১৩৬১

পরিচ্ছেদঃ ৪২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জুমু‘আর সালাত

১৩৬১-[৮] আওস ইবনু আওস (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জুমু’আর দিন হলো তোমাদের সর্বোত্তম দিন। এ দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনে তাঁর রূহ কবয করা হয়েছে। এ দিনে প্রথম শিঙ্গা ফুঁৎকার হবে। এ দিন দ্বিতীয় শিঙ্গা ফুঁৎকার দেয়া হবে। কাজেই এ দিন তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পাঠ করবে। কারণ তোমাদের দরূদ আমার নিকট পেশ করা হবে। সাহাবীগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের দরূদ আপনার কাছে কিভাবে পেশ করা হবে। অথচ আপনার হাড়গুলো পচে গলে যাবে? বর্ণনাকারী বলেন, أَرَمْتَ (আরামতা) শব্দ দ্বারা সাহাবীগণ بَلِيْتَ (বালীতা) অর্থ বুঝিয়েছেন। অর্থাৎ আপনার পবিত্র দেহ পঁচে গলে মাটিতে মিশে যাবে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তা’আলা নবী-রসূলদের শরীর মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন (অর্থাৎ মাটি তাদের দেহ নষ্ট করতে পারবে না)। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, দারিমী ও বায়হাক্বী’র দা’ওয়াতুল কাবীর)[1]

وَعَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمُ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ قُبِضَ وَفِيهِ النَّفْخَةُ فأكثرا عَلَيَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِيهِ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَليّ» فَقَالُوا يَا رَسُول الله وَكَيف تعرض صَلَاتنَا عَلَيْك وَقَدْ أَرَمْتَ؟ قَالَ: يَقُولُونَ: بَلِيتَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي الدَّعْوَات الْكَبِير

وعن اوس بن اوس رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان من افضل ايامكم يوم الجمعة فيه خلق ادم وفيه قبض وفيه النفخة فاكثرا علي من الصلاة فيه فان صلاتكم معروضة علي» فقالوا يا رسول الله وكيف تعرض صلاتنا عليك وقد ارمت؟ قال: يقولون: بليت قال: «ان الله حرم على الارض اجساد الانبياء» . رواه ابو داود والنساىي وابن ماجه والدارمي والبيهقي في الدعوات الكبير

ব্যাখ্যা: (فِيْهِ النَّفْخَةُ) আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) বলেন যে, এখানে النَّفْخَةُ বা ফুঁৎকার বলতে ইসরাফীল (আঃ)-এর প্রথম ফুঁৎকার, সুতরাং নিশ্চয় সেটা ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) সংঘটিত হওয়ার শুরু।

(وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ) অর্থাৎ চিৎকার এবং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ওই বিকট আওয়াজ যার কারণে মানুষ স্ব স্ব স্থানে মৃত্যুবরণ করবে এবং এটাই প্রথম ফুঁৎকার। আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ

وَنُفِخَ فِي الصُّوْرِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّموتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ إِلَّا مَنْ شَآءَ اللّهُ

‘‘আর (ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) দিবসে) শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। অতঃপর আসমান ও জমিনের অধিবাসীগণ হতজ্ঞান হয়ে পড়বে; কিন্তু আল্লাহ যাকে চান, (সে রক্ষা পাবে)।’’ (সূরাহ্ আয্ যুমার ৩৯ : ৬৮)

আল্লামা ক্বারী (রহঃ) বলেন, এ النَّفْخَةُ বা ফুঁৎকার দ্বারা ২য় ফুঁৎকার উদ্দেশ্য, আর الصَّعْقَةُ বা আওয়াজ দ্বারা প্রথম ফুঁৎকার উদ্দেশ্য। (إِنَّ اللّهَ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ) অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা জমিনকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দের দেহ ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন।

কারণ নাবীগণ তাদের ক্ববরে জীবিত রয়েছেন কিন্তু এ জীবন বলতে বারযাখী জীবন, দুনিয়ার দৃশ্যমান জীবন নয় এবং তা শাহীদদের জীবনের চেয়ে অধিক দৃঢ় ও পরিপূর্ণ জীবন এবং এ হাদীস প্রমাণ করে যে, জুমু‘আর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অধিক দরূদ পড়া শারী‘আত সম্মত এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মৃত্যুর পরও তা তাঁর নিকট পৌঁছানো হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)