৫১৩৭

পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ

৫১৩৭-[১] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন শারী’আত বিরোধী কার্যকলাপ হতে দেখে, সেটাকে যেন নিজ হাতে পরিবর্তন করে দেয়। যদি নিজ হাতে সেগুলো পরিবর্তন করার ক্ষমতা না থাকে, তাহলে মুখে নিষেধ করবে। আর যদি মুখে নিষেধ করারও সাধ্য না থাকে, তাহলে অন্তরে সেটা ঘৃণা করবে। এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْأَمْرِ بِالْمَعْرُوْفِ

عَن أبي سعيدٍ الخدريِّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فبقلبه وَذَلِكَ أَضْعَف الْإِيمَان» . رَوَاهُ مُسلم

عن ابي سعيد الخدري عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من راى منكم منكرا فليغيره بيده فان لم يستطع فبلسانه فان لم يستطع فبقلبه وذلك اضعف الايمان» . رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ أَوَّلُ مَنْ بَدَأَ بِالْخُطْبَةِ يَوْمَ الْعِيد কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ ব্যাপারে মতানৈক্য আছে। তবে হাদীসে যার নাম আছে আমিও সেটাই মনে করি। কেউ বলেছেন, ‘উসমান (রাঃ), আবার বলা হয়েছে, ‘উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) শুরু করেছিলেন। তিনি যখন খেয়াল করলেন সালাতের পরে মুসল্লীরা অপেক্ষা করে না তাড়াহুড়া করে চলে যান তখন তিনি সালাতের আগে খুত্ববার ব্যবস্থা করলেন। কেউ বলেছেন, মু‘আবিয়াহ্ (রাঃ); আরাব কেউ বলেছেন, ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ)।

কিন্তু রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার খলীফা এবং সকল আনসারী ফকীহ সাহাবী, তাবি‘ঈ তারা সবাই আগে সালাত আদায় করেছেন ও পরে খুত্ববাহ্ দিয়েছেন, এটাই সাব্যস্ত হয়েছে।

মারওয়ান-এর আগে কেউ করেছেন, এ মর্মে কোন দলীল সাব্যস্ত হয়নি। কাজেই ‘উমার, ‘উসমান এবং মু‘আবিয়াহ্  সম্পর্কে ধারণা সঠিক নয়। (শারহুন নাবাবী ২য় খন্ড, হাঃ ৪৯/৭৮)

(وَذٰلِكَ أَضْعَف الْإِيمَان) ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ মর্যাদা এবং সাওয়াবের দিক থেকে এর পরিমাণ কম। ইমাম মানবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ أَضْعَف الْإِيمَان অর্থ হলো أَضْعَف خصال الْإِيمَان তথা দুর্বল বৈশিষ্ট্যের ঈমান। ঈমান দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইসলাম বা তার প্রভাব অথবা তার ফলাফল।

কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ ধরনের লোক হলো দুর্বল ঈমানদার, কেননা যদি সে শক্তিশালী (তেজোদীপ্ত) ঈমানের লোক হত তাহলে এটুকুতেই থেমে যেত না। কারণ হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, أَفْضَلُ الْجِهَادِ كَلِمَةُ حَقٍّ عِنْدَ سُلْطَانٍ جَائِرٍ ‘‘সর্বোত্তম জিহাদ হলো অত্যাচারী শাসকের নিকট সত্য কথা বলা।’’

ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) শারহু মুসলিমে বলেনঃ ভালো কাজের আদেশ করা আর মন্দ কাজের নিষেধ করার হুকুম হলো ফরযে কিফায়াহ্। কেউ করলে বাকীদের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। আর কেউ না করলে সবাই গুনাহগার হয়। পক্ষান্তরে ‘উলামাগণ বলেছেন, ঐ ব্যক্তির ওপর থেকে সৎকাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধের দায়িত্ব রহিত হবে না যার ওপর শারী‘আতের বিধান অর্পিত হয়েছে। এটা তার জন্য অত্যাবশ্যক। অন্যথায় সে গুনাহগার হবে। (‘আওনূল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩৩২; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২১৭২)

(فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِه...) এ প্রসঙ্গে কতিপয় ‘উলামা মতামত ব্যক্ত করেছেন যে, উল্লেখিত হাদীসের তিনটি আদেশ তিন শ্রেণীর ব্যক্তিদের জন্য। প্রথম আদেশ আমীরের জন্য। দ্বিতীয় আদেশ ‘আলিমদের জন্য এবং তৃতীয় আদেশ সাধারণ সকল মুসলিমদের জন্য। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)