৪৯২

পরিচ্ছেদঃ ৮. প্রথম অনুচ্ছেদ - অপবিত্রতা হতে পবিত্রতা অর্জন

৪৯২-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে মসজিদে (নাবাবীতে) ছিলাম। এমন সময় জনৈক বেদুইন এসে মসজিদে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে লাগলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীগণ বলে উঠলেন, থামো, থামো। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তাকে প্রস্রাব করতে বাধা দিও না, তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দাও। তাই সাহাবীগণ তাকে ছেড়ে দিলেন। সে প্রস্রাব করা শেষ করলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে বললেন, এ মাসজিদসমূহে প্রস্রাব ও অপবিত্রকরণের কোন কাজ করা জায়িয নয়। বরং এটা শুধু আল্লাহর যিকর, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও কুরআন পাঠের জন্য। (রাবী বলেন) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঠিক এ বাক্য বা অনুরূপ কিছু বলেছেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে উপস্থিত একজনকে নির্দেশ দিলেন সে এক বালতি পানি এনে (প্রস্রাবের উপর) ঢেলে দিল। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ تَطْهِيْرِ النَّجَاسَاتِ

وَعَن أنس قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ فِي الْمَسْجِدِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَامَ يَبُولُ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَهْ مَه قَالَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَزْرِمُوهُ دَعُوهُ» فَتَرَكُوهُ حَتَّى بَالَ ثُمَّ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَعَاهُ فَقَالَ لَهُ: «إِنَّ هَذِهِ الْمَسَاجِدَ لَا تصلح لشَيْء من هَذَا الْبَوْل وَلَا القذر إِنَّمَا هِيَ لذكر الله عز وَجل وَالصَّلَاةِ وَقِرَاءَةِ الْقُرْآنِ» أَوْ كَمَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فَأمر رَجُلًا مِنَ الْقَوْمِ فَجَاءَ بِدَلْوٍ مِنْ مَاءٍ فسنه عَلَيْهِ

وعن انس قال: بينما نحن في المسجد مع رسول الله صلى الله عليه وسلم اذ جاء اعرابي فقام يبول في المسجد فقال اصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم مه مه قال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا تزرموه دعوه» فتركوه حتى بال ثم ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دعاه فقال له: «ان هذه المساجد لا تصلح لشيء من هذا البول ولا القذر انما هي لذكر الله عز وجل والصلاة وقراءة القران» او كما قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قال فامر رجلا من القوم فجاء بدلو من ماء فسنه عليه

ব্যাখ্যা: (لَا تُزْرِمُوْهُ) ‘‘তাকে প্রস্রাব করতে বাধা দিও না।’’ কেননা প্রস্রাব মাঝখানে বাধাপ্রাপ্ত হলে তা প্রস্রাবকারীর জন্য ক্ষতির কারণ হয় এবং এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে গেলে প্রস্রাব তার শরীরে ও কাপড়ে লেগে তাকে নাপাক করে দিবে।

(إِنَّ هذِهِ الْمَسَاجِدَ) ‘‘এ মাসজিদসমূহ।’’ ‘মাসজিদ’ শব্দটি বহুবচনে উল্লেখ করেছেন যাতে কেউ এ সন্দেহে নিপতিত না হয় যে, এ হুকুম মসজিদে নাবাবীর জন্য খাস।

(إِنَّمَا هِىَ لِذِكْرِ اللهِ) ‘‘মাসজিদসমূহ আল্লাহর যিকিরের (জিকিরের) জন্য তৈরি করা হয়েছে।’’ ইমাম শাওকানী নায়লুল আওত্বার-এ (১/৪৩) বলেনঃ ‘‘মাসজিদসমূহ আল্লাহর যিকিরের (জিকিরের) জন্য’’। এ সীমাবদ্ধ উক্তি এ ইঙ্গিত বহন করে যে, তাতে হাদীসে উল্লেখিত প্রস্রাব ও ময়লা-আবর্জনা ব্যতীতও অনুরূপ কাজ যেমন- থু থু ফেলা, উচ্চৈঃস্বরে কথা বলা, ঝগড়া করা, বেচা-কেনা করা, হারানো বস্ত্ত সন্ধান করা এবং যে সমস্ত কথার মধ্যে আল্লাহর যিকর নেই- এ রকম কথাবার্তা বলাও বৈধ নয়। তবে যে সমস্ত কাজের মধ্যে আল্লাহর আনুগত্য রয়েছে যেমন- ই‘তিকাফের জন্য বসা, ‘ইলম চর্চা করা, ওয়ায শ্রবণ করার জন্য বসা, সালাতের অপেক্ষায় বসে থাকা এ সমস্ত কার্যাবলী বৈধ হওয়ার ক্ষেত্রে সকল মুসলিম ঐকমত্য পোষণ করেন। আর যে সমস্ত কাজের মধ্যে আল্লাহর আনুগত্য নেই- এ ধরনের সকল কাজই মসজিদে অবৈধ।

(فَسَنَّه عَلَيْهِ) ‘‘প্রস্রাবের উপর পানি ঢেলে দিলেন।’’ এতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, মাটির উপরে পতিত নাপাক বস্ত্ত যদি অধিক পরিমাণে পানি ঢেলে দিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয় তাহলে ঐ জায়গা পবিত্র হয়ে যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة)