৫০০৫

পরিচ্ছেদঃ ১৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - আল্লাহ তা‘আলার প্রতি ভালোবাসা এবং আল্লাহ তা‘আলার জন্য বান্দার প্রতি ভালোবাসা

৫০০৫-[৩] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা’আলা কোন বান্দাকে ভালোবাসেন, তখন জিবরীল (আ.)-কে ডেকে বলেন যে, আমি অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসী, তুমিও তাকে ভালোবাসো। রাবী বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ.)-ও তাকে ভালোবাসতে থাকেন এবং আকাশে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা’আলা অমুক ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, তোমরাও তাকে ভালোবাসো। তখন আকাশমণ্ডলীর অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। অতঃপর সে বান্দার জন্য জমিনেও স্বীকৃতি স্থাপন করা হয়। আর যখন আল্লাহ তা’আলা কোন বান্দাকে ঘৃণা করেন, তখন জিবরীল (আ.)-কে ডেকে বলেন যে, আমি অমুক বান্দাকে ঘৃণা করি, তুমিও তাকে ঘৃণা করো। রাবী বলেন, অতঃপর জিবরীল (আ.)-ও তাকে ঘৃণা করেন এবং আকাশে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা’আলা অমুক ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন, তোমরাও তাকে ঘৃণা করো এবং আকাশবাসীরাও তার প্রতি ঘৃণা পোষণ করে। অতঃপর তার জন্য জমিনেও ঘৃণা স্থাপন করা হয়। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْحُبِّ فِى اللهِ وَمِنَ اللهِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَقَالَ: إِنِّي أُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبَّهُ قَالَ: فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي السَّمَاءِ فَيَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلَانًا فَأَحِبُّوهُ فَيُحِبُّهُ أَهْلُ السَّمَاءِ ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الْأَرْضِ. وَإِذَا أَبْغَضَ عَبْدًا دَعَا جِبْرِيلَ فَيَقُولُ: إِنِّي أُبْغِضُ فُلَانًا فَأَبْغِضْهُ. فَيُبْغِضُهُ جِبْرِيلُ ثُمَّ يُنَادِي فِي أَهْلِ السَّمَاءِ: إِنَّ اللَّهَ يُبْغِضُ فَلَانَا فَأَبْغِضُوهُ. قَالَ: فَيُبْغِضُونَهُ. ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْبَغْضَاءُ فِي الْأَرْضِ . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ان الله اذا احب عبدا دعا جبريل فقال: اني احب فلانا فاحبه قال: فيحبه جبريل ثم ينادي في السماء فيقول: ان الله يحب فلانا فاحبوه فيحبه اهل السماء ثم يوضع له القبول في الارض. واذا ابغض عبدا دعا جبريل فيقول: اني ابغض فلانا فابغضه. فيبغضه جبريل ثم ينادي في اهل السماء: ان الله يبغض فلانا فابغضوه. قال: فيبغضونه. ثم يوضع له البغضاء في الارض . رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (إِذَا أَحَبَّ عَبْدًا) ‘‘আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালোবাসেন’’ কোন কোন সনদে এ ভালোবাসার কারণসহ বিবরণ এসেছে এবং এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য তাও এসেছে, যেমন সাওবান  থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, إن العبد ليلتمس مرضاة الله تعالى فلا يزال كذلك অর্থাৎ বান্দা সর্বদা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যস্ত থাকলে আল্লাহ তা‘আলা জিবরীল (আ.)-কে ডাক দিয়ে বলেন, ওহে জিবরীল! আমার অমুক বান্দা আমার সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যস্ত তুমি জানিও দাও আমার রহমত আমার বান্দার অতি নিকটে অবস্থান করছে। ইমাম আহমাদ ও ইমাম ত্ববারানী অত্র হাদীসটিকে বর্ণনা করেছেন। গোলাম সংক্রান্ত অধ্যায়ে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসটিও অনুরূপ।

ولا يزال عبدي يتقرب إلي بالنوافل حتى أحبه অর্থাৎ আমার বান্দা নফল ‘ইবাদাতসমূহের মাধ্যমে আমার নৈকট্য অর্জনে ব্যস্ত থাকলে আমি বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাই।

فينادي جبريل في أهل السماء الخ ‘‘অতঃপর জিবরীলও আসমানবাসীকে ডাক দিয়ে বলেন যে, অমুক ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালোবাসেন।’’ সাওবান (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে اهل السموات السبع তথা সাত আসমানবাসীর কথা আছে।

ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي أَهْلِ الْأَرْضِ ‘‘অতঃপর জমিনে তার গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারিত হয়ে যায়’’ এ প্রসঙ্গে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনুল কারীমে এসেছে, إن الذين آمنوا وعملوا الصالحات سيجعل لهم الرحمن ودا অর্থাৎ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ ‘আমল করে রহমান তাদের জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি করেন। অত্র হাদীসে কবুল দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সকলে তাকে মুহাববাতের চাদরে আঁকড়ে ধরবে, তার দিকে এগিয়ে আসবে, তার প্রতি সন্তুষ্ট হবে। এজন্য বলা হয়ে থাকে যে, মানুষের আন্তরিক ভালোবাসায় সিক্ত হলে এ বিষয়টিই প্রমাণ করে যে আল্লাহ তা‘আলা তাকে ভালোবাসেন। আল্লাহর ভালোবাসার অর্থ হলো আল্লাহ বান্দার কল্যাণ সাধন করেন, আর মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) ভালোবাসার অর্থ হলো তারা এ বান্দার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বান্দাদের ভালোবাসার অর্থ হলো তার প্রতি তাদের এ বিশ্বাস জন্মে যে, তার কাছ থেকে অনেক কল্যাণ পাওয়া যাবে, তার কাছ থেকে কোন অকল্যাণ আসবে না। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৬০১৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)