পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নবীকুল শিরোমণি -এর মর্যাদাসমূহ
৫৭৬১-[২৩] আবূ সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন আমিই হব আদম আলায়হিস সালাম-এর সন্তানদের নেতা, এটা গর্ব নয়। আর সেদিন আমার হাতেই থাকবে ’মাকামে হামদের পতাকা’, এতেও গর্ব নয়। সেদিন আদম আলায়হিস সালাম-সহ সকল নবীগণই আমার পতাকার নিচে এসে একত্রিত হবেন। আর সকলের আগে আমি কবর ফেটে উত্থিত হব, এতেও গর্ব নয়। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَابُ فَضَائِلِ سَيِّدِ الْمُرْسَلِينَ)
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرَ وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ وَلَا فَخْرَ. وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلَّا تَحْتَ لِوَائِي وَأَنَا أَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْأَرْضُ وَلَا فَخْرَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (3148 وقال : حسن) * علی بن زید بن جدعان ضعیف و لاکثر الفاظ الحدیث شواھد صحیحۃ وھی تغنی عن ھذا الحدیث
ব্যাখ্যা: (وَلَا فَخْرَ) “কোন গর্বের বিষয় নয়” অর্থাৎ আমি এ কথা গর্ব করার জন্য বলছি না। বরং আল্লাহ তা'আলার নি'আমাত ও আমার ওপর তার অনুগ্রহ এবং আমাকে যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা প্রকাশের জন্য বলছি। কেউ কেউ বলেন, বাক্যের মর্ম হলো, আমি এ নিয়ে গর্ব করছি না। বরং যিনি আমাকে এই সম্মান দিয়েছেন তাকে নিয়ে গর্ব করছি। বাক্যের অর্থ এটাও হতে পারে যে, এই সরদারীতে আমার কোন গর্ব নেই। আমার গর্ব তাঁর দাসত্বের মাঝে। কেননা দাসত্বই সৌন্দর্যতা লাভ ও অতিরিক্ত নি'আমাত লাভের কারণ।
(وَبِيَدِي لِوَاءُ الْحَمْدِ) “আমারই হাতে থাকবে প্রশংসার পতাকা।” মিরকাতুল মাফাতীহ গ্রন্থকার বলেন, কিয়ামতের ময়দানে বিভিন্ন স্থান থাকবে। ভালো লোক, মন্দ লোক সবাইকে একেকটি স্থানে দাঁড় করানো হবে। সেই স্থানের অনুসৃত ব্যক্তির হাতে একটি ঝাণ্ডা থাকবে যা দেখে বুঝা যাবে তিনি সত্যের আদর্শ ছিলেন, নাকি মন্দের আদর্শ ছিলেন। এ স্থানগুলোর সর্বোচ্চ স্থান হবে প্রশংসার স্থান। আর এই স্থানের ঝাণ্ডা রাসূল (সা.) -এর হাতে থাকবে। নিহায়াহ গ্রন্থে রয়েছে, ঝাণ্ডা কেবল সেনাপতির হাতে থাকে। তাই এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, কিয়ামত দিবসে সকল সৃষ্টির সামনে তার প্রসিদ্ধি লাভ ঝাণ্ডা দ্বারা তার প্রসিদ্ধি বুঝানো হয়েছে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, প্রশংসার ঝাণ্ডা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, সকল সৃষ্টির সামনে প্রসিদ্ধি ও প্রশংসায় তাঁর একক মর্যাদা দেখানো। তবে কিয়ামতের দিন তার প্রশংসার প্রকৃত ঝাণ্ডা থাকতে পারে, যার নাম প্রশংসার ঝাণ্ডা। তূরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ)-এর একই মত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তা'আলার সৎ বান্দাদের যে স্থানগুলো রয়েছে তন্মধ্যে সর্বোচ্চ স্থান প্রশংসার স্থান। অন্যান্য স্থান এর নিচে। আমাদের রাসূল (সা.) যখন রাসূলদের সরদার, দুনিয়া ও আখিরাতে সর্বাধিক প্রশংসাকারী; তাই তাঁরই হাতে প্রশংসার ঝাণ্ডা দেয়া হবে এবং সবাই তার সেই ঝাণ্ডা তলে আশ্রয় নিবে। এদিকে ইঙ্গিত করে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন -
(وَمَا مِنْ نَبِيٍّ يَوْمَئِذٍ آدَمُ فَمَنْ سِوَاهُ إِلَّا تَحْتَ لِوَائِي) “সেদিন সকল নবী এমনকি আদম ও আদম ছাড়া সবাই আমার ঝাণ্ডার নিচে থাকবে। এ কারণে তাঁর নাম (الحمد) শব্দ থেকে উদ্গত। তিনি মুহাম্মাদ এবং আহমদ। কিয়ামত দিবসে তাকে মাকামে মাহমূদে অধিষ্ঠিত করা হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)