৫৯১৫

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - মু'জিযার বর্ণনা

৫৯১৫-[৪৮] আবূ হুমায়দ আস্ সাইদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে তাবুকের যুদ্ধের জন্য রওয়ানা হলাম। অতঃপর আমরা ’ওয়াদিউল কুরা’ নামক স্থানে এক মহিলার বাগানে উপস্থিত হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা (বাগানের খেজুরের) পরিমাণ আন্দায কর। অতএব আমরা ধারণা করলাম এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) বাগানের ফল দশ ওয়াসাক হবে বলে অনুমান করলেন। এরপর তিনি (সা.) উক্ত মহিলাকে বললেন, এ বাগানে কি পরিমাণ খেজুর উৎপন্ন হয়, ভালোভাবে তার হিসাব রেখো, যাবৎ না আমরা তোমার কাছে ফিরে আসি ইনশা-আল্লা-হ। অবশেষে আমরা রওয়ানা হয়ে তাবুকে এসে উপস্থিত হলাম।
তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, সাবধান! আজ রাতে ব্যাপক ঝড় হবে। অতএব তোমাদের কেউই যেন দাঁড়িয়ে না থাকে। আর যার সাথে উট রয়েছে, সে যেন তাকে শক্ত করে বেঁধে রাখে। রাতে প্রচণ্ড ঝড় হলো। এক লোক দাড়িয়ে গেলে ঝড় তাকে উড়িয়ে ’তাঈ’ পাহাড়ে নিয়ে নিক্ষেপ করল। অতঃপর আমরা ফেরার পথে ওয়াদিউল কুরায় এসে পৌছলাম। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) উক্ত মহিলাকে প্রশ্ন করলেন, তোমাদের বাগানে কি পরিমাণ ফল উৎপন্ন হয়েছে? সে বলল, “দশ ওয়াসাক’। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب فِي المعجزا)

وَعَن أبي حميد السَّاعِدِيّ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَزْوَةَ تَبُوكَ فَأَتَيْنَا وَادِيَ الْقُرَى عَلَى حَدِيقَةٍ لِامْرَأَةٍ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اخْرُصُوهَا» فَخَرَصْنَاهَا وَخَرَصَهَا رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَشَرَةَ أَوْسُقٍ وَقَالَ: «أَحْصِيهَا حَتَّى نَرْجِعَ إِلَيْكِ إِنْ شَاءَ اللَّهُ» وَانْطَلَقْنَا حَتَّى قَدِمْنَا تَبُوكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «سَتَهُبُّ عَلَيْكُمُ اللَّيْلَةَ رِيحٌ شَدِيدَةٌ فَلَا يَقُمْ فِيهَا أَحَدٌ مِنْكُم فَمَنْ كَانَ لَهُ بَعِيرٌ فَلْيَشُدَّ عِقَالَهُ» فَهَبَّتْ رِيحٌ شَدِيدَةٌ فَقَامَ رَجُلٌ فَحَمَلَتْهُ الرِّيحُ حَتَّى أَلْقَتْهُ بِجَبَلَيْ طَيِّئٍ ثُمَّ أَقْبَلْنَا حَتَّى قَدِمْنَا وَادِيَ الْقُرَى فَسَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَرْأَةُ عَنْ حَدِيقَتِهَا كَمْ بَلَغَ ثَمَرهَا فَقَالَت عشرَة أوسق. مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (1481) و مسلم (11 / 1392)، (3371) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن ابي حميد الساعدي قال: خرجنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم غزوة تبوك فاتينا وادي القرى على حديقة لامراة فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اخرصوها» فخرصناها وخرصها رسول الله صلى الله عليه وسلم عشرة اوسق وقال: «احصيها حتى نرجع اليك ان شاء الله» وانطلقنا حتى قدمنا تبوك فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ستهب عليكم الليلة ريح شديدة فلا يقم فيها احد منكم فمن كان له بعير فليشد عقاله» فهبت ريح شديدة فقام رجل فحملته الريح حتى القته بجبلي طيى ثم اقبلنا حتى قدمنا وادي القرى فسال رسول الله صلى الله عليه وسلم المراة عن حديقتها كم بلغ ثمرها فقالت عشرة اوسق. متفق عليه متفق علیہ ، رواہ البخاری (1481) و مسلم (11 / 1392)، (3371) ۔ (متفق عليه)

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসের শেষের দিকে বলা হয়েছে, (فَحَمَلَتْهُ الرِّيحُ حَتَّى أَلْقَتْهُ بِجَبَلَيْ طَيِّئٍ) অর্থাৎ বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে তাঈয়ের দুই পাহাড়ে নিক্ষেপ করল। পাহাড় দুটি সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন, দুটি পাহাড়ের একটির নাম ছিল ‘আযা' এবং আরেকটির নাম ছিল ‘সালমা'। আর এ দুটির নামকরণ করা হয়েছে আমালিকা গোত্রের একজন নারী ও পুরুষের নামে।
উক্ত হাদীসে রাসূল (সা.) থেকে প্রকাশিত তিনটি মু'জিযার কথা জানা যায়। সেগুলো হলো,

১) রাসূল (সা.) আগেই বলে দিয়েছেন যে, আজ রাতে প্রচণ্ড বাতাস হবে। আর রাতে তাই ঘটেছে।

২) তিনি (সা.) আগেই বলেছিলেন যে, কেউ যেন বাতাসের সময় না দাঁড়ায়। যদি কেউ দাঁড়ায় তাহলে বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে। আর রাতে তাই ঘটেছে। একজন দাঁড়িয়ে ছিল আর বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। যাকে বাতাস উড়িয়ে নিয়ে গেছে তার নাম ছিল আবূ কবিলাহ। সে ছিল ইয়ামানের অধিবাসী।

৩) গাছটিতে যে পরিমাণ খেজুর থাকার ব্যাপারে রাসূল (সা.) অনুমান করেছিলেন হুবহু সেই পরিমাণই হয়েছিল। তবে কেউ কেউ বলেন, এই পরিমাপের কথাটি ঘটনাক্রমে মিলে গেছে। এটি কোন মু'জিযাহ্ নয়। মিরকাত প্রণেতা বলেন, হ্যাঁ। হতে পারে যে, এটি ঘটনাক্রমে মিলে গেছে। কিন্তু এর মাধ্যমেই রাসূল (সা.) তাঁর নুবুওয়্যাত প্রকাশ করতে চেয়েছেন ঐ সকল মুনাফিকদের জন্য যারা মুহাম্মাদ (সা.) -এর নুবুওয়্যাত মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেনি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)