে, তাদের মধ্যে কে মারইয়ামের প্রতিপালন করবে তখন তুমি তাদের নিকট ছিলেনা; এবং যখন তারা কলহ করছিল তখনও তুমি তাদের নিকট ছিলেনা। মুজিবুর রহমান
That is from the news of the unseen which We reveal to you, [O Muhammad]. And you were not with them when they cast their pens as to which of them should be responsible for Mary. Nor were you with them when they disputed. Sahih International
৪৪. এটা গায়েবের সংবাদের অন্তর্ভুক্ত, যা আমরা আপনাকে ওহী দ্বারা অবহিত করছি। আর মারইয়ামের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাদের মধ্যে কে গ্রহণ করবে এর জন্য যখন তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল(১) আপনি তখন তাদের নিকট ছিলেন না এবং তারা যখন বাদানুবাদ করছিল তখনো আপনি তাদের নিকট ছিলেন না।
(১) অর্থাৎ তারা কলম ফেলে লটারী করে মারইয়াম আলাইহাস সালাম কার তত্ত্বাবধানে থাকবেন সেটা নির্ধারণ করছিলেন। ইসলামী শরীয়তে লটারী সম্পর্কিত বিধান এই যে, যেসব হকের কারণ শরীয়তানুযায়ী নির্দিষ্ট ও জানা আছে, সেসব হকের মীমাংসা লটারীযোগে করা নাজায়েয এবং তা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। উদাহরণতঃ শরীকানাধীন বস্তুর মীমাংসা লটারীযোগে করা এবং লটারীতে যার নাম বের হয় তাকে সম্পূর্ণ বস্তুটি দিয়ে দেয়া অথবা কোন শিশুর পিতৃত্বে মতবিরোধ দেখা দিলে লটারযোগে একজনকে পিতা মনে করে নেয়া। পক্ষান্তরে যেসব হকের কারণ জনগণের রায়ের ওপর ন্যস্ত, সেসব হকের মীমাংসা লটারযোগে করা জায়েয। যথা- কোন শরীককে কোন অংশ দেয়া হবে, সেটা লটারীর মাধ্যমে মীমাংসা করা। এক্ষেত্রে লটারীর মাধ্যমে একজনকে পূর্বের অংশ অন্যজনকে পশ্চিমের অংশ দেয়া জায়েয। এর কারণ এই যে, লটারী ছাড়াই উভয়পক্ষ একমত হয়ে যদি এভাবে অংশ নিত অথবা বিচারকের রায়ের ভিত্তিতে এভাবে নিত, তবুও তা জায়েয হত। অর্থাৎ যে ক্ষেত্রে সব শরীকের অংশ সমান হয়, সেখানে কোন এক দিককে এক শরীকের জন্যে নির্দিষ্ট করার উদ্দেশ্যে লটারী জায়েয। [দেখুন, কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৪৪) এ অদৃশ্যলোকের সংবাদ যা তোমাকে অহী (ঐশীবাণী) দ্বারা অবহিত করছি। তুমি তাদের নিকট ছিলে না, যখন মারয়্যামের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাদের মধ্যে কে নেবে (তা দেখার জন্য) তারা তাদের কলম নিক্ষেপ করছিল এবং যখন তারা (এ ব্যাপারে) বাদানুবাদ করছিল, তখনও তুমি তাদের নিকট ছিলে না। [1]
[1] বর্তমানের বিদআতীরা নবী করীম (সাঃ)-এর ব্যাপারে অতিরঞ্জন করে তাঁকে মহান আল্লাহর মত আলেমুল গায়েব (অদৃশ্য জগতের জ্ঞানের অধিকারী) বলে মনে করে এবং বিশ্বাস করে যে, তিনি সব জায়গায় হাযির (উপস্থিত) এবং নাযির (তদারককারী)। এই আয়াত দ্বারা তাদের উভয় আকীদার পরিষ্কারভাবে খন্ডন করা হয়েছে। যদি তিনি ‘আলেমুল গায়ব’ হতেন, তাহলে আল্লাহ তাআলা এ কথা বলতেন না যে, ‘‘এ অদৃশ্যলোকের সংবাদ, যা তোমাকে অহী (ঐশীবাণী) দ্বারা অবহিত করছি।’’ কেননা, যিনি আগে থেকেই জানেন, তাঁকে এরূপ বলা হয় না। অনুরূপ যিনি হাযির (উপস্থিত) এবং নাযির (তদারককারী) তাঁকে এ কথা বলা যায় না যে, তুমি সেখানে উপস্থিত ছিলে না, যখন তারা লটারীর জন্য কলম নিক্ষেপ করছিল। লটারী করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল, কারণ মারয়্যামের লালন-পালন করার দাবীদার আরো কয়েকজন ছিল। [ذَلِكَ مِنْ اَنْبَآءِ الْغَيْبِ نُوِحِيْهِ إِلَيْكَ] আয়াতে নবী কারীম (সাঃ)-এর রিসালাত এবং তাঁর সত্যতার প্রমাণও রয়েছে, যে ব্যাপারে ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টানগণ সন্দেহ পোষণ করত। কেননা, শরীয়তের অহী কেবল পয়গম্বরের উপরেই আসে, অন্যের উপরে আসে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান