লগইন করুন
২৮ সূরাঃ আল-কাসাস | Al-Qasas | سورة القصص - আয়াত নং - ৫২ - মাক্কী
এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এর প্রতি ঈমান আনে। আল-বায়ান
এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা (অর্থাৎ তাদের কতক লোক) তাতে বিশ্বাস করে। তাইসিরুল
এর পূর্বে আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম তারা এতে বিশ্বাস করে। মুজিবুর রহমান
Those to whom We gave the Scripture before it - they are believers in it. Sahih International
৫২. এর আগে আমরা যাদেরকে কিতাব দিয়েছিলাম, তারা এতে ঈমান আনে।(১)
(১) এ আয়াতে সেসব আহলে কিতাবের কথা বলা হয়েছে, যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত ও কুরআন নাযিলের পূর্বেও তাওরাত ও ইঞ্জীল প্রদত্ত সুসংবাদের ভিত্তিতে কুরআন ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতে বিশ্বাসী ছিল। এরপর যখন প্রেরিত হন, তখন সাবেক বিশ্বাসের ভিত্তিতে কালবিলম্ব না করে মুসলিম হয়ে যায়। [ইবন কাসীর]। যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “যাদেরকে আমরা কিতাব দিয়েছি, তাদের মধ্যে যারা যথাযথভাবে তা তিলাওয়াত করে, তারা তাতে ঈমান আনে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১২১]
কোন কোন ঐতিহাসিক ও জীবনীকার এ ঘটনাকে মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাকের বরাত দিয়ে নিন্মোক্তভাবে বর্ণনা করেছেনঃ “আবিসিনিয়ায় হিজরাতের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত প্ৰাপ্তি এবং তার দাওয়াতের খবর যখন সেই দেশে ছড়িয়ে পড়লো তখন সেখান থেকে প্রায় ২০ জনের একটি খৃষ্টান প্রতিনিধি দল প্রকৃত অবস্থা অনুসন্ধানের জন্য মক্কায় এলো। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে মসজিদে হারামে সাক্ষাৎ করলো। কুরাইশদের বহু লোকও এ ব্যাপার দেখে আশপাশে দাঁড়িয়ে গেলো। প্রতিনিধি দলের লোকেরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কিছু প্রশ্ন করলেন। তিনি সেগুলোর জবাব দিলেন। তারপর তিনি তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন এবং কুরআন মজীদের আয়াত তাদের সামনে পাঠ করলেন।
কুরআন শুনে তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলো। তারা একে আল্লাহর বাণী বলে অকুণ্ঠভাবে স্বীকার করলেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনলেন। মজলিস শেষ হবার পর আবু জাহল ও তার কয়েকজন সাথী প্রতিনিধিদলের লোকদেরকে পথে ধরলো এবং তাদেরকে যাচ্ছে তাই বলে তিরস্কার করলো। তাদেরকে বললো, তোমাদের সফরটাতো বৃথাই হলো। তোমাদের স্বধৰ্মীয়রা তোমাদেরকে এজন্য পাঠিয়েছিল যে, এ ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে তোমরা যথাযথ অনুসন্ধান চালিয়ে প্রকৃত ও যথার্থ ঘটনা তাদেরকে জানাবে। কিন্তু তোমরা সবেমাত্র তার কাছে বসেছিলে আর এরি মধ্যেই নিজেদের ধর্ম ত্যাগ করে তার প্রতি ঈমান আনলে? তোমাদের চেয়ে বেশী নির্বোধ কখনো আমরা দেখিনি। একথায় তারা জবাব দিল, ভাইয়েরা, তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা তোমাদের সাথে জাহেলী বিতর্ক করতে চাই না। আমাদের পথে আমাদের চলতে দাও এবং তোমরা তোমাদের পথে চলতে থাকো। আমরা জেনেবুঝে কল্যাণ থেকে নিজেদেরকে বঞ্চিত করতে পারি না।” [সীরাতে ইবনে হিশাম, ২/৩২, এবং আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহঃ ৩/৮২]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫২) এর পূর্বে আমি যাদেরকে গ্রন্থ দিয়েছিলাম, তারাও এতে বিশ্বাস করে। [1]
[1] এখানে ঐ সকল ইয়াহুদীদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল। যেমন, আব্দুল্লাহ বিন সালাম (রাঃ) ইত্যাদি। অথবা ঐ সকল খ্রিষ্টান যারা হাবশা হতে নবী (সাঃ)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়েছিল এবং তাঁর পবিত্র মুখে কুরআনের বাণী শুনে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। (ইবনে কাসীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান