৩৩২৩

পরিচ্ছেদঃ ১৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - লি‘আন

৩৩২৩-[২০] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একরাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘর হতে নিঃশব্দে বের হয়ে গেলেন। এতে আমার ব্যথাতুর মনে ক্ষোভের উদ্রেক করে। পরক্ষণেই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে এসে আমাকে বিমর্ষ ভাব দেখে জিজ্ঞেস করলেন, হে ’আয়িশাহ্! কি হয়েছে তোমার? তুমি কি ঈর্ষান্বিত হয়েছ? আমি বললাম, আপনার মতো মানুষের প্রতি (সাহচর্য হতে বঞ্চিত হয়ে) আমার মতো নারী কি করে ঈর্ষান্বিত না হয়ে থাকতে পারে? এটা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমাকে শায়ত্বন প্ররোচিত করেছে। আমি (বিস্ময়াভিভূত হয়ে) জিজ্ঞেস করলাম- হে আল্লাহর রসূল! আমার সাথেও কি শায়ত্বন থাকতে পারে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনার নিকটও শায়ত্বন আসতে পারে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ, তবে তার বিরুদ্ধে আল্লাহ আমাকে সাহায্য করায় আমি (তার ওয়াস্ওয়াসাহ্ হতে) নিরাপদপ্রাপ্ত হই। (মুসলিম)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ مِنْ عِنْدِهَا لَيْلًا قَالَتْ: فَغِرْتُ عَلَيْهِ فَجَاءَ فَرَأَى مَا أَصْنَعُ فَقَالَ: «مَا لَكِ يَا عَائِشَةُ أَغِرْتِ؟» فَقُلْتُ: وَمَا لِي؟ لَا يَغَارُ مِثْلِي عَلَى مِثْلِكَ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقَدْ جَاءَكِ شَيْطَانُكِ» قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمْعِي شَيْطَانٌ؟ قَالَ: «نَعَمْ» قُلْتُ: وَمَعَكَ يَا رَسُولَ الله؟ قَالَ: «نعم وَلَكِن أعانني علَيهِ حَتَّى أسلَمَ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عاىشة: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم خرج من عندها ليلا قالت: فغرت عليه فجاء فراى ما اصنع فقال: «ما لك يا عاىشة اغرت؟» فقلت: وما لي؟ لا يغار مثلي على مثلك؟ فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لقد جاءك شيطانك» قالت: يا رسول الله امعي شيطان؟ قال: «نعم» قلت: ومعك يا رسول الله؟ قال: «نعم ولكن اعانني عليه حتى اسلم» . رواه مسلم

ব্যাখ্যা: (لَقَدْ جَاءَكِ شَيْطَانُكِ) ‘‘নিশ্চয় তোমার কাছে তোমার শায়ত্বন এসেছে।’’ এ কথা বলার কারণ হলো, এখানে গাইরতের কোনো কারণ নেই। বৈধ কাজের উপর গাইরত বা আত্মমর্যাদা আল্লাহ তা‘আলার পছন্দ নয় বলে আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি। এ কারণেই হয়ত রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ্ -কে এ কথা বলেছেন। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর মনে রসূলের ওপর সন্দেহ থেকে গাইরত সৃষ্টি হয়েছে এমন কল্পনার সুযোগ নেই। বরং রসূলের জন্য তার অতিরিক্ত ভালোবাসাই এই গাইরতের কারণ। তাই তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, (لَا يَغَارُ مِثْلِىْ عَلٰى مِثْلِكَ؟) অর্থাৎ আমার মতো মানুষ আপনার মতো ব্যক্তিত্বের ওপর গাইরত করবে না কেন? তথাপি যেহেতু এখানে গাইরত ভিত্তিহীন তাই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছেন।

(حَتّٰى أسلَمَ) সিগাটি মুযারে‘ মুতাকাল্লিম। حتى হরফের কারণে সিগার শেষের ‘মীম’ হরফে যবর হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার সাহায্যের কারণে আমি শায়ত্বনের ওয়াস্ওয়াসা বা কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত থাকি। অথবা সিগাটি মাযির এবং সর্বনাম শায়ত্বনের দিকে প্রত্যাবর্তিত। মাযির সিগা হিসেবে ‘উলামাগণ দু’টি অর্থ করে থাকেন। أسلم অর্থ استسلم অর্থাৎ সে আমার অনুগত হয়ে গেছে, ফলে আমাকে কুমন্ত্রণা দেয় না। কেউ কেউ বলেন, অর্থ হলো সে মুসলিম মু’মিন হয়ে গেছে। বাহ্যিক অর্থ এটাই। আল্লাহ অধিক ভালো জানেন।

কাযী ‘ইয়ায বলেনঃ জেনে রাখো, উম্মাত এ কথার উপর একমত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শায়ত্বনের সব ধরনের কুমন্ত্রণা থেকে সংরক্ষিত ও মুক্ত। শরীর, অন্তর, যবান কোথায়ও শায়ত্বন তাকে কুমন্ত্রণা দিতে পারে না। (শারহে মুসলিম ১৭/১৮ খন্ড, হাঃ ২৮১৫; মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৩: বিবাহ (كتاب النكاح)