পরিচ্ছেদঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জিয্ইয়াহ্-এর বর্ণনা
৪০৪০-[৬] ’উকবা ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রসূল! (যুদ্ধাভিযানে) আমরা কখনো কখনো এমন জনপদের উপর দিয়ে যাই যারা আমাদের আতিথেয়তা করে না, এমনকি তাদের ওপর আমাদের জন্য যতটুকু সহানুভূতি করা কর্তব্য তারা তাও পালনে অনীহা করে। আর আমরাও জোরপূর্বক তাদের নিকট হতে কিছু আদায় করি না। উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (তোমাদের সংকটাপন্ন অবস্থায়) যদি তারা স্বেচ্ছায় আদায় না করে, তবে তোমরা (প্রয়োজন অনুপাতে) জোরপূর্বক আদায় করতে পার। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نَمَرُّ بِقَوْمٍ فَلَا هُمْ يُضَيِّفُونَا وَلَا هُمْ يُؤَدُّونَ مَا لنا عَلَيْهِم منَ الحقِّ وَلَا نَحْنُ نَأْخُذُ مِنْهُمْ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ أَبَوْا إِلَّا أنْ تأخُذوا كُرهاً فَخُذُوا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: (إِنْ أَبَوْا إِلَّا أنْ تَأخُذُوْا كُرْهًا فَخُذُوْا) ‘‘বাধ্য না করলে যদি তারা তোমাদের প্রাপ্য দিতে অস্বীকার করে তাহলে তাদেরকে বাধ্য করো।’’ অর্থাৎ তোমাদের যে অধিকার রয়েছে তাদের ওপর, যেমন : মেহমানদারী করা, নগদে অথবা বাকীতে পণ্য বিক্রয় করা তারা যদি এর কোনটাই না করে তাহলে বলপূর্বক তোমরা তাদের কাছ থেকে অধিকার আদায় করে নিবে। ইবনুল মালিক উল্লেখ করেছেন যে, মুহীউস্ সুন্নাহ্’য় বলা হয়ে থাকে যে, মুসলিমদের এই পথ অতিক্রম ছিল যিম্মিদের নিকট দিয়ে। আর তাদের ওপর শর্ত ছিল যে, কোনো মুসলিম বাহিনী তাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তাদের কর্তব্য ঐ মুসলিম বাহিনীর মেহমানদারী করা। যদি কারো ওপর এরূপ শর্ত না থাকে এবং মুসলিম বাহিনীও কারো সাহায্য নিতে বাধ্য না হয় তাহলে অন্যের মাল বলপূর্বক নেয়া অবৈধ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
খত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে যখন বায়তুল মাল ছিল না তখন মুসলিম বাহিনীকে সহযোগিতা করা এবং তাদের মেহমানদারী করা সকলের কর্তব্য ছিল। অতঃপর যখন বায়তুল মাল প্রতিষ্ঠিত হয় তখন আর মুসলিমদের মালের মধ্যে অন্যের কোনো অধিকার নেই। ইবনু বাত্ত্বল বলেনঃ ইসলামের প্রথম যুগে এ ধরনের সহযোগিতা বাধ্যতামূলক ছিল। পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে গিয়েছে। ইমাম নববী বলেনঃ ইমাম আহমাদ এবং লায়স অত্র হাদীসের বাহ্যিক অর্থই গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ মেহমানের মেহমানদারী করা বাড়ীওয়ালার কর্তব্য। স্বেচ্ছায় মেহমানদারী না করলে মেহমান বলপূর্বক তার হক আদায় করে নিবে।
জুমহূর ‘আলিমগণ এ হাদীসের বাহ্যিক অর্থ গ্রহণ না করে তারা এর ব্যাখ্যা করেছেন বিভিন্নভাবে :
১. মুসলিম বাহিনী যদি কারো সহযোগিতা নিতে বাধ্য হয় তাহলে তাদের মেহমানদারী করা ওয়াজিব, নচেৎ নয়।
২. হাদীসের অর্থ হলো তারা যদি তোমাদের মেহমানদারী না করে তাহলে তাদের সম্মানহানীমূলক কথা অন্যের কাছে বলতে পারো।
৩. এটা ইসলামের প্রাথমিক যুগের অবস্থা, পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে গেছে।
(তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৮৯)