পরিচ্ছেদঃ ১. প্রথম অনুচ্ছেদ - যে কারণে উযূ করা ওয়াজিব হয়
৩০২-[৩] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার অত্যধিক ’মাযী’ বের হত। কিন্তু আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কন্যার (ফাত্বিমার) স্বামী, তাই এ ব্যাপারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কিছু জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করতাম। তাই আমি মাস্আলাটি জানার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করতে মিক্বদাদকে বললাম। সে (নাম প্রকাশ ব্যতীত) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ অবস্থায় সে প্রথমে পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলবে ও তারপর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে নিবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ مَا يُوْجِبُ الْوَضُوْءَ
وَعَن عَليّ قَالَ: كُنْتُ رَجُلًا مَذَّاءً فَكُنْتُ أَسْتَحْيِي أَنْ أَسْأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِمَكَانِ ابْنَتِهِ فَأَمَرْتُ الْمِقْدَادَ فَسَأَلَهُ فَقَالَ: «يَغْسِلُ ذَكَرَهُ وَيتَوَضَّأ»
ব্যাখ্যা: مَذِىٌ (মাযী) বলা হয় সাদা পাতলা আঠালো ধরনের একপ্রকার পানি যা স্ত্রীর সাথে প্রেমালাপ, চুম্বন, সহবাসের স্মরণ বা পুনরায় সহবাসের ইচ্ছা হলে স্ত্রী-পুরুষের গোপন অঙ্গ থেকে বের হয়। আবার কখনো কখনো এর বের হওয়াটা অনুভূত হয় না।
مَذِىٌ (মাযী) সম্পর্কে জিজ্ঞেসের কারণ সেটি গোসল আবশ্যককারী নাপাকী কিনা তা জানা। মিক্বদাদ (রাঃ) কারো নাম উল্লেখ ছাড়াই এর হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন যা শুধুমাত্র ‘আলীর জন্য প্রযোজ্য ছিল না। এ বিষয়ে প্রশ্নকারী নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। যেমন এ বর্ণনায় মিক্বদাদ (রাঃ)-এর কথা আবার নাসায়ীর বর্ণনায় ‘আম্মার (রাঃ)-এর কথা এবং ইবনু হিব্বান ও তিরমিযীর বর্ণনায় ‘আলী (রাঃ)-এর কথা উল্লেখ হয়েছে। ইবনু হিব্বান এ ক্ষেত্রে সমন্বয় করতে গিয়ে বলেছেন যে, ‘আলী (রাঃ) প্রথমত আম্মার (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করতে বলেন। পরবর্তীতে মিক্বদাদ (রাঃ)-কে বলেন। পরে তিনি নিজেই প্রশ্ন করেন। কিন্তু ইবনু হিব্বান পরক্ষণে উল্লেখ করেন যে, ‘আলী (রাঃ)-এর উক্তি ‘‘আমি লজ্জায় তাঁকে প্রশ্ন করতে পারিনি’’ এটি প্রমাণ করে তিনি স্বয়ং প্রশ্ন করেননি।
قَوْلُهٗ (يَغْسِلُ ذَكَرَةٌ) (মাযী বের হলে সে তার গোপন অঙ্গ ধৌত করবে) যেহেতু মাযী অপবিত্র তাই তা আগে অপসারণ করতে হবে। তারপর উযূ (ওযু/ওজু/অজু)। গোপনাঙ্গের কতটুকু ধুইতে হবে তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও সর্বাধিক প্রাধান্যযোগ্য অভিমত হলো মাযী বের হওয়ার স্থানটুকু ধৌত করাই যথেষ্ট, সবটুকু নয়। তবে সাবধানতা অবলম্বনার্থে মাযী ছড়িয়ে পড়া স্থানসমূহ ধৌত করা উত্তম। হাদীসের বাহ্যিক ভাষ্যমতে মাযী বের হলে পানি দ্বারা ধৌত করাই নির্দিষ্ট। হাদীসের শেষাংশ থেকে প্রতীয়মান হয় মাযীতে শুধু উযূই ভঙ্গ হয়। অতএব তাতে গোসল ওয়াজিব হয় না।