৫৮৩২

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ - রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর স্বভাব-চরিত্রের বর্ণনা

৫৮৩২-[৩২] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। অমুক পাদ্রি নামে ইয়াহূদীর রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর ওপর কিছু দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) ঋণ ছিল। একদিন সে নবী (সা.) -এর কাছে এসে তা চেয়ে বসল। উত্তরে রাসূল (সা.) তাকে বললেন, হে ইয়াহুদী! তোমাকে দেয়ার মতো আমার কাছে কিছুই নেই। ইয়াহুদী বলল, যে অবধি তুমি হে মুহাম্মাদ! আমার ঋণ পরিশোধ করবে না, ততক্ষণ আমিও তোমাকে ছেড়ে যাব না। এবার রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আচ্ছা আমিও তোমার কাছে বসে থাকব। তিনি (সা.) এই বলে তার কাছে বসে পড়লেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) সেই একই স্থানে যুহর, আসর, মাগরিব, ইশা এবং পরদিন ফজরের সালাত আদায় করলেন। এদিকে রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাহাবীগণ ইয়াহুদী লোকটিকে ধমকাচ্ছিলেন এবং ভয় দেখাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবীদের গতিবিধি বুঝতে পারলেন। (তিনি তাদেরকে ইয়াহূদীর সাথে কোন প্রকারের অসদাচরণ করতে নিষেধ করলেন) তখন সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! একজন ইয়াহুদী কি আপনাকে আটকে রাখবে? তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমার প্রভু আমাকে কোন জিম্মি ইত্যাদির উপর নির্যাতন করতে নিষেধ করেছেন। অতঃপর যখন দিনের বেলা বেড়ে গেল, তখন ইয়াহূদী বলল, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর যোগ্য কোন প্রভু নেই এবং এটাও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল।” আমি আমার ধন-সম্পদের অর্ধেক আল্লাহর পথে দান করলাম। মূলত আমি আপনার সাথে যে আচরণ করেছি, তা এ উদ্দেশে করেছি যে, দেখতে পাই তাওরাত কিতাবে আপনার স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে যে সকল গুণাবলির কথা উল্লেখ রয়েছে, তা আপনার মধ্যে পাওয়া যায় কিনা? আপনার সম্পর্কে লেখা আছে মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ, তিনি মক্কায় জন্মগ্রহণ করবেন ও মদীনায়ে তাইয়িবায় হিজরত করবেন। তাঁর রাজত্ব হবে সিরিয়া পর্যন্ত। তিনি (সা.) অশ্লীলভাষী ও কঠোরমনা হবেন না। হাঁটে-বাজারে চিৎকার করবেন না এবং অশালীনরূপ ধারণ করবেন না। তিনি (সা.) অশোভন উক্তি করবেন না (আমি এ সমস্ত কিছু যথাযথভাবে আপনার মধ্যে বিদ্যমান পেয়েছি)। আমি দৃঢ় প্রত্যয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, “আল্লাহ ছাড়া ’ইবাদত পাওয়ার যোগ্য কেউ নেই এবং আপনি নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল।” আর এই আমার ধন, আল্লাহর সন্তুষ্টিচিত্তে আপনি যেখানে ইচ্ছা তা খরচ করতে পারেন। বর্ণনাকারী বলেন, উক্ত ইয়াহূদী লোকটি ছিল বহু ধন-সম্পদের মালিক। [ইমাম বায়হাক্কী (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর “দালায়িলুন নুবুওয়্যাহ্” গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন]

اَلْفصْلُ الثَّالِثُ (بَابٌ فِي أَخْلَاقِهِ وَشَمَائِلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم)

وَعَن عَليّ أَنَّ يهوديّاً يُقَالُ لَهُ: فُلَانٌ حَبْرٌ كَانَ لَهُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي دَنَانِيرُ فَتَقَاضَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَهُ: «يَا يَهُودِيُّ مَا عِنْدِي مَا أُعْطِيكَ» . قَالَ: فَإِنِّي لَا أُفَارِقُكَ يَا مُحَمَّدُ حَتَّى تُعْطِيَنِي. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذًا أَجْلِسُ مَعَكَ» فَجَلَسَ مَعَهُ فَصَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الظُّهْرَ وَالْعَصْرَ وَالْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ الْآخِرَةَ وَالْغَدَاةَ وَكَانَ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَتَهَدَّدُونَهُ وَيَتَوَعَّدُونَهُ فَفَطِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا الَّذِي يَصْنَعُونَ بِهِ. فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ يَهُودِيٌّ يَحْبِسُكَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنَعَنِي رَبِّي أَنْ أَظْلِمَ مُعَاهِدًا وَغَيْرَهُ» فَلَمَّا تَرَجَّلَ النَّهَارُ قَالَ الْيَهُودِيُّ: أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ وَشَطْرُ مَالِي فِي سبيلِ الله أَمَا وَاللَّهِ مَا فَعَلْتُ بِكَ الَّذِي فَعَلْتُ بِكَ إِلَّا لِأَنْظُرَ إِلَى نَعْتِكَ فِي التَّوْرَاةِ: مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ مَوْلِدُهُ بِمَكَّةَ وَمُهَاجَرُهُ بِطَيْبَةَ وَمُلْكُهُ بِالشَّامِ لَيْسَ بِفَظٍّ وَلَا غَلِيظٍ وَلَا سَخَّابٍ فِي الْأَسْوَاقِ وَلَا مُتَزَيٍّ بِالْفُحْشِ وَلَا قَوْلِ الْخَنَا أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ وَهَذَا مَالِي فَاحْكُمْ فِيهِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَكَانَ الْيَهُودِيُّ كَثِيرَ المالِ. رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي «دَلَائِل النُّبُوَّة»

اسنادہ موضوع ، رواہ البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 280) * فیہ محمد بن محمد بن الاشعث : کذاب ، وضع نسخۃ اھل البیت (انظر لسان المیزان 5 / 409 وغیرہ) و ھذا من وضعہ لانہ تفرد بہ ۔
(ضَعِيف)

وعن علي ان يهوديا يقال له: فلان حبر كان له على رسول الله صلى الله عليه وسلم في دنانير فتقاضى النبي صلى الله عليه وسلم فقال له: «يا يهودي ما عندي ما اعطيك» . قال: فاني لا افارقك يا محمد حتى تعطيني. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اذا اجلس معك» فجلس معه فصلى رسول الله صلى الله عليه وسلم الظهر والعصر والمغرب والعشاء الاخرة والغداة وكان اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم يتهددونه ويتوعدونه ففطن رسول الله صلى الله عليه وسلم ما الذي يصنعون به. فقالوا: يا رسول الله يهودي يحبسك فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «منعني ربي ان اظلم معاهدا وغيره» فلما ترجل النهار قال اليهودي: اشهد ان لا اله الا الله واشهد انك رسول الله وشطر مالي في سبيل الله اما والله ما فعلت بك الذي فعلت بك الا لانظر الى نعتك في التوراة: محمد بن عبد الله مولده بمكة ومهاجره بطيبة وملكه بالشام ليس بفظ ولا غليظ ولا سخاب في الاسواق ولا متزي بالفحش ولا قول الخنا اشهد ان لا اله الا الله وانك رسول الله وهذا مالي فاحكم فيه بما اراك الله وكان اليهودي كثير المال. رواه البيهقي في «دلاىل النبوة» اسنادہ موضوع ، رواہ البیھقی فی دلاىل النبوۃ (6 / 280) * فیہ محمد بن محمد بن الاشعث : کذاب ، وضع نسخۃ اھل البیت (انظر لسان المیزان 5 / 409 وغیرہ) و ھذا من وضعہ لانہ تفرد بہ ۔ (ضعيف)

ব্যাখ্যা: হাদীসে বর্ণিত এ ইয়াহুদী ব্যক্তিটি ছিলেন একজন ইয়াহূদী পণ্ডিত। তিনি যুহর, আসর, মাগরিব, ‘ইশা ও ফজরের সালাত মাসজিদে আদায় করেন। অথবা তার কোন স্ত্রীর ঘরে আদায় করেন। তবে মসজিদে সালাত আদায় করার সম্ভাবনা বেশি।
“আমার রব আমাকে কোন জিম্মি অথবা অন্য কারো প্রতি যুলম করতে নিষেধ করেছেন। এখানে জিম্মির কথা আগে আনার কারণ হলো কথোপকথন হচ্ছে তার সাথে। আর কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বড় ব্যাপার হবে ঝগড়ার ব্যাপারটি। এটা কঠিন হবে। কোন মুসলিম তাকে নেকি দিয়ে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। অথবা তার পাপ নিয়েও কেউ সন্তুষ্ট হবে না। যেমন কোন চতুষ্পদ জন্তুর যুলুমের ক্ষেত্রে বিচার হবে। আর তার সাথিরাও কেউ এ ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হবে না। আর না তিনি তাদের কেউ তার পক্ষ থেকে এই ঋণ পরিশোধ করে দিলেও তিনি সন্তুষ্ট হবেন না। কারণ দীন তাকে এ নির্দেশ দেয়নি। কারণ কেউ তার প্রতি এ ইহসান করলে হয়তো তার প্রতিদান কমে যেতে পারে। কারণ মহান আল্লাহ বলেন, “হে নবী! আপনি বলে দিন, দীন প্রচারের জন্য আমি তোমাদের নিকট কোন বিনিময় চাই না”- (সূরা আল আন'আম ৬: ৯০)। আর এ সুন্নাত নবীদের থেকে চলে আসা সুন্নাত। মহান আল্লাহ বলেন, “আমি তোমাদের নিকট এর কোন বিনিময় চাই না, এর বিনিময় কেবল রাব্বল আলামীনের কাছে"- (সূরা আশ শুআরা- ২৬: ১০৯)।
পরিশেষে ইয়াহুদী আল্লাহর রাসূল (সা.) -এর আচরণে মুগ্ধ হয়ে মুসলিম হয়ে যান। তিনি কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৯: চারিত্রিক গুণাবলি ও মর্যাদাসমূহ (كتاب الْفَضَائِل وَالشَّمَائِل)