পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - গরীবদের ফযীলত ও নবী (সা.) -এর জীবন-যাপন
৫২৪২-[১২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন তোমাদের কেউ এমন ব্যক্তিকে দেখে যাকে মাল-সম্পদে, স্বাস্থ্য-সামর্থ্যে অধিক দেয়া হয়েছে, তখন সে যেন নিজের চাইতে নিম্নমানের ব্যক্তির দিকে তাকায়। (বুখারী ও মুসলিম)
সহীহ মুসলিম-এর এক বর্ণনায় আছে, তিনি (সা.) বলেছেন: তোমরা নিজেদের অপেক্ষা নিম্ন অবস্থার লোকের প্রতি তাকাও। এমন ব্যক্তির দিকে তাকিয়ো না যে তোমাদের চাইতে উচ্চ পর্যায়ের। তাহলে এ পন্থা অবলম্বনই হবে আল্লাহর নি’আমাতকে অবজ্ঞা না করার এক উপযোগী মাধ্যম।
الفصل الاول - (بَابُ فَضْلِ الْفُقَرَاءِ وَمَا كَانَ مِنْ عَيْشِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ)
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلَى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ فِي الْمَالِ وَالْخَلْقِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْهُ» مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ لِمُسْلِمٍ قَالَ: «انْظُرُوا إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَلَا تَنْظُرُوا إِلَى من هُوَ قوقكم فَهُوَ أَجْدَرُ أَنْ لَا تَزْدَرُوا نِعْمَةَ اللَّهِ عَلَيْكُم»
متفق علیہ ، رواہ البخاری (6490) و مسلم (9 ، 8 / 2963)، (7428) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)
ব্যাখ্যা : নিজের সম্পদ, শরীর-স্বাস্থ্য সৌন্দর্য এবং পরিবার-পরিজনের চেয়ে অপরের সম্পদ এবং শরীর-স্বাস্থ্য বা সৌন্দর্য বেশি ও ভালো দেখে তার দিকে মোটেও ভ্রুক্ষেপ করবে না। সম্পদশালী হওয়া, সুস্থ ও সুন্দর ইত্যাদি হওয়া- এ সবগুলো আপেক্ষিক বিষয়, অতএব তোমার চেয়ে বেশি যার আছে তার দিকে না। তাকিয়ে তোমার নীচের দিকে তাকাও। দেখবে সে তোমার চেয়ে কত সমস্যায় নিপতিত। তখন তোমার অল্প কষ্ট ভুলে যাবে।
ইবনু জারীর (রহিমাহুল্লাহ) প্রমুখ বলেন, এ হাদীস কল্যাণের প্রকারসমূহ একত্রকারী। কেননা মানুষের স্বভাব হলো সে যখন দেখে কাউকে দুনিয়ার কল্যাণ দান করা হয়েছে সে তখন নিজের মধ্যে অনুরূপ কল্যাণ কামনা করে। আর নিজের কাছে আল্লাহর দেয়া যে নি'আমাত রয়েছে তাকে সে কম মনে করে থাকে। আর তার নিআমাতের সাথে আরো যুক্ত হয়ে অপরের চেয়ে বেশি কিংবা সমান সমান হোক এটা সে কামনা করে। এটা অধিকাংশ লোকের স্বভাব বা প্রকৃতি। কিন্তু মানুষ যদি তার নীচের দিকে তাকাত তাহলে তার নিজের ওপর আল্লাহর দেয়া নি'আমাতের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ত, ফলে সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করত, আল্লাহর কাছে নত হয়ে ভালো কাজ করত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ; শাবৃহু নাবাবী ১৮ খণ্ড, ৭৭ পৃ., হা, ২৯৬৩; তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৪১৭ পৃ., হা. ২৫১৩; ইবনু মাজাহ ৩য় খণ্ড, ৪৮২ পৃ.)