৩৮৫৮

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮৫৮-[৭১] ফাযালাহ্ ইবনু ’উবায়দ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) থেকে জেনেছি। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, শাহাদাত বরণ চারভাবে হয়ঃ প্রথমতঃ প্রকৃত মু’মিন ব্যক্তি তেজোদীপ্ত ঈমান নিয়ে সত্যনিষ্ঠার সাথে শত্রুর মুকাবিলায় লড়াই করতে করতে শহীদ হয়ে গেল এবং তিনি এমন মর্যাদার উচ্চাসনের অধিকারী হবে যে, কিয়ামতের দিন যার প্রতি মানুষ এমনভাবে মাথা তুলে তাকাবে যে, এটা বলতে বলতে তিনি এত উঁচু মাথা উঠালেন যাতে মাথার টুপি নীচে পড়ে গেল। তিনি (ফাযালাহ্) এ কথা দ্বারা ’উমার -এর টুপি নাকি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর টুপি পড়ে যাবার উল্লেখ করেছেন তা আমার জানা নেই।

দ্বিতীয়তঃ এমন পূর্ণ মু’মিন ব্যক্তি যে শত্রুর সম্মুখীন হয়ে দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করল বটে, কিন্তু বীরত্বের অভাবে বা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে শত্রুর মুকাবিলায় তার শরীরে কাঁটা গাছের কাঁটা বিঁধে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় হঠাৎ এক ব্যক্তির তীরের আঘাতে সে মৃত্যুবরণ করল, এ ব্যক্তিই দ্বিতীয় শ্রেণীর। তৃতীয়তঃ এমন মু’মিন ব্যক্তি, যে জীবনে পাপ-পুণ্যের সাথে সংমিশ্রণ ঘটিয়েছে, অতঃপর পরে যথার্থ বীরের ন্যায় জিহাদে অংশগ্রহণ করেছে এবং পরিশেষে স্বীয় ঈমানের বলে সত্যনিষ্ঠার শহীদ হয়েছে, এ ব্যক্তি হলো তৃতীয় শ্রেণীর। চতুর্থতঃ ঐ মু’মিন ব্যক্তি, যে জীবনে অনেক অনাচার-অরাজকতা করেছে, অতঃপর সে জিহাদে অংশগ্রহণ করে আল্লাহ তা’আলার সাথে কৃত অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করে, এ ব্যক্তি হলো চতুর্থ পর্যায়ের শহীদ। (তিরমিযী; তিনি বলেন, হাদীসটি হাসান গরীব)[1]

اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ

وَعَن فَضالةَ بنِ عُبيد قَالَ: سمِعْتُ عمَرَ بن الْخطاب يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: الشُّهَدَاءُ أَرْبَعَةٌ: رَجُلٌ مُؤْمِنٌ جَيِّدُ الْإِيمَانِ لَقِيَ الْعَدُوَّ فَصَدَقَ اللَّهَ حَتَّى قُتِلَ فَذَلِكَ الَّذِي يَرْفَعُ النَّاسُ إِلَيْهِ أَعْيُنَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ هَكَذَا وَرَفَعَ رَأْسَهُ حَتَّى سَقَطَتْ قَلَنْسُوَتُهُ فَمَا أَدْرِي أَقَلَنْسُوَةَ عُمَرَ أَرَادَ أَمْ قَلَنْسُوَةَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ: «وَرَجُلٌ مُؤْمِنٌ جَيِّدُ الْإِيمَانِ لَقِيَ الْعَدُوَّ كَأَنَّمَا ضَرَبَ جِلْدَهُ بِشَوْكٍ طَلْحٍ مِنَ الْجُبْنِ أَتَاهُ سَهْمٌ غَرْبٌ فَقَتَلَهُ فَهُوَ فِي الدَّرَجَةِ الثَّانِيَةِ وَرَجُلٌ مُؤْمِنٌ خَلَطَ عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا لَقِيَ الْعَدُوَّ فَصَدَقَ اللَّهَ حَتَّى قُتِلَ فَذَلِكَ فِي الدَّرَجَةِ الثَّالِثَةِ وَرَجُلٌ مُؤْمِنٌ أَسْرَفَ عَلَى نَفْسِهِ لَقِيَ الْعَدُوَّ فَصَدَقَ اللَّهَ حَتَّى قُتِلَ فَذَاكَ فِي الدَّرَجَةِ الرَّابِعَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ

وعن فضالة بن عبيد قال: سمعت عمر بن الخطاب يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: الشهداء اربعة: رجل مومن جيد الايمان لقي العدو فصدق الله حتى قتل فذلك الذي يرفع الناس اليه اعينهم يوم القيامة هكذا ورفع راسه حتى سقطت قلنسوته فما ادري اقلنسوة عمر اراد ام قلنسوة النبي صلى الله عليه وسلم؟ قال: «ورجل مومن جيد الايمان لقي العدو كانما ضرب جلده بشوك طلح من الجبن اتاه سهم غرب فقتله فهو في الدرجة الثانية ورجل مومن خلط عملا صالحا واخر سيىا لقي العدو فصدق الله حتى قتل فذلك في الدرجة الثالثة ورجل مومن اسرف على نفسه لقي العدو فصدق الله حتى قتل فذاك في الدرجة الرابعة» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن غريب

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে ঈমান ও ‘আমলের ভিত্তিতে শহীদদেরকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তবে তাদের সকলেই জান্নাতী; যদিও জান্নাতে তাদের স্তর বা মর্যাদার ব্যবধান থাকবে।

(الشُّهَدَاءُ أَرْبَعَةٌ) এ কথার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘‘শহীদগণ চার প্রকারের বা চার শ্রণীর’’ এটিও উদ্দেশ্য হতে পারে, আবার চারজন নির্দিষ্ট শহীদও উদ্দেশ্য হতে পারে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ৩৮৫৮)

হাদীসে বারংবার বর্ণিত শব্দ (فَصَدَقَ اللّٰهَ) এর অর্থ হলো আল্লাহর সাথে তার যে বীরত্বের অঙ্গীকার ছিল তা পূর্ণ করেছে, অর্থাৎ কাপুরুষতা প্রদর্শন করেনি। সুতরাং সে মহান আল্লাহর সাথে যে শাহাদাতের অঙ্গীকার করেছিল তা পূর্ণ করেছে।

(حَتّٰى قُتِلَ) অর্থাৎ- সে শাহাদাত বরণ করে। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ মহান আল্লাহ তা‘আলা মুজাহিদদের গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন যে, তারা সাওয়াবের আশায় ধৈর্য সহকারে যুদ্ধ করবে। সুতরাং হাদীসে উল্লেখিত ব্যক্তি ধৈর্য সহকারে সাওয়াবের প্রত্যাশী হয়ে আমরণ যুদ্ধ করে আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে স্বীয় কর্মের মাধ্যমে পূর্ণ করেছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

এ হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, শক্তিশালী ও সাহসী মু’মিন আল্লাহর নিকট দুর্বল ও কাপুরুষ মু’মিনের তুলনায় বেশী প্রিয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৪৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৯: জিহাদ (كتاب الجهاد)