১০৫৩

পরিচ্ছেদঃ ২৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - জামা‘আত ও তার ফযীলত সম্পর্কে

১০৫৩-[২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ঐ পবিত্র সত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন নিবদ্ধ। আমি মনে করেছি কোন (খাদিমকে) লাকড়ি জোগার করার আদেশ করব। লাকড়ি জোগার করা হলে আমি (’ইশার) সালাতের আযান দিতে আদেশ করব। আযান হয়ে গেলে সালাতের ইমামতি করার জন্যে কাউকে আদেশ করব। তারপর আমি ঐসব লোকের খোঁজে বের হবো (যারা কোন কারণ ছাড়া জামা’আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পড়ার জন্য আসেনি)।

অপর সূত্রে আছেঃ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, আমি ঐসব লোকের কাছে যাবো যারা সালাতে হাযির হয় না এবং আমি তাদেরকে ঘরবাড়ীসহ জ্বালিয়ে দেব। সে সত্বার কসম যার হাতে আমার জীবন আবদ্ধ! যারা সালাতের জামা’আতে অংশ গ্রহণ করে না তাদের কোন ব্যক্তি যদি জানে যে, মসজিদে মাংস সহ হাড় অথবা (গাভী ও বকরীর) দু’টি ভাল খুর পাওয়া যাবে, তাহলে সে অবশ্যই ’ইশার সালাতে উপস্থিত হয়ে যেত। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ الْجَمَاعَةِ وَفَضْلِهَا

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَقَدْ هَمَمْتُ أَنْ آمُرَ بِحَطَبٍ فَيُحْطَبَ ثُمَّ آمُرَ بِالصَّلَاةِ فَيُؤَذَّنَ لَهَا ثُمَّ آمُرَ رَجُلًا فَيَؤُمَّ النَّاسَ ثُمَّ أُخَالِفَ إِلَى رِجَالٍ. وَفِي رِوَايَةٍ: لَا يَشْهَدُونَ الصَّلَاةَ فَأُحَرِّقَ عَلَيْهِمْ بُيُوتَهُمْ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ يَعْلَمُ أَحَدُهُمْ أَنَّهُ يَجِدُ عَرْقًا سَمِينًا أَوْ مِرْمَاتَيْنِ حَسَنَتَيْنِ لَشَهِدَ الْعِشَاءَ . رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ وَلمُسلم نَحوه

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: والذي نفسي بيده لقد هممت ان امر بحطب فيحطب ثم امر بالصلاة فيوذن لها ثم امر رجلا فيوم الناس ثم اخالف الى رجال. وفي رواية: لا يشهدون الصلاة فاحرق عليهم بيوتهم والذي نفسي بيده لو يعلم احدهم انه يجد عرقا سمينا او مرماتين حسنتين لشهد العشاء . رواه البخاري ولمسلم نحوه

ব্যাখ্যা: (لَا يَشْهَدُونَ الصَّلَاةَ) ‘সালাতে উপস্থিত হয় না’ অর্থাৎ জামা‘আতে উপস্থিত হয় না কোন ওযর না থাকা সত্ত্বেও। আবূ দাঊদ-এর বর্ণনায় আছে, (ثم آتى قوماً يصلون في بيوتهم ليست بهم علة) ‘অতঃপর আমি এমন ক্বাওমের নিকট যাই যারা বিনা ওযরে ঘরেই সালাত আদায় করে’ এখান থেকে বুঝা যায় হাদীসে যে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে তা বিনা ওযরে জামা‘আত পরিত্যাগ করার কারণে সালাত পরিত্যাগের কারণে নয়। এতে এটাও প্রমাণিত হয় যে, ওযর থাকলে জামা‘আত পরিত্যাগ করা বৈধ।

এ হাদীস প্রমাণ বহন করে যে, জামা‘আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা ফারযে আইন। কেননা তা যদি সুন্নাত হত তাহলে জামা‘আত পরিত্যাগকারীকে শাস্তির ভয় দেখাতেন না। অনুরূপভাবে তা যদি ফারযে কিফায়াহ্ হত তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীদের দ্বারাই তা আদায় হয়ে যেত।

(لَشَهِدَ الْعِشَاءَ) অবশ্যই ‘ইশাতে উপস্থিত হত। অর্থাৎ ‘ইশার সালাতে জামা‘আতে উপস্থিত হত। মোট কথা এই যে, যদি সে জানতে পারতো যে সে যদি জামা‘আতে উপস্থিত হয় তাহলে দুনিয়াবী কোন ফায়দা পাওয়া যাবে যদিও তা সামান্য অতি নগণ্য হয় তবুও সে জামা‘আতে উপস্থিত হত। কেননা তাদের সকল চিন্তার কেন্দ্রবিন্দু হল দুনিয়া। তাই তারা জামা‘আতে সালাতের যে পরকালীন সাওয়াব ও পুরস্কার রয়েছে তাদের তা অর্জনের কোন অভিপ্রায় নেই বলেই তারা তাতে উপস্থিত হয় না।

অত্র হাদীস থেকে যা প্রমাণিত হয়ঃ

(১) শাস্তির ভয় দেখানো বৈধ।

(২) মাল দ্বারা শাস্তি অর্থাৎ জরিমানা বৈধ।

(৩) পাপীদেরকে তাদের অসতর্ক অবস্থায় পাকড়াও করা বৈধ।

(৪) যারা বাড়ীতে লুকিয়ে থাকে অথবা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পরিত্যাগ করে তাদের বের করে আনার নিমিত্তে ইমামের অথবা তার স্থলা ব্যক্তির জন্য জামা‘আত পরিত্যাগ করা বৈধ।

(৫) পাপের আড্ডাখানা গুড়িয়ে দেয়া বৈধ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)