৩৮৫১

পরিচ্ছেদঃ দাজ্জাল ও তার পরিচয়

(৩৮৫১) নাওয়াস ইবনে সামআন (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তাতে তিনি একবার নিম্ন স্বরে এবং একবার উচ্চ স্বরে বাক ভঙ্গিমা অবলম্বন করলেন। শেষ পর্যন্ত আমরা (প্রভাবিত হয়ে) মনে মনে ভাবলাম যে, সে যেন সামনের এই খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে। তারপর আমরা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম, তখন তিনি আমাদের উদ্বিগ্নতা দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কী হয়েছে? আমরা বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! আপনি আজ সকালে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে এমন নিম্ন ও উচ্চ কণ্ঠে বর্ণনা করলেন, যার ফলে আমরা ধারণা করে বসি যে, সে যেন খেজুর বাগানের মধ্যেই রয়েছে।’

তিনি বললেন, ’’দাজ্জাল ছাড়া তোমাদের ব্যাপারে অন্যান্য জিনিসকে আমার আরো বেশী ভয় হয়। আমি তোমাদের মাঝে থাকাকালে দাজ্জাল যদি আত্মপ্রকাশ করে, তাহলে আমি স্বয়ং তোমাদের পক্ষ থেকে তার প্রতিরোধ করব। আর যদি তার আত্মপ্রকাশ হয় এবং আমি তোমাদের মাঝে না থাকি, তাহলে (তোমরা) প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ আত্মরক্ষা করবে। আর আল্লাহ স্বয়ং প্রতিটি মুসলিমের জন্য (আমার) প্রতিনিধিত্ব করবেন।

সে দাজ্জাল নব-যুবক হবে, তার মাথার কেশরাশি হবে খুব বেশি কোঁচকানো। তার একটি চোখ (আঙ্গুরের ন্যায়) ফোলা থাকবে। যেন সে আব্দুল উযযা ইবনে ক্বাত্বানের মত দেখতে হবে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ তাকে পাবে, সে যেন তার সামনে সূরা কাহ্ফের শুরুর (দশ পর্যন্ত) আয়াতগুলি পড়ে। সে শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী স্থানে আবির্ভূত হবে। আর তার ডাইনে-বামে (এদিকে ওদিকে) ফিতনা ছড়াবে। হে আল্লাহর বান্দারা। (ঐ সময়) তোমরা অবিচল থাকবে।’’

আমরা বললাম, ’পৃথিবীতে তার অবস্থান কতদিন থাকবে?’ তিনি বললেন, চল্লিশদিন পর্যন্ত। আর তার একটি দিন এক বছরের সমান দীর্ঘ হবে। একটি দিন হবে এক মাসের সমান লম্বা। একটা দিন এক সপ্তাহের সমান হবে এবং বাকি দিনগুলি প্রায় তোমাদের দিনগুলির সম পরিমাণ হবে।

আমরা বললাম, ’হে আল্লাহর রসূল! যেদিনটি এক বছরের সমান লম্বা হবে, তাতে আমাদের একদিনের (পাঁচ ওয়াক্তের) নামাযই কি যথেষ্ট হবে?’ তিনি বললেন, তোমরা (দিন রাতের ২৪ ঘন্টা হিসাবে) অনুমান ক’রে নামায আদায় করতে থাকবে।

আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ভূপৃষ্ঠে তার দ্রুত গতির অবস্থা কিরূপ হবে? তিনি বললেন, তীব্র বায়ু তাড়িত মেঘের ন্যায় (দ্রুত বেগে ভ্রমণ করে অশান্তি ও বিপর্যয় ছড়াবে।) সুতরাং সে কিছু লোকের নিকট আসবে ও তাদেরকে তার দিকে আহ্বান জানাবে এবং তারা তার প্রতি ঈমান আনবে ও তার আদেশ পালন করবে। সে আকাশকে বৃষ্টি বর্ষণ করতে আদেশ করবে, আকাশ আদেশত্রুমে বৃষ্টি বর্ষণ করবে। আর যমীনকে (গাছ-পালা) উদ্গত করার নির্দেশ দেবে। যমীন তার নির্দেশত্রুমে তাই উদ্গত করবে। সুতরাং (সে সব গাছ-পালা ভক্ষণ ক’রে) সন্ধ্যায় তাদের গবাদি পশুদের কুঁজ (ও ঝুঁটি) অধিক উঁচু হবে ও তাদের পালানে অধিক পরিমাণে দুধ ভরে থাকবে। উদর পূর্ণ আহার জনিত তাদের পেট টান হয়ে থাকবে। অতঃপর দাজ্জাল (অন্য) লোকের নিকট যাবে ও তার দিকে (আসার জন্য) তাদেরকে আহ্বান জানাবে। তারা কিন্তু তার ডাকে সাড়া দেবে না। ফলে সে তাদের নিকট থেকে ফিরে যাবে।

সে সময় তারা চরম দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত হয়ে পড়বে ও সর্বস্বান্ত হবে। তারপর সে কোন প্রাচীন ধ্বংসস্তূপের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় সেটাকে সম্বোধন ক’রে বলবে, ’তুই তোর গচ্ছিত রত্নভাণ্ডার বের ক’রে দে।’ তখন সেখানকার গুপ্ত রত্নভাণ্ডার মৌমাছিদের নিজ রাণী মৌমাছির অনুসরণ করার মতো (মাটি থেকে বেরিয়ে) তার পিছন ধরবে। তারপর এক পূর্ণ যুবককে ডেকে তাকে অস্ত্রাঘাতে দ্বিখণ্ডিত ক’রে তীর নিক্ষেপের লক্ষ্যমাত্রার দূরত্বে নিক্ষেপ ক’রে দেবে। তারপর তাকে ডাক দেবে। আর সে উজ্জ্বল সহাস্যবদনে তার দিকে (অক্ষত শরীরে) এগিয়ে আসবে।

দাজ্জাল এরূপ কর্ম-কান্ডে মগ্ন থাকবে। ইত্যবসরে মহান আল্লাহ তাআলা মসীহ বিন মারয়্যাম আলাইহিস সালামকে পৃথিবীতে পাঠাবেন। তিনি দামেস্কের পূর্বে অবস্থিত শ্বেত মিনারের নিকট অর্স ও জাফরান মিশ্রিত রঙের দুই বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় দু’জন ফিরিশতার ডানাতে হাত রেখে অবতরণ করবেন। তিনি যখন মাথা নীচু করবেন, তখন মাথা থেকে বিন্দু বিন্দু পানি ঝরবে এবং যখন মাথা উঁচু করবেন, তখনও মোতির আকারে তা গড়িয়ে পড়বে। যে কাফেরই তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসের নাগালে আসবে, সে সঙ্গে সঙ্গে প্রাণ হারাবে। তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস তাঁর দৃষ্টি যত দূর যাবে, তত দূর পৌঁছবে। অতঃপর তিনি দাজ্জালের সন্ধান চালাবেন। শেষ পর্যন্ত (জেরুজালেমের) ’লুদ’ প্রবেশ দ্বারে তাকে ধরে ফেলবেন এবং অনতিবিলম্বে তাকে হত্যা ক’রে দেবেন।

তারপর ঈসা আলাইহিস সালাম এমন এক জনগোষ্ঠীর নিকট আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা দাজ্জালের চক্রান্ত ও ফিৎনা থেকে মুক্ত রেখেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন (বিপদমুক্ত করবেন) এবং জান্নাতে তাদের মর্যাদাসমূহ সম্পর্কে তাদেরকে জানাবেন। এসব কাজে তিনি ব্যস্ত থাকবেন এমন সময় আল্লাহ তাআলা তাঁর নিকট অহী পাঠাবেন যে, আমি আমার কিছু বান্দার আবির্ভাব ঘটিয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে কারো লড়ার ক্ষমতা নেই। সুতরাং তুমি আমার প্রিয় বান্দাদের নিয়ে ’ত্বূর’ পর্বতে আশ্রয় নাও। আল্লাহ তাআলা য়্যা’জুজ-মা’জুজ জাতিকে পাঠাবেন। তারা প্রত্যেক উচ্চস্থান থেকে দ্রুত বেগে ছুটে যাবে। তাদের প্রথম দলটি ত্বাবারী হ্রদ পার হবার সময় তার সম্পূর্ণ পানি এমনভাবে পান ক’রে ফেলবে যে, তাদের সর্বশেষ দলটি সেখান দিয়ে পার হবার সময় বলবে, এখানে এক সময় পানি ছিল। আল্লাহর নবী ঈসা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত তাঁদের কাছে একটি গরুর মাথা, বর্তমানে তোমাদের একশ’টি স্বর্ণমুদ্রা অপেক্ষা অধিক উত্তম হবে।

সুতরাং আল্লাহর নবী ঈসা আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সঙ্গীগণ (রাঃ) আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন। ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের (য়্যা’জূজ-মা’জূজ জাতির) ঘাড়সমূহে এক প্রকার কীট সৃষ্টি ক’রে দেবেন। যার শিকারে পরিণত হয়ে তারা এক সঙ্গে সবাই মারা যাবে। তারপর আল্লাহ তাআলার নবী ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সাথীগণ (রাঃ) নিচে নেমে আসবেন। তারপর (এমন অবস্থা ঘটবে যে,) সেই অঞ্চল তাদের মৃতদেহ ও দুর্গন্ধে ভরে থাকবে; এক বিঘত জায়গাও তা থেকে খালি থাকবে না। সুতরাং ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সঙ্গীরা (রাঃ) আল্লাহর কাছে দু’আ করবেন। ফলে তিনি বুখতী উটের ঘাড়ের ন্যায় বৃহদকায় এক প্রকার পাখি পাঠাবেন। তারা উক্ত লাশগুলিকে তুলে নিয়ে গিয়ে আল্লাহ যেখানে চাইবেন সেখানে নিয়ে গিয়ে নিক্ষেপ করবে। তারপর আল্লাহ তাআলা এমন প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যে, কোন ঘর ও শিবির বাদ পড়বে না।

সুতরাং সমস্ত যমীন ধুয়ে মসৃণ পাথরের ন্যায় অথবা স্বচ্ছ কাঁচের ন্যায় পরিষ্কার হয়ে যাবে। তারপর যমীনকে আদেশ করা হবে যে, ’তুমি আপন ফল-মূল যথারীতি উৎপন্ন কর ও নিজ বরকত পুনরায় ফিরিয়ে আন।’ সুতরাং (বর্কতের এত ছড়াছড়ি হবে যে,) একদল লোক একটি মাত্র ডালিম ফল ভক্ষণ করে পরিতৃপ্ত হবে এবং তার খোসার নীচে ছায়া অলম্বন করবে। পশুর দুধে এত প্রাচুর্য প্রদান করা হবে যে, একটি মাত্র দুগ্ধবতী উটনী একটি সম্প্রদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে। একটি দুগ্ধবতী গাভী একটি গোত্রের জন্য যথেষ্ট হবে। আর একটি দুগ্ধবতী ছাগী কয়েকটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট হবে।

তারা ঐ অবস্থায় থাকবে, এমন সময় আল্লাহ তাআলা এক প্রকার পবিত্র বাতাস পাঠাবেন, যা তাদের বগলের নীচে দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জীবন হরণ করবে। তারপর স্রেফ দুর্বৃত্ত ও অসৎ মানুষজন বেঁচে থাকবে, যারা এই ধরার বুকে গাধার ন্যায় প্রকাশ্যে লোকচক্ষুর সামনে ব্যভিচারে লিপ্ত হবে। সুতরাং এদের উপরেই সংঘটিত হবে মহাপ্রলয় (কিয়ামত)।

عَنِ النَّوَّاسِ بنِ سَمعَانَ قاَلَ : ذَكَرَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ الدَّجَّالَ ذَاتَ غَدَاةٍ فَخَفَّضَ فِيهِ وَرَفَّعَ حَتّٰـى ظَنَنَّاهُ فِي طَائِفَةِ النَّخْلِ فَلَمَّا رُحْنَا إلَيْهِ عَرَفَ ذلِكَ فِينَا فَقالَ مَا شَأنُكُمْ ؟ قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ ذَكَرْتَ الدَّجَّالَ الغَدَاةَ فَخَفَّضْتَ فِيهِ وَرَفَّعْتَ حَتّٰـى ظَنَنَّاهُ فِي طَائِفَةِ النَّخْلِ فَقَالَ غَيْرُ الدَّجَّالِ أَخْوَفُنِي عَلَيْكُمْ إِنْ يَخْرُجْ وَأَنَا فِيكُمْ فَأَنَا حَجِيجُهُ دُونَكُمْ ؛ وَإِنْ يَخْرُجْ وَلَسْتُ فِيكُمْ فَامْرُؤٌ حَجِيجُ نَفْسِهِ وَاللهُ خَلِيفَتي عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ إِنَّهُ شَابٌّ قَطَطٌ عَيْنُهُ طَافِيَةٌ، كَأَنّي أُشَبِّهُهُ بعَبْدِ العُزَّى بنِ قَطَنٍ فَمَنْ أَدْرَكَهُ مِنْكُمْ فَلْيَقْرَأْ عَلَيْهِ فَوَاتِحَ سُورَةِ الكَهْفِ؛ إِنَّهُ خَارِجٌ خَلَّةً بَيْنَ الشَّامِ وَالعِرَاقِ فَعَاثَ يَمِيناً وَعَاثَ شِمَالاً يَا عِبَادَ اللهِ فَاثْبُتُوا قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا لُبْثُهُ فِي الأَرْضِ ؟ قَالَ أَرْبَعُونَ يَوْماً : يَوْمٌ كَسَنَةٍ وَيَوْمٌ كَشَهْرٍ وَيَوْمٌ كَجُمْعَةٍ وَسَائِرُ أَيَّامِهِ كَأَيَّامِكُمْ قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ فَذٰلِكَ اليَوْمُ الَّذِي كَسَنَةٍ أَتَكْفِينَا فِيهِ صَلاَةُ يَوْمٍ ؟ قَالَ لاَ اقْدُرُوا لَهُ قَدْرَهُ قُلْنَا : يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَا إِسْرَاعُهُ فِي الأَرْضِ ؟ قَالَ كَالغَيْثِ اسْتَدْبَرَتْهُ الرِّيحُ فَيَأْتِي عَلَى القَوْمِ فَيدْعُوهُم فَيُؤمِنُونَ بِهِ وَيَسْتَجِيبُونَ لَهُ فَيَأمُرُ السَّمَاءَ فَتُمْطِرُ وَالأَرْضَ فَتُنْبِتُ فَتَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَتُهُمْ أَطْوَلَ مَا كَانَتْ ذُرىً وَأَسْبَغَهُ ضُرُوعاً وَأَمَدَّهُ خَوَاصِرَ ثُمَّ يَأتِي القَوْمَ فَيَدْعُوهُمْ فَيَرُدُّونَ عَلَيْهِ قَولَهُ فَيَنْصَرفُ عَنْهُمْ فَيُصْبِحُونَ مُمْحِلِينَ لَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ شَيْءٌ مِنْ أَمْوَالِهِمْ وَيَمُرُّ بِالخَرِبَةِ فَيَقُولُ لَهَا : أَخْرِجِي كُنُوزَكِ فَتَتْبَعُهُ كُنُوزُهَا كَيَعَاسِيبِ النَّحْلِ، ثُمَّ يَدْعُو رَجُلاً مُمْتَلِئاً شَبَاباً فَيَضْرِبُهُ بِالسَّيْفِ، فَيَقْطَعُهُ جِزْلَتَيْنِ رَمْيَةَ الغَرَضِ، ثُمَّ يَدْعُوهُ فَيُقْبِلُ وَيَتَهَلَّلُ وَجْهُهُ يَضْحَكُ فَبَيْنَمَا هُوَ كَذلِكَ إذْ بَعَثَ اللهُ تَعَالٰـى المَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ ﷺ فَيَنْزِلُ عِنْدَ المَنَارَةِ البَيْضَاءِ شَرْقِيَّ دِمَشقَ بَيْنَ مَهْرُودَتَيْنِ وَاضِعاً كَفَّيْهِ عَلَى أَجْنِحَةِ مَلَكَيْنِ إِذَا طَأطَأَ رَأسَهُ قَطَرَ وَإِذَا رَفَعَهُ تَحَدَّرَ مِنهُ جُمَانٌ كَاللُّؤْلُؤ فَلاَ يَحِلُّ لِكَافِرٍ يَجِدُ رِيحَ نَفَسِهِ إلاَّ مَاتَ وَنَفَسُهُ يَنْتَهِي إِلَى حَيثُ يَنْتَهِي طَرْفُهُ فَيَطْلُبُهُ حَتّٰـى يُدْرِكَهُ بِبَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلُهُ ثُمَّ يَأتِي عِيسَى ﷺ قَوماً قَدْ عَصَمَهُمُ اللهُ مِنهُ فَيَمْسَحُ عَنْ وُجُوهِهِمْ وَيُحَدِّثُهُمْ بِدَرَجَاتِهِمْ فِي الجَنَّةِ، فَبَيْنَمَا هُوَ كَذٰلِكَ إِذْ أَوْحَى اللهُ تَعَالٰـى إِلَى عِيسَى ﷺ أَنِّي قَدْ أَخْرَجْتُ عِبَاداً لِي لاَ يَدَانِ لأَحَدٍ بِقِتَالِهِمْ فَحَرِّزْ عِبَادِي إِلَى الطُّورِ وَيَبْعَثُ اللهُ يَأجُوجَ وَمَأجُوجَ وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ، فَيَمُرُّ أَوَائِلُهُمْ عَلَى بُحَيرَةِ طَبَرِيَّةَ فَيَشْرَبُونَ مَا فِيهَا وَيَمُرُّ آخِرُهُمْ فَيَقُولُونَ : لَقَدْ كَانَ بِهَذِهِ مَرَّةً مَاءٌ، وَيُحْصَرُ نَبيُّ اللهِ عِيسَى ﷺ وَأَصْحَابُهُ حَتّٰـى يَكُونَ رَأْسُ الثَّوْرِ لأَحَدِهِمْ خَيْراً مِنْ مِئَةِ دينَارٍ لأَحَدِكُمُ اليَوْمَ فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللهِ عِيسَى ﷺ وَأَصْحَابُهُ إِلَى اللهِ تَعَالٰـى فَيُرْسِلُ اللهُ تَعَالٰـى عَلَيْهِمُ النَّغَفَ فِي رِقَابِهِمْ، فَيُصْبِحُونَ فَرْسَى كَمَوْتِ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ ثُمَّ يَهْبِطُ نَبِيُّ اللهِ عِيسَى ﷺ وَأَصْحَابُهُإِلَى الأَرْضِ فَلاَ يَجِدُونَ فِي الأَرْضِ مَوْضِعَ شِبْرٍ إِلاَّ مَلأَهُ زَهَمُهُمْ وَنَتَنُهُمْ فَيَرْغَبُ نَبِيُّ اللهِ عِيسَى ﷺ وَأَصْحَابُهُ إِلَى اللهِ تَعَالٰـى فَيُرْسِلُ اللهُ تَعَالٰـى طَيْراً كَأَعْنَاقِ البُخْتِ فَتَحْمِلُهُمْ فَتَطْرَحُهُمْ حَيثُ شَاءَ اللهُ ثُمَّ يُرْسِلُ اللهُ ـ عَزَّ وَجَلَّ ـ مَطَراً لاَ يُكِنُّ مِنهُ بَيْتُ مَدَرٍ وَلاَ وَبَرٍ فَيَغْسِلُ الأَرْضَ حَتّٰـى يَتْرُكَهَا كَالزَّلَقَةِ ثُمَّ يُقَالُ لِلأَرْضِ : أَنْبِتي ثَمَرتَكِ وَرُدِّي بَرَكَتَكِ، فَيَوْمَئِذٍ تَأكُلُ العِصَابَةُ مِنَ الرُّمَّانَةِ وَيَسْتَظِلُّونَ بِقَحْفِهَا وَيُبَارَكُ فِي الرِّسْلِ حَتّٰـى أَنَّ اللّقْحَةَ مِنَ الإِبِلِ لَتَكْفِي الفِئَامَ مِنَ النَّاسِ ؛ وَاللِّقْحَةَ مِنَ البَقَرِ لَتَكْفِي القَبِيلَةَ مِنَ النَّاسِ وَاللِّقْحَةَ مِنَ الغَنَمِ لَتَكْفِي الفَخِذَ مِنَ النَّاسِ ؛ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذٰلِكَ إِذْ بَعَثَ اللهُ تَعَالٰـى رِيْحاً طَيِّبَةً فَتَأخُذُهُمْ تَحْتَ آبَاطِهِمْ فَتَقْبِضُ رُوْحَ كُلِّ مُؤْمِنٍ وَكُلِّ مُسْلِمٍ ؛ وَيَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ يَتَهَارَجُونَ فِيهَا تَهَارُجَ الحُمُرِ فَعَلَيْهِمْ تَقُومُ السَّاعَةُ رواه مسلم

عن النواس بن سمعان قال : ذكر رسول الله ﷺ الدجال ذات غداة فخفض فيه ورفع حتـى ظنناه في طاىفة النخل فلما رحنا اليه عرف ذلك فينا فقال ما شانكم ؟ قلنا : يا رسول الله ذكرت الدجال الغداة فخفضت فيه ورفعت حتـى ظنناه في طاىفة النخل فقال غير الدجال اخوفني عليكم ان يخرج وانا فيكم فانا حجيجه دونكم ؛ وان يخرج ولست فيكم فامرو حجيج نفسه والله خليفتي على كل مسلم انه شاب قطط عينه طافية، كاني اشبهه بعبد العزى بن قطن فمن ادركه منكم فليقرا عليه فواتح سورة الكهف؛ انه خارج خلة بين الشام والعراق فعاث يمينا وعاث شمالا يا عباد الله فاثبتوا قلنا : يا رسول الله وما لبثه في الارض ؟ قال اربعون يوما : يوم كسنة ويوم كشهر ويوم كجمعة وساىر ايامه كايامكم قلنا : يا رسول الله فذلك اليوم الذي كسنة اتكفينا فيه صلاة يوم ؟ قال لا اقدروا له قدره قلنا : يا رسول الله وما اسراعه في الارض ؟ قال كالغيث استدبرته الريح فياتي على القوم فيدعوهم فيومنون به ويستجيبون له فيامر السماء فتمطر والارض فتنبت فتروح عليهم سارحتهم اطول ما كانت ذرى واسبغه ضروعا وامده خواصر ثم ياتي القوم فيدعوهم فيردون عليه قوله فينصرف عنهم فيصبحون ممحلين ليس بايديهم شيء من اموالهم ويمر بالخربة فيقول لها : اخرجي كنوزك فتتبعه كنوزها كيعاسيب النحل، ثم يدعو رجلا ممتلىا شبابا فيضربه بالسيف، فيقطعه جزلتين رمية الغرض، ثم يدعوه فيقبل ويتهلل وجهه يضحك فبينما هو كذلك اذ بعث الله تعالـى المسيح ابن مريم ﷺ فينزل عند المنارة البيضاء شرقي دمشق بين مهرودتين واضعا كفيه على اجنحة ملكين اذا طاطا راسه قطر واذا رفعه تحدر منه جمان كاللولو فلا يحل لكافر يجد ريح نفسه الا مات ونفسه ينتهي الى حيث ينتهي طرفه فيطلبه حتـى يدركه بباب لد فيقتله ثم ياتي عيسى ﷺ قوما قد عصمهم الله منه فيمسح عن وجوههم ويحدثهم بدرجاتهم في الجنة، فبينما هو كذلك اذ اوحى الله تعالـى الى عيسى ﷺ اني قد اخرجت عبادا لي لا يدان لاحد بقتالهم فحرز عبادي الى الطور ويبعث الله ياجوج وماجوج وهم من كل حدب ينسلون، فيمر اواىلهم على بحيرة طبرية فيشربون ما فيها ويمر اخرهم فيقولون : لقد كان بهذه مرة ماء، ويحصر نبي الله عيسى ﷺ واصحابه حتـى يكون راس الثور لاحدهم خيرا من مىة دينار لاحدكم اليوم فيرغب نبي الله عيسى ﷺ واصحابه الى الله تعالـى فيرسل الله تعالـى عليهم النغف في رقابهم، فيصبحون فرسى كموت نفس واحدة ثم يهبط نبي الله عيسى ﷺ واصحابهالى الارض فلا يجدون في الارض موضع شبر الا ملاه زهمهم ونتنهم فيرغب نبي الله عيسى ﷺ واصحابه الى الله تعالـى فيرسل الله تعالـى طيرا كاعناق البخت فتحملهم فتطرحهم حيث شاء الله ثم يرسل الله ـ عز وجل ـ مطرا لا يكن منه بيت مدر ولا وبر فيغسل الارض حتـى يتركها كالزلقة ثم يقال للارض : انبتي ثمرتك وردي بركتك، فيومىذ تاكل العصابة من الرمانة ويستظلون بقحفها ويبارك في الرسل حتـى ان اللقحة من الابل لتكفي الفىام من الناس ؛ واللقحة من البقر لتكفي القبيلة من الناس واللقحة من الغنم لتكفي الفخذ من الناس ؛ فبينما هم كذلك اذ بعث الله تعالـى ريحا طيبة فتاخذهم تحت اباطهم فتقبض روح كل مومن وكل مسلم ؛ ويبقى شرار الناس يتهارجون فيها تهارج الحمر فعليهم تقوم الساعة رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৩১/ হৃদয়-গলানো উপদেশ