পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ
৪৫২৫-[১২] ’আয়িশাহ্ ও রাফি’ ইবনু খদীজ (রাঃ)হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জ্বরের উৎপত্তি জাহান্নামের তাপ হতে। সুতরাং তোমরা পানি দ্বারা তা ঠাণ্ডা করো। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
الْفَصْلُ الْأَوَّلُ
وَعَنْ عَائِشَةَ وَرَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الْحمى من فيج جَهَنَّم فَأَبْرِدُوهَا بِالْمَاءِ»
ব্যাখ্যাঃ জ্বরের ক্ষেত্রে পানি ব্যবহার : ইমাম ইবনু কাইয়িম (রহিমাহুল্লাহ) জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে পানি ঢালার বিষয়ে দু’টি অভিমত পেশ করেছেন। এক. সাধারণ সকল ব্যবহার্য পানি। দুই. যমযমের পানি ব্যবহার। এই অভিমত পেশকারীগণ এ প্রসঙ্গে সহীহুল বুখারীতে সংকলিত আবূ জামরাহ্-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করেছেন। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৭২৬)
কতিপয় ব্যাখ্যাকার বলেনঃ জ্বর জাহান্নামের আগুনের উত্তাপবিশেষ। জাহান্নাম অস্বীকারকারীদের জন্য ভীতিপ্রদর্শক হিসেবে এবং উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য সুসংবাদবাহী হিসেবে দুনিয়াতে এটি পাঠানো হয়েছে। কেননা, উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য তা গুনাহের কাফ্ফারাহ্ স্বরূপ। গ্রীষ্মের উত্তাপ যেমন জাহান্নামের অংশবিশেষ, জ্বরও অনুরূপ। সেজন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ঠাণ্ডা পানি দ্বারা শীতল করতে বলেছেন। ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী (রহিমাহুল্লাহ)-এর মতে, জ্বরের উত্তাপ কমানো কয়েকভাবে হতে পারে, পানি পান, গোসল ও প্রচলিত পন্থায় মাথায় পানি দেয়া। কোন বর্ণনায় আবার যমযমের পানি ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। কতিপয় ব্যাখ্যাকারের মতে, জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পানি পান সবচেয়ে বেশী উপকারী। কেননা পানি পানের মাধ্যমে শরীরের সর্বত্র তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। ইমাম জাওহারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ কেউ কেউ হাদীসটির নির্দেশনা ভুল বুঝার কারণে পানিতে রোগীকে ডুবানোর কথা বলেছেন। তবে ব্যাপারটি তেমন নয়। পূর্বে যা বর্ণিত হয়েছে তাই প্রকৃত নিয়ম।
কোন কোন হাদীসগ্রন্থে জ্বরকে মৃত্যুদূত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যেমন ইমাম বায়হাক্বী (রহিমাহুল্লাহ) হাসান হতে মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন যে, জ্বর হচ্ছে মৃত্যুদূত। আর পৃথিবীতে মু’মিনের জন্য তা কারাগার স্বরূপ, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এতে প্রবেশ করান এবং মুক্ত করে দেন, অতএব একে পানি দ্বারা পরিবর্তন করে দাও। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)