৪ সূরাঃ আন-নিসা | An-Nisa | سورة النساء - আয়াত নং - ৫৭ মাদানী
আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, অচিরেই আমি তাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা হবে স্থায়ী। সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তাদেরকে আমি প্রবেশ করাব বিস্তৃত ঘন ছায়ায়। আল-বায়ান
যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করব যার নিম্নে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরবাসী হবে, তাতে তাদের জন্য থাকবে পবিত্র স্ত্রী এবং আমি তাদেরকে চির স্নিগ্ধ ঘন ছায়ায় দাখিল করব। তাইসিরুল
আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে সৎ কার্যাবলী সম্পাদন করেছে, নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার নিম্নে স্রোতস্বিনীসমূহ প্রবাহিতা, তন্মধ্যে তারা চিরকাল অবস্থান করবে; সেখানে তাদের জন্য পবিত্রা সহধর্মিণীগণ রয়েছে এবং আমি তাদেরকে সুবিস্তৃত ছায়া শীতল স্থানে প্রবেশ করাব। মুজিবুর রহমান
But those who believe and do righteous deeds - We will admit them to gardens beneath which rivers flow, wherein they abide forever. For them therein are purified spouses, and We will admit them to deepening shade. Sahih International
৫৭. আর যারা ঈমান আনে এবং ভাল কাজ করে, অচিরেই আমরা তাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাব, যার পাদদেশে নদী-নালাসমূহ প্রবাহিত; যেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র স্ত্রী থাকবে এবং তাদেরকে আমরা চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় প্রবেশ করাব।(১)
(১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ আছে এর ছায়ায় যদি কোন আরোহণকারী ভ্রমণ করতে চায় তাহলে একশত বছর ভ্রমণ করতে পারবে। তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত পড়তে পার “আর সম্প্রসারিত ছায়া।” [সূরা আল ওয়াকিয়াঃ ৩০, বুখারীঃ ৩২৫২]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৭) আর যারা বিশ্বাস করে ও ভাল কাজ করে[1] তাদেরকে বেহেশ্তে প্রবেশ করাব; যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, সেখানে তাদের জন্য পবিত্র সঙ্গিনী আছে এবং তাদেরকে চিরস্নিগ্ধ ঘন ছায়ায় স্থান দান করব। [2]
[1] কাফেরদের বিপরীত ঈমানদারদের জন্য জান্নাতে নিরবচ্ছিন্ন যে নিয়ামত হবে এই আয়াতে তার আলোচনা করা হচ্ছে। তবে ঈমানদার বলতে এমন ঈমানদার ব্যক্তিবর্গ যাদের থাকবে অধিকহারে সৎকর্মের সম্বল। – جَعَلَنَا اللهُ مِنْهُم - মহান আল্লাহ কুরআন মাজীদের প্রত্যেক স্থানে ঈমানের সাথে সাথে সৎকর্মের কথা উল্লেখ করে এ কথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, এরা (ঈমান ও সৎকর্ম) আপোসে একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। নেক আমল ছাড়া ঈমান হল ঐরূপ, যেরূপ সুবাসবিহীন ফুল এবং ফলবিহীন গাছ। সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) এবং ইসলামের স্বর্ণযুগের মুসলিমরা এ কথা অনুধাবন করে নিয়েছিলেন। তাই তাঁদের জীবন ছিল ঈমানের ফল আমল দ্বারা পরিপূর্ণ। সে যুগে আমলবিহীন বা মন্দ আমলের সাথে ঈমানের কথা কল্পনাই করা যেত না। পক্ষান্তরে বর্তমানে কেবল মৌখিক জমা-খরচের নাম হয়েছে ঈমান। ঈমানের দাবীদারদের ঝুলি নেক আমল থেকে খালি।-هَدَانَا اللهُ تَعَالى- আবার অনেকে সততা, আমানতদারী, দয়া-দাক্ষিণ্য এবং অপরের দুঃখ মোচনের কাজ সহ আরো অনেক নৈতিকতার এমন কাজ করে, যা সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত; কিন্তু ঈমানের মূলধন থেকে সে বঞ্চিত থাকে। ফলে তার এই কর্মসমূহ দুনিয়াতে তার প্রসিদ্ধি এবং সুনামের মাধ্যম সাব্যস্ত হলেও আখেরাতে আল্লাহর নিকট তার কোন মূল্য থাকবে না। কারণ, নেক আমলকে আল্লাহর নিকট লাভদায়ক সাব্যস্তকারী ঈমানই তার মধ্যে নেই। বরং তার নেক আমলের ভিত্তি ছিল পার্থিব স্বার্থ অথবা জাতিগত অভ্যাস ও নৈতিকতা।
[2] চিরস্নিগ্ধ ঘন এবং পবিত্র ছায়া বলতে পরিপূর্ণ আরামকে বুঝানো হয়েছে। একটি হাদীসে এসেছে যে, ‘‘জান্নাতে একটি গাছ আছে; যার ছায়া এত সুদীর্ঘ যে, এক সওয়ার শত বছর চলার পরও তা অতিক্রম করতে পারবে না। এটা হল, ‘শাজারাতুল খুলদ’ (চিরস্থায়িত্বের গাছ)।’’
(মুসনাদ আহমদ ২/৪৫৫ এর মূল অংশ বুখারীতে জান্নাতের বিবরণ অধ্যায় রয়েছে।)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান