পরিচ্ছেদঃ ৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাতের ফযীলত
৬৩২-[৯] আর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন, বেদুঈনরা যেন তোমাদের ’ইশার সালাতের নামকরণেও তোমাদের ওপর জয়ী হতে না পারে। এটা আল্লাহর কিতাবে ’ইশা। তা পড়া হয় তাদের উষ্ট্রী দুধ দোহনের সময়। (মুসলিম)[1]
بَابُ فَضَائِلِ الصَّلَاةِ
وَقَالَ: لَا يَغْلِبَنَّكُمُ الْأَعْرَابُ عَلَى اسْمِ صَلَاتِكُمُ الْعِشَاءِ فَإِنَّهَا فِي كِتَابِ اللَّهِ الْعِشَاءُ فَإِنَّهَا تعتم بحلاب الْإِبِل. رَوَاهُ مُسلم
এ সংকলনে দু’ দিক থেকে সমস্যা রয়েছে। প্রথমত এটি এ ধারণা দিচ্ছে যে উভয়টি ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত একটি হাদীস। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা দু’টি হাদীস একটি মাগরিব সালাতের বিষয়ে আর অপরটি ‘ইশা সালাতের বিষয়ে। দ্বিতীয়ত এ ধারণাও দিচ্ছে যে, ইমাম মুসলিম (রহঃ) এভাবেই পরিপূর্ণ আকারে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি ইবনু ‘উমার হতে দ্বিতীয় হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর প্রথম হাদীসটি (অর্থাৎ- মাগরিব সালাতের ক্ষেত্রে) ইমাম বুখারী ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
ব্যাখ্যা: স্বাভাবিক কথা এই যে, যখন মহান ও সম্মানীয় ব্যক্তি কোন নাম সাব্যস্ত করেন তখন অন্য কারো নামকরণ গ্রহণীয় হতে পারে না। কেননা এতে ঐ মহানের সম্মানহানি ঘটে। তার উপরে অন্যকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। এটা উচিত নয়। আল্লাহ তা‘আলা তার কিতাব আল-কুরআনে ‘ইশাকে ‘ইশা নাম দিয়েছেন। যেমন- আল্লাহ বলেন, وَمِنْ بَعْدِ صَلَاةِ العِشَاءِ ‘‘ইশার সালাতের পর.....’’- (সূরাহ্ আন্ নূর ২৪ : ৫৮)। তাই এরপরে অপর কারো নামকরণ গ্রহণ করা অন্যায় এবং নিন্দনীয়। এ হাদীস দ্বারা ‘ইশাকে ‘আতামাহ্ নামকরণ মাকরূহ হওয়া প্রমাণিত হয়। [এ হাদীস ও পূর্বোক্ত আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস দু’টোর মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান সম্পর্কিত আলোচনা ৬৩০ নং আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর হাদীসের ব্যাখ্যায় বিস্তারিত করা হয়েছে]।
ইমাম সিন্দী বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যেহেতু আল্লাহ তার কিতাবে স্বয়ং এ সালাতকে ‘ইশা নামে নামকরণ করে উল্লেখ করেছেন এবং ‘আরব বেদুঈনরা এ সালাতকে ‘আতামাহ্ নামে ডাকে সেহেতু তোমরা বেদুঈনদের ডাকা নামে ‘ইশাকে বেশি ডেকো না। যদি ডাকো তাহলে তোমাদের ওপর বেদুঈনদের প্রভাব প্রকাশ পাবে। বরং তোমরা কুরআন অনুযায়ী ‘ইশা নামটি বেশি ব্যবহার করো। এখানে নিষেধাজ্ঞা দ্বারা ‘আতামাহ্ নাম ব্যবহার করতে পুরোপুরি নিষেধ করা হয়নি। কারণ তারা এ সময়ে উটের দুধ দোহন করতো। ‘আতামাহ্ অর্থ অন্ধকার। তারা কিছুটা অন্ধকার নামলে সে সময় উটের দুধ দোহন করতো। আর দুধ দোহন করার সময়কে তারা ‘আতামাহ্ বলতো।