পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
২১৮-[২১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ’ইলম বা জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয এবং অপাত্রে তথা অযোগ্য মানুষকে ’ইলম শিক্ষা দেয়া শুকরের গলায় মণিমুক্তা বা স্বর্ণ পরানোর শামিল।[1]
اَلْفَصْلُ الثَّانِيْ
وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ وَوَاضِعُ الْعِلْمِ عِنْدَ غير أَهله كمقلد الْخَنَازِير الْجَوْهَر واللؤلؤ وَالذَّهَبَ» . رَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ وَرَوَى الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ إِلَى قَوْلِهِ مُسْلِمٍ. وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ مَتْنُهُ مَشْهُورٌ وَإِسْنَادُهُ ضَعِيفٌ وَقَدْ رُوِيَ من أوجه كلهَا ضَعِيف
বায়হাক্বী এ বর্ণনাটি শু‘আবুল ঈমান-এ ‘মুসলিম’ শব্দ পর্যন্ত নকল করেছেন এবং বলেছেন, এ হাদীসের মাতান (মূল ভাষ্য) মাশহুর, আর সানাদ য‘ঈফ। বিভিন্ন সানাদে এ হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে, এসবই য‘ঈফ।
তবে ‘আল্লামা সুয়ূত্বী এর পঞ্চাশটির মতো সানাদ উল্লেখ করেছেন, এ কারণে তিনি এ হাদীসের প্রতি সহীহ হওয়ার হুকুম লাগিয়েছেন। ইমাম ‘ইরাক্বীও কোন কোন আয়িম্মায়ে মুহাদ্দিসীনের পক্ষ থেকে সহীহ বলেছেন। আর অনেকেই একে হাসান বলেছেন। আল্লাহই ভালো জানেন। তবে এ হাদীসের শেষে مسلمة শব্দ যা সাধারণের মধ্যে প্রসিদ্ধ। অবশ্য এর কোনই ভিত্তি নেই। আর কোন কোন সানাদে এর শুরুতে اطلبوا العلم ولو بالصين অর্থাৎ- ‘‘বিদ্যার্জন কর, যদি এর জন্য সুদূর চীন যেতে হয় তবুও।’’ সম্পূর্ণ বাতিল কথা। বিস্তারিত দেখুন আল আহাদীসুয্ য‘ঈফাহ্ (হাদীস নং ৪১৬)।
ব্যাখ্যা: (طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلى كُلِّ مُسْلِمٍ) এ অংশটুকু বিশুদ্ধ। এ অংশ উল্লিখিত শব্দটির মুসলিম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো স্বাভাবিক রীতিতে শারী‘আতের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল ব্যক্তি। ফলে মুসলিম শব্দের আওতা থেকে পাগল, শিশু বেরিয়ে যাবে, কারণ শারী‘আতের পক্ষ থেকে এদের ওপর কোন দায়িত্ব নেই এবং মুসলিম শব্দ দ্বারা মুসলিম ব্যক্তি উদ্দেশ্য, বিধায় মুসলিম ব্যক্তি বলতে নারী-পুরুষ উভয়কে শামিল করবে।
‘আল্লামা সুয়ূত্বী বলেন, ইমাম নাবাবীকে এ হাদীস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ ‘‘নিশ্চয়ই সানাদগতভাবে হাদীসটি দুর্বল, যদিও অর্থ বিশুদ্ধ।’’ অতএব মাতানটিকে সানাদের দৃষ্টিকোণ থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে সম্বন্ধ না করে মানুষের উপস্থাপিত উপমার মতো ধরে নেয়া যায়। ভাষ্যটুকুর মর্মার্থ হলো- সর্বাধিক নিকৃষ্ট প্রাণী শুকরের গলায় উৎকৃষ্ট অলংকার পরানো যেমন মূল্যহীন বরং যুলম তেমন যে ‘ইলমের ক্বদর (কদর) বুঝে না তাকে ‘ইলম দান করা মূল্যহীন ও যুলম।