৪৫৬৬

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৫৬৬-[৫৩] আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাকস্থলী হলো দেহের হাওয (কূপ)। সমস্ত শিরা-উপশিরাগুলো সে হাওযের দিকেই প্রবাহিত হয়। সুতরাং যখন পাকস্থলী ভালো হয়, তখন শিরাগুলোও সারা দেহে স্বাস্থ্যকর উপাদান সরবরাহ করে। আর যখন পাকস্থলী নষ্ট হয়ে যায়, তখন শিরাগুলোও দূষিত উপাদান সরবরাহ করে থাকে।[1]

الْفَصْلُ الثَّالِثُ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمَعِدَةُ حَوْضُ الْبَدَنِ وَالْعُرُوقُ إِلَيْهَا وَارِدَةٌ فَإِذَا صَحَّتِ الْمَعِدَةُ صَدَرَتِ الْعُرُوقُ بِالصِّحَّةِ وَإِذَا فَسَدَتِ الْمَعِدَةُ صَدَرَتِ الْعُرُوقُ بِالسقمِ»

عن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «المعدة حوض البدن والعروق اليها واردة فاذا صحت المعدة صدرت العروق بالصحة واذا فسدت المعدة صدرت العروق بالسقم»

ব্যাখ্যাঃ (وَإِذَا فَسَدَتِ الْمَعِدَةُ صَدَرَتِ الْعُرُوقُ بِالسقمِ) ‘‘আর যখন পাকস্থলী নষ্ট হয়ে যায়, তখন শিরাগুলোও দূষিত উপাদান সরবরাহ করে’’ অর্থাৎ অসুস্থ হয়ে যায় এবং ব্যথা সৃষ্টি হয়।

ইবনুল জাওযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাকস্থলীকে হাওযের সাথে তুলনা করেছেন এবং শরীরকে গাছের সাথে। আর তার দিকে প্রবাহিত শিরাগুলোকে গাছের শিকড়ের সাথে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে, যা হাওয থেকে পানি টেনে ডালপালা ও পাতায় নিয়ে যায়। সুতরাং পানি যদি পরিষ্কার স্বচ্ছ হয়, লবণাক্ত না হয় তবে গাছের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। অন্যথায় গাছ শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। অনুরূপই পাকস্থলির সাথে শরীরের সম্পর্ক। এজন্যই মহান আল্লাহ সুনিপুণ স্রষ্টা মানুষের শরীরে উত্তাপ সৃষ্টি করেছেন যাতে খাবারগুলো হজম হয়ে যায়। অনুরূপভাবে শিরাগুলোকে কলিজার দিকে ধাবিত করে সৃষ্টি করেছেন যাতে করে রক্তসমূহ পরিষ্কার করে দিতে পারে এবং সেই পরিষ্কার রক্ত সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে পারে। খাবার-পানীয় পাকস্থলিতে জমা হয়ে পরিশুদ্ধ হয়ে সমস্ত শরীরের শিরাগুলোতে শক্তি ছড়িয়ে দেয়। অতএব পাকস্থলিতে যদি ভালো খাবার থাকে তবে সমস্ত শরীর পাকস্থলি থেকে ভালো খাবার সংগ্রহ করতে পারে। আর যদি বেশি খানা-পিনা করার কারণে পাকস্থলি নষ্ট হয়ে যায় তবে পেট খারাপ হয়ে যায়, পাতলা পায়খানা হয় ফলে সমস্ত শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে, আর এটিই হলো মহান সর্বজ্ঞ পরাক্রমশালীর নির্ধারিত রীতি। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

অত্র হাদীসটি দ্বারা বাহ্যিকভাবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চিকিৎসার গভীরতার প্রমাণ পাওয়া যায়। বলা হয়ে থাকে যে, ব্যক্তির কথা, কাজ ও শিষ্টাচার তার খাওয়া-পান করা অনুসারে হয়ে থাকে। যদি হারাম ঢুকে থাকে তবে হারাম বের হবে। যদি হালাল সম্মানিত খাবার ঢুকে তবে তাই বের হবে। খাবার যেন কাজের বীজ। আর কাজ হলো উদ্ভিদের মতো যা খাবে, তাই বের হবে। হালাল খেলে হালাল কথা আর হারাম খেলে হারাম কথা।

বলা হয়ে থাকে, كُلُّ إِنَاءٍ يَتَرَشَّحُ بِمَا فِيهِ প্রতিটি পাত্র তাই বের করে, যা তার মধ্যে থাকে। মহান আল্লাহ বলেনঃ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا ‘‘তোমরা পবিত্র খাবার খাও এবং সৎ ‘আমল কর’’- (সূরাহ্ আল মু’মিনূন ২৩ : ৫১)। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ মুনকার (সহীহ হাদীসের বিপরীত)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৩: চিকিৎসা ও ঝাড়-ফুঁক (كتاب الطب والرقى)