২৮৭০

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - নিষিদ্ধ বস্তু ক্রয়-বিক্রয়

২৮৭০-[৩৭] উক্ত রাবী (’আমর ইবনু শু’আয়ব) হতে বর্ণিত। তিনি তাঁর পিতার মাধ্যমে তার দাদা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঋণ ও ক্রয়-বিক্রয় একসাথে জায়িয নয়। বিক্রয়ের সাথে দু’টি শর্তারোপ করাও জায়িয নয়। যে দ্রব্যে ঝুঁকির সম্ভাবনা (জিম্মাদারী) নেই সেই দ্রব্য হতে লভ্যাংশের অধিকার হাসিল হবে না। আর যে দ্রব্য তোমার আয়ত্তে নেই, তা বিক্রি করাও জায়িয নয়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী; ইমাম তিরমিযী (রহঃ) বলেছেন, হাদীসটি সহীহ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَحِلُّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ وَلَا شَرْطَانِ فِي بَيْعٍ وَلَا رِبْحُ مَا لَمْ يضمن وَلَا بيع مَا لَيْسَ عِنْدَكَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا صَحِيح

وعنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا يحل سلف وبيع ولا شرطان في بيع ولا ربح ما لم يضمن ولا بيع ما ليس عندك» . رواه الترمذي وابو داود والنساىي وقال الترمذي: هذا صحيح

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসের বাহ্যিক দিক বিচারে কতিপয় ‘উলামাগণ বলেনঃ ক্রয়-বিক্রয়ে একটি শর্তারোপ করা হলে তা সঠিক হবে আর দুই বা ততোধিক শর্তারোপ করা হলে তা বিশুদ্ধ হবে না। যেমন এটা বলা যে, আমি আমার (দোকানের) কাপড় তোমার কাছে বিক্রি করব এই শর্তে যে, তা আমি সেলাই করব, অর্থাৎ মজুরীর বিনিময়ে তা বানিয়ে দেব, এটা বিশুদ্ধ হবে। তবে এমনটি বলা বিশুদ্ধ নয় যে, আমি এটা কম করে দেব ও এর সেলাই আমি করব। তবে অধিকাংশ ‘উলামাগণের বক্তব্য হলোঃ এক শর্ত কিংবা দুই শর্তের মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। আর তারা এ মর্মে একমত হয়েছেন যে, যে ধরনের ক্রয়-বিক্রয়ে দু’টি শর্ত রয়েছে, সেটি বিশুদ্ধ নয়।

(وَلَا رِبْحُ مَا لَمْ يَضَمْنَ) অর্থাৎ মালিকানা ছাড়া কোনো দ্রব্যের লাভ গ্রহণ করা জায়িয নেই। যেমন কোনো দ্রব্য ক্রয় করে তা বিক্রেতার কাছে থেকে হস্তগত করার পূর্বেই অন্যের কাছে বিক্রি করা, এটা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং এর লাভ গ্রহণ করাও জায়িয নেই। কারণ বিক্রিত পণ্য প্রথম বিক্রেতার হস্তগত রয়েছে। এটি হস্তগত না হওয়ার কারণে ক্রেতার জিম্মায় নেই।

ইবনুল মুনযির (রহঃ) বলেন যে, সকল সালাফগণ এ মর্মে একমত রয়েছে যে, ঋণ গ্রহীতার ওপরে যদি বর্ধিত অর্থ কিংবা হাদিয়ার শর্ত দেয়া হয়, তবে বর্ধিত অর্থ বা হাদিয়া গ্রহণ করাটা সুদ বলে গণ্য হবে। ইবনু মাস্‘ঊদ, উবাই বিন কা‘ব এবং ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, তারা সকলেই এমন ঋণ লেন-দেন হতে নিষেধ করেছেন যাতে মুনাফা চলমান থাকে।

ইবনু সীরীন (রহঃ) হতে বর্ণিত, ‘উমার উবাই বিন কা‘ব-কে দশ হাজার দিরহাম ঋণ দিলেন। অতঃপর উবাই বিন কা‘ব (রাঃ)-এর পক্ষ হতে তার নিজ ভূমিতে উৎপাদিত ফল ‘উমার (রাঃ)-কে হাদিয়া দেয়া হলো। ‘উমার তা গ্রহণ না করে ফিরে দিলেন। অতঃপর উবাই বিন কা‘ব তাঁর কাছে এসে বললেন, মদীনাবাসী এটা জানে যে, আমার ফলের উৎপাদন অনেক ভালো হয়েছে। এটার আমার কোনো দরকার ছিল না, কেন আপনি এটা ফেরত দিলেন? এরপর তাঁকে হাদিয়া দেয়া হলো এবং তিনি তা গ্রহণ করলেন। এখানে উবাই বিন কা‘ব ঋণের কারণে হাদিয়া দিয়েছেন কিনা, এটা অস্পষ্ট থাকায় ‘উমার তা গ্রহণ না করে ফিরে দিলেন। যখন তিনি নিশ্চিত হলেন এটা ঋণের কারণে নয়, তখন তিনি তা গ্রহণ করলেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫০১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)