পরিচ্ছেদঃ ১৮. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - আত্মসংযম ও কাজে ধীরস্থিরতা
৫০৬৪-[১২] আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন ’’জ্ঞান’’ সৃষ্টি করলেন, তখন ’’জ্ঞান’’-কে বললেনঃ তুমি দাঁড়াও, তখন জ্ঞান দাঁড়াল। অতঃপর তাকে বললেনঃ পিছনে ফিরো। সে পিছনে ফিরল। অতঃপর তাকে বললেনঃ সামনের দিকে ফিরো। সে ফিরল। অতঃপর বললেনঃ বসো। সে বসল। অতঃপর তাকে বললেনঃ আমি তোমার চেয়ে উত্তম, শ্রেষ্ঠ ও সুন্দর কোন বস্তু সৃষ্টি করিনি। আমি তোমার সাহায্যেই বান্দার নিকট থেকে বন্দেগী গ্রহণ করি, তোমারই দ্বারা বান্দাকে দান করি, তোমারই দ্বারা আমি পরিচিত হই, তোমার দ্বারা অসন্তুষ্টি দেখাই, তোমারই দ্বারা পুণ্য দান করি, আর তোমারই ওপর শাস্তি দেই। কতিপয় ’আলিম এর মধ্যে সমালোচনা করেছেন।[1]
عَنْ
أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الْعَقْلَ قَالَ لَهُ: قُمْ فَقَامَ ثُمَّ قَالَ لَهُ: أدبر ثُمَّ قَالَ لَهُ: أَقْبِلْ فَأَقْبَلَ ثُمَّ قَالَ لَهُ: اقْعُدْ فَقَعَدَ ثُمَّ قَالَ: مَا خَلَقْتُ خَلْقًا هُوَ خَيْرٌ مِنْكَ وَلَا أَفْضَلُ مِنْكَ وَلَا أَحْسَنُ مِنْكَ بِكَ آخُذُ وَبِكَ أُعْطِي وَبِكَ أُعْرَفُ وَبِكَ أُعَاتِبُ وَبِكَ الثَّوَابُ وَعَلَيْكَ العقابُ . وَقد تكلم فِيهِ بعض الْعلمَاء
হাদীসটিকে ইবনুল জাওযী ও ইবনু তায়মিয়াহ্ (রহিমাহুল্লাহ) মাওযূ‘/জাল বলেছেন, আর ‘আকল (জ্ঞান) সম্পর্কে যত হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার কোনটিই সহীহ নয়, বরং ইবনু তায়মিয়াহ্ সবগুলোকেই জাল বলেছেন। আর এ ব্যাপারে ইবনু কইয়িম তাঁর ‘আল মানারুল মুনীফ’ কিতাবের ২৫ পৃঃ তার অনুসরণ করেছেন। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৫৯ পৃঃ।
ব্যাখ্যাঃ (لَمَّا خَلَقَ اللهُ الْعَقْلَ) প্রকাশ্য হাদীস দ্বারা বোঝা যায় যে, عَقْلَ-এরও দেহাবয়ব আছে। যেমন, মহান আল্লাহ জীবন এবং মৃত্যুকে দুম্বার আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন। আগে-পিছে যাওয়া, উঠা-বসা মানুষের জ্ঞানের তারতম্য অনুসারে। এসব গোপন কার্যসমূহ ‘আকল বা জ্ঞান থেকে সৃষ্টি হয়। সম্ভবত ‘ক্বিয়াম ও ক্বুউদ দ্বারা প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্যের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
‘ইকবাল’ দ্বারা কোন বস্তুর প্রতি দৃষ্টি নিবন্ধের অর্থ করা হয়েছে। ইদবার দ্বারা আল্লাহর ইচ্ছার সাথে জড়িত বিষয় থেকে বিমুখ থাকার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ সম্পূর্ণ বাক্যটির দ্বারা এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, عَقْلَ হলো শারী‘আতের বিধান পালনের হেতু। এ কারণে আদেশ-নিষেধ আছে। এটা দ্বারাই সৃষ্টির ‘ইবাদাতের পরিসমাপ্তি হয়। কারণ মহান আল্লাহ ‘ইবাদাতের জন্যই আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
(مَا خَلَقْتُ خَلْقًا هُوَ خَيْرٌ مِنْكَ) অর্থাৎ মানুষের বিবেক-বুদ্ধি এমন এক মূল্যবান রত্ন, যার ভিত্তিতে সম্মানিত ব্যক্তি সম্মানিত হয় আর অসম্মানিত ব্যক্তি অসম্মানিত হয়।
এজন্যই মহান আল্লাহ উল্লেখিত হাদীসে বলেন- ‘‘আমি তোমার চেয়ে উত্তম, শ্রেষ্ঠ ও সুন্দর কোন বস্তু সৃষ্টি করিনি’’। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)