৫০২৭

পরিচ্ছেদঃ ১৭. প্রথম অনুচ্ছেদ - সাক্ষাৎ ত্যাগ, সম্পর্কচ্ছেদ ও দোষান্বেষণে নিষেধাজ্ঞা

৫০২৭-[১] আবূ আইয়ূব আল আনসারী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তির জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তিনদিনের বেশি সময় অপর কোন মুসলিম ভাইকে ত্যাগ করে। তারা কোথাও একে অপরের মুখোমুখি হলে একজন এদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে এবং অপরজন ওদিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের দু’জনের মধ্যে উত্তম সে ব্যক্তি, যে প্রথমে সালাম করে কথাবার্তা আরম্ভ করে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يُنْهٰى عَنْهُ مِنَ التَّهَاجِرُ وَالتَّقَاطُعِ وَاتِّبَاعِ الْعَوْرَاتِ

عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ لِلرَّجُلِ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ يَلْتَقِيَانِ فَيعرض هَذَا ويعرض هذاوخيرهما الَّذِي يبْدَأ بِالسَّلَامِ» . مُتَّفق عَلَيْهِ

عن ابي ايوب الانصاري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا يحل للرجل ان يهجر اخاه فوق ثلاث ليال يلتقيان فيعرض هذا ويعرض هذاوخيرهما الذي يبدا بالسلام» . متفق عليه

ব্যাখ্যাঃ (أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ) এই ভাই দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মুসলিম ভাই। আর এ ভাইয়ের সম্পর্ক আত্মীয়তার সূত্রে ভাই বা রক্ত সম্পর্কের ভাই বা সঙ্গী-সাথী যা ভাই এর চেয়ে ব্যাপক।

‘আল্লামা ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এ ভাই দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইসলামী ভাই তথা মুসলিম ভাই। আর এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, যদি কেউ এ ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ছিন্ন করে তবে তার সাথে তিনদিনের বেশি সময় কথা না বলা জায়িয। তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ওয়াজিব। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(فَوْقَ ثَلَاثِ) এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, তিনদিনের কম সময় ত্যাগ করা (কথা বন্ধ করা) বৈধ আছে। আর এ সময়ে যেন সে নমনীয় হতে পারে। কারণ মানুষের স্বভাব হলো রেগে যাওয়া এবং মন্দ চরিত্রের হওয়া ইত্যাদি। তবে রাগ যতই হোক না কেন তাকে তিনদিনের মধ্যে তা দূর করতে হবে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০৭৭)

(وخيرهما الَّذِىْ يبْدَأ بِالسَّلَامِ) বেশির ভাগ ‘উলামা বলেছেনঃ কেউ যদি তার ভাইকে সালাম দেয় ও সালামের জওয়াব নেয় তবে পরিত্যাগ করা দূর হয়ে যাবে।

ইমাম আহমাদ (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ পরিত্যাগ করা হতে সে অত সময় মুক্ত হবে না যতক্ষণ না সে পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে আসে। তিনি আরো বলেনঃ তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে কথা বন্ধ করা যদি তাকে (সে ভাইকে) কষ্ট দেয় তবে শুধু সালাম দিলে পরিত্যাগকারী الهجرة দূর হবে না। ইবনুল কাসিমও এরূপ বলেছেন।

কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ যখন সে কথা বলা থেকে দূরে থাকবে তখন আমাদের নিকট তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা যাবে না। যদিও সে তাকে সালাম দিক না কেন। অর্থাৎ তার কথাটি ইবনুল কাসিম (রহিমাহুল্লাহ)-এর কথাকে শক্তিশালী করেছে।

ইবনু হাজার ‘আসকালানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ আমি বলছি, তার সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যাপারে মতপার্থক্য আছে। আর তার সাথে কথা বলা ছেড়ে দেয়াটা বুঝা যায় যে, তার মনে তার প্রতি কোন রাগ আছে। সুতরাং তার সাক্ষ্য কবুল হবে না। যদি সে তিনদিনের ভিতরে তার সাথে সালাম বিনিময় করে তবে পরিত্যাগ করাটা চলে যাবে। আর জামহূর ‘উলামা দলীল পেশ করেন, ‘ত্ববারানী’র যায়দ ইবনু ওয়াহ্ব-এর সূত্রে ইবনু মাস্‘ঊদ  হতে একটি মাওকূফ হাদীস। আর তাতে আছে, ورجوعه أن يأتي فيسلم عليه আর তার ফিরে আসা হলো সে এসে তাকে সালাম করবে। (ফাতহুল রাবী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০৭৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)