পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৩৮৪৪-[৫৭] ইয়া’লা ইবনু উমাইয়্যাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলের উদ্দেশে (তাবূকের) যুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিলেন। তখন আমি বয়োবৃদ্ধ, আর আমার দেখাশোনা করার মতো একজন গোলামও ছিল না। সুতরাং আমি একজন খাদিম সংগ্রহ করলাম, যে আমার খিদমাতের জন্য যথেষ্ট হয়। অতঃপর আমি একজনকে পেয়ে গেলাম, যাকে তিন দীনার (স্বর্ণমুদ্রার) পারিশ্রমিকের বিনিময়ে নির্ধারণ করলাম। অতঃপর যখন গনীমাতের মাল আসলো তখন আমি তার একাংশ প্রদানের ইচ্ছা করলাম (কিন্তু দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে) আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে এতদসম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তদুত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এ যুদ্ধে অংশগ্রহণের ফলে ঐ ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে নির্দিষ্ট (উল্লেখিত) দীনার ছাড়া আর কোনো কিছু প্রাপ্তির অধিকার রাখে না। (আবূ দাঊদ)[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِىْ
وَعَن يَعْلى بن أُميَّةَ قَالَ: أَذِنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بالغزو وَأَن شَيْخٌ كَبِيرٌ لَيْسَ لِي خَادِمٌ فَالْتَمَسْتُ أَجِيرًا يَكْفِينِي فَوَجَدْتُ رَجُلًا سَمَّيْتُ لَهُ ثَلَاثَةَ دَنَانِيرَ فَلَمَّا حَضَرَتْ غَنِيمَةٌ أَرَدْتُ أَنْ أُجْرِيَ لَهُ سَهْمَهُ فَجِئْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَتْ لَهُ فَقَالَ: «مَا أَجِدُ لَهُ فِي غَزْوَتِهِ هَذِهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ إِلَّا دَنَانِيرَهُ الَّتِي تسمى» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আলোচনাধীন হাদীসটিতে পূর্বোল্লিখিত হাদীসের বিষয়বস্তু আরো পরিষ্কারভাবে বর্ণিত হয়েছে। এ হাদীসের স্পষ্ট বক্তব্য হলো, যে ব্যক্তি পার্থিব কোনো প্রতিদানের জন্য বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে জিহাদ করবে, সে তার এই জিহাদের কোনো প্রতিদান পরকালে পাবে না।
হাদীসের বাণী (شَيْخٌ كَبِيرٌ لَيْسَ لِىْ خَادِمٌ) এর ভাবার্থ হলো, আমি খুবই বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি ফলে জিহাদে অংশগ্রহণ করার মতো ক্ষমতা নেই এবং আমার এমন কোনো খাদিমও নেই যে, আমাকে জিহাদের ময়দানে সাহায্য করবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
আর উপরোল্লিখিত কারণে উক্ত সাহাবী একজন শ্রমিক খোঁজ করল, যে টাকার বিনিময়ে তার পক্ষ থেকে ময়দানে যুদ্ধ করবে। পরবর্তীতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ ঘটনা বলার পর তিনি জানিয়ে দিলেন যে, ঐ শ্রমিক উল্লেখিত পার্থিক মজুরী বা পারিশ্রমিক ছাড়া পরকালীন কোনো প্রতিদান পাবে না।
শারহেস্ সুন্নাহ্ গ্রন্থে এ ব্যাপারে একটি মতভেদপূর্ণ মাসআলাহ্ উল্লেখ করা হয়েছে। সেটি হলো, কোনো শ্রমিক যুদ্ধের ময়দানে কাজ করলে তার কাজের বিনিময়ে এবং পশু সংরক্ষণ করার বিনিময়ে যুদ্ধলব্ধ গনীমাতের মাল থেকে কোনো অংশ পাবে কিনা?
ইমাম শাফি‘ঈ, ইসহক ও আওযা‘ঈসহ আরো কতক ‘উলামায়ে কিরামের মতে, সে যুদ্ধ করুক বা না করুক গনীমাতের মাল থেকে সে কোনো অংশ পাবে না। কারণ সে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এ কাজ করেছে আর সে তো পারিশ্রমিক পেয়েই যাবে। ইমাম মালিক ও আহমাদ বিন হাম্বল বলেনঃ সরাসরি যুদ্ধ না করলেও মুজাহিদদের সাথে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত থাকার কারণে সে গনীমাতের অংশ পাবে।
আবার কারো কারো মতে, গনীমাতের অংশ এবং পারিশ্রমিক উভয়টির যে কোনো একটি নেয়ার তার ইখতিয়ার থাকবে, সে যে কোনো একটি গ্রহণ করতে পারবে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ২৫২৪)