পরিচ্ছেদঃ ২) রিয়া থেকে সতর্কীকরণ, কোন ব্যাক্তি রিয়ার আশংকা করলে কি বলবে
২২. (সহীহ্) আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ
’’কিয়ামত দিবসে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে এমন ব্যাক্তি যে শাহাদত বরণ করেছে। তাকে সামনে নিয়ে আসা হবে। তখন (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামতরাজীর পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। বলবেন, কি কাজ করেছ তা দ্বারা? সে বলবে, তোমার পথে যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে গেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি যুদ্ধ করেছ এই উদ্দেশে যে, তোমাকে বলা হবে উমুক ব্যাক্তি বীর যোদ্ধা। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং (সর্বপ্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যাক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষাদান করেছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নেয়ামত দ্বারা। সে বলবে, জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সন্তোষটির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে ক্বারী বা পাঠক। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং (সর্বপ্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যাক্তির, আল্লাহ যাকে প্রাচুর্য দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরণের সম্পদ। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ তা’আলা) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তোষটির উদ্দেশ্যে অর্থ সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরুপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের ভরে ছেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’’
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ও নাসাঈ)
হাদীছটি ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করে তাকে হাসান বলেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, উভয়ের বাক্যরুপ একইঃ
ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ আবু ঊছমান আল মাদীনী হতে বর্ণিত। ঊক্ববা বিন মুসলিম তাঁর কাছে হাদীছ বর্ণনা করেন যে, শুফাইয়া আল আসবাহী বর্ণনা করেন, তিনি (শুফাইয়া) একদা মদীনায় প্রবেশ করলেন, এসময় তিনি এক ব্যাক্তিকে দেখলেন, মানুষ তার নিকট একত্রিত হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, কে এই লোক? তারা বললঃ আবু হুরায়রা। তিনি বলেনঃ একথা শুনে আমি তাঁর নিকটবর্তী হলাম, এমনকি তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। সে সময় মানুষকে তিনি হাদীছ শুনাচ্ছিলেন। যখন তিনি থামলেন এবং নির্জন হলেন, আমি তাঁকে বললাম, দয়া করে আপনি আমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করুন, যা আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নিকট থেকে শুনে বুঝেছেন ও জেনেছেন। আবু হুরায়রা বললেনঃ তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করব যা আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্ণনা করেছেন। আমি তা বুঝেছি এবং জেনেছি। অতঃপর আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন (একনকি ভয়ে প্রায় বেহুশ হয়ে গেলেন)। আমরা কিছু সময় অপেক্ষা করলাম। তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। অতঃপর বললেনঃ আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বর্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন। অতঃপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিলে এলেন এবং মুখমণ্ডল ে হাত বুলালেন। বললেন, তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বর্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা ভীষণ ভাবে চিৎকার দিয়ে উঠলেন এবং মুখের ভরে পড়ে যেতে লাগলেন। আমি তাঁকে দীর্ঘ সময় সোজা করে ধরে রাখলাম। অতঃপর তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। তারপর বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেনঃ
’’কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা’আলা বান্দাদের মাঝে বিচার-ফায়সালা করার জন্য অবতরন করবেন। প্রত্যেক জাতি হাঁটুর উপর ভর করে নতজানু অবস্থায় থাকবে। সর্বপ্রথম যাকে ডাকা হবে সে এক ব্যাক্তি যে কুরআনের প্রচুর জ্ঞানার্জন করেছিল, আর এক ব্যাক্তি যে আল্লাহর পথে নিহত হয়েছিল এবং এক ব্যাক্তি যে অঢেল সম্পদের অধিকারী ছিল। সম্মানিত মহান আল্লাহ কুরআনের ক্বারীকে বলবেন, আমার রাসূলের উপর আমি যা নাযিল করেছিলাম তার জ্ঞান কি তোমাকে দান করি নি? সে বলবে, হাঁ হে আমার প্রতিপালক। তিনি বলবেন, যে জ্ঞান অর্জন করেছ সে অনুযায়ী কি আমল করেছ? বলবে আমি রাত-দিন তা নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি তার হক আদায় করেছি। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আর মহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যাক্তি ক্বারী। আর তা তো বলাই হয়েছে।
সম্পদশালী ব্যাক্তিকে নিয়ে আসা হবে। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ আমি কি তোমাকে সম্পদের প্রাচুর্য দান করিনি? এমনকি কারো মুখাপেক্ষী করে তোমাকে রাখিনি? সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার বর। তিনি বলবেনঃ তোমাকে যা দান করেছিলাম তা কোন কাজে ব্যবহার করেছ? সে বলবেঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতাম এবং দান-সাদকা করতাম। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। সুমহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, তোমাকে বলা হবে উমুক ব্যাক্তি দানশীল। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে।
আল্লাহর পথে নিহত ব্যাক্তিকে নিয়ে আসা হবে। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ কি কারনে নিহত হয়েছ? সে বলবে, হে প্রভূ! আপনার রাস্তায় জিহাদ করার জন্য আপনি আদেশ করেছিলেন, তাই লড়াই করে নিহত হয়েছি। আল্লাহ তা’আলা তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যাক্তি বীর যোদ্ধা। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার হাঁটুর উপর আঘাত করে বললেনঃ
’’হে আবু হুরায়রা! আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে এরা হল তিন ব্যাক্তি কিয়ামত দিবসে যাঁদেরকে সর্বপ্রথম জাহান্নামের আগুনে প্রজ্জলিত করা হবে।’’
আল ওয়ালীদ আবু উছামান আল মাদীনী বলেনঃ উক্ববা আমাকে সংবাদ দেন যে, শুফাইয়াই আবার মুআবিয়ার নিকট গিয়ে এই হাদীছ বর্ণনা করেন। আবু উছমান বলেন, আর আলা বিন আবু হাকীম আমাকে বলেন যে, তিনি (শুফাইয়া) ছিলেন মুআবিয়ার জন্য তরবারী স্বরূপ। তিনি (আবু উছমান) বলেনঃ জনৈক ব্যাক্তি তাঁর নিকট গিয়ে আবু হুরায়রার বরাত দিয়ে এ হাদীছ বর্ণনা করেন। হাদীছ শুনে মুআবিয়া বলেনঃ এ ধরণের ব্যাক্তিদের সাথে এরকম ব্যবহার হবে, তাহলে বাকী মানুষের অবস্থা কি হবে? অতঃপর মুআবিয়া খুব কাঁদতে লাগলেন। তাঁর ত্রুন্দনের আধিক্যতা দেখে আমরা মনে করলাম তিনি হয়ত মারাই যাবেন। বললামঃ এ লোকটি আমাদের জন্য অমঙ্গল নিয়ে এসেছে। মুআবিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে মুখমণ্ডল মুছলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেন
(مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ(
অর্থঃ ’’যে ব্যাক্তি দুনিয়ার জীবন এবং তার চাকচিক্য কামনা করবে, আমি তাদের কর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেই পুরাপুরি দান করব। এবং তাদের কোন প্রকার কমতি করা হবে না। এদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই। দুনিয়াতে তারা যা করেছে তা ধ্বংস হয়ে গেছে আর যা সম্পাদন করেছে তা বিনষ্ট হয়েছে।’’(সূরা হূদঃ ১৫-১৬)
হাদীছটি ইবনু খাযায়মা স্বীয় [ছহীহ] গ্রন্থে এরূপই বর্ণনা করেন। দুয়েকটি শব্দ ছাড়া তেমন কোথাও তেমন বৈপরিত্য নেই।
الترهيب من الرياء وما يقوله من خاف شيئا منه
صحيح [২২] عن أبِيْ هُرَيْرَةَ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ.
وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ.
وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلَّا أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ. (رواه مسلم والنسائي)
ورواه الترمذي وحسنه وابن حبان في صحيحه كلاهما بلفظ واحد عن الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ أَبُيْ عُثْمَانَ الْمَدَيِْنِيِّ أَنَّ عُقْبَةَ بْنَ مُسْلِمٍ حَدَّثَهُ أَنَّ شُفَيًّا الْأَصْبَحِيَّ حَدَّثَهُ
" أَنَّهُ دَخَلَ الْمَدِينَةَ فَإِذَا هُوَ بِرَجُلٍ قَدِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِ النَّاسُ فَقَالَ مَنْ هَذَا فَقَالُوا أَبُو هُرَيْرَةَ فَدَنَوْتُ مِنْهُ حَتَّى قَعَدْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُوَ يُحَدِّثُ النَّاسَ فَلَمَّا سَكَتَ وَخَلَا قُلْتُ لَهُ أَنْشُدُكَ بِحَقٍّ وَبِحَقٍّ لَمَا حَدَّثْتَنِي حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَلْتَهُ وَعَلِمْتَهُ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَفْعَلُ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَلْتُهُ وَعَلِمْتُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً فَمَكَثَ قَلِيلًا ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ فَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا وَهُوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ وَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ أَفْعَلُ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا مَعَهُ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَهُ أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً شَدِيدَةً ثُمَّ مَالَ خَارًّا عَلَى وَجْهِهِ فَأَسْنَدْتُهُ عَلَيَّ طَوِيلًا ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ حَدَّثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :
إنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يَنْزِلُ إِلَى الْعِبَادِ لِيَقْضِيَ بَيْنَهُمْ وَكُلُّ أُمَّةٍ جَاثِيَةٌ فَأَوَّلُ مَنْ يَدْعُو بِهِ رَجُلٌ جَمَعَ الْقُرْآنَ وَرَجُلٌ يَقْتَتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَرَجُلٌ كَثِيرُ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لِلْقَارِئِ أَلَمْ أُعَلِّمْكَ مَا أَنْزَلْتُ عَلَى رَسُولِي قَالَ بَلَى يَا رَبِّ قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا عُلِّمْتَ قَالَ كُنْتُ أَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ إِنَّ فُلَانًا قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ
وَيُؤْتَى بِصَاحِبِ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَمْ أُوَسِّعْ عَلَيْكَ حَتَّى لَمْ أَدَعْكَ تَحْتَاجُ إِلَى أَحَدٍ قَالَ بَلَى يَا رَبِّ قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا آتَيْتُكَ قَالَ كُنْتُ أَصِلُ الرَّحِمَ وَأَتَصَدَّقُ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلَانٌ جَوَادٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ
وَيُؤْتَى بِالَّذِي قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ فِي مَاذَا قُتِلْتَ فَيَقُولُ أُمِرْتُ بِالْجِهَادِ فِي سَبِيلِكَ فَقَاتَلْتُ حَتَّى قُتِلْتُ فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلَانٌ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ ثُمَّ ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رُكْبَتِي فَقَالَ:
يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أُولَئِكَ الثَّلَاثَةُ أَوَّلُ خَلْقِ اللَّهِ تُسَعَّرُ بِهِمُ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
وقَالَ الْوَلِيدُ أَبُو عُثْمَانَ فَأَخْبَرَنِي عُقْبَةُ بْنُ مُسْلِمٍ أَنَّ شُفَيًّا هُوَ الَّذِي دَخَلَ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا قَالَ أَبُو عُثْمَانَ وَحَدَّثَنِي الْعَلَاءُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ أَنَّهُ كَانَ سَيَّافًا لِمُعَاوِيَةَ فَدَخَلَ عَلَيْهِ رَجُلٌ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ قَدْ فُعِلَ بِهَؤُلَاءِ هَذَا فَكَيْفَ بِمَنْ بَقِيَ مِنَ النَّاسِ ثُمَّ بَكَى مُعَاوِيَةُ بُكَاءً شَدِيدًا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ هَالِكٌ وَقُلْنَا قَدْ جَاءَنَا هَذَا الرَّجُلُ بِشَرٍّ ثُمَّ أَفَاقَ مُعَاوِيَةُ وَمَسَحَ عَنْ وَجْهِهِ وَقَالَ صَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ (مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ)
وراه ابن خزيمة في (صحيحه) نحو هذا