১৬৫

পরিচ্ছেদঃ ৫. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কিতাব ও সুন্নাহকে সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরা

১৬৫-[২৬] উক্ত রাবী [’ইরবায ইবনু সারিয়াহ্] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করালেন। অতঃপর আমাদের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে গেলেন। আমাদের উদ্দেশে এমন মর্মস্পর্শী নাসীহাত করলেন যাতে আমাদের চোখ গড়িয়ে পানি বইতে লাগল। অন্তরে ভয় সৃষ্টি হলো মনে হচ্ছিল বুঝি উপদেশ দানকারীর যেন জীবনের এটাই শেষ উপদেশ। এক ব্যক্তি আবেদন করলো, হে আল্লাহর রসূল! আমাদেরকে আরো কিছু উপদেশ দিন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদেরকে আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করার, (ইমাম বা নেতার) আদেশ শোনার ও (তাঁর) অনুগত থাকতে উপদেশ দিচ্ছি, যদিও সে হাবশী (কৃষ্ণাঙ্গ) গোলাম হয়। আমার পরে তোমাদের যে ব্যক্তি বেঁচে থাকবে সে অনেক মতভেদ দেখবে। এমতাবস্থায় তোমাদের কর্তব্য হবে আমার সুন্নাতকে ও হিদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ি রাশিদীনের সুন্নাতকে আঁকড়িয়ে ধরা এবং এ পথ ও পন্থার উপর দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে থাকবে। সাবধান! দীনের ভেতরে নতুন নতুন কথার (বিদ্’আত) উদ্ভব ঘটানো হতে বেঁচে থাকবে। কেননা প্রত্যেকটা নতুন কথাই [বা কাজ শারী’আতে আবিষ্কার করা যা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবীগণ করেননি তা] বিদ্’আত এবং প্রত্যেকটা বিদ্’আতই ভ্রষ্টতা। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ) কিন্তু এ বর্ণনায় তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের কথা উল্লেখ করেননি।[1]

باب الاعتصام بالكتاب والسنة - الفصل الثاني

وَعَنْهُ: قَالَ: صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَوَعَظَنَا مَوْعِظَةً بَلِيغَةً ذَرَفَتْ مِنْهَا الْعُيُونُ وَوَجِلَتْ مِنْهَا الْقُلُوبُ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَأَنَّ هَذِهِ مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَأَوْصِنَا قَالَ: «أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللَّهِ وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإِنْ كَانَ عبدا حَبَشِيًّا فَإِنَّهُ من يَعش مِنْكُم يرى اخْتِلَافًا كَثِيرًا فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ إِلَّا أَنَّهُمَا لَمْ يَذْكُرَا الصَّلَاةَ

وعنه: قال: صلى بنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ذات يوم ثم اقبل علينا بوجهه فوعظنا موعظة بليغة ذرفت منها العيون ووجلت منها القلوب فقال رجل يا رسول الله كان هذه موعظة مودع فاوصنا قال: «اوصيكم بتقوى الله والسمع والطاعة وان كان عبدا حبشيا فانه من يعش منكم يرى اختلافا كثيرا فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ واياكم ومحدثات الامور فان كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة» . رواه احمد وابو داود والترمذي وابن ماجه الا انهما لم يذكرا الصلاة

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি বিষয়ের নির্দেশ নিয়েছেন। তাক্বওয়া অর্জনের নির্দেশ, আর তা এই যে, আল্লাহ কর্তৃক সকল নির্দেশের বাস্তবায়ন এবং সকল নিষেধ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।

অতঃপর নির্দেশ করেছেন, আমীর বা নেতার কথা শুনা এবং আর অনুগত্য করা, যতক্ষণ না সে কোন নাফরমানীর নির্দেশ দিবে। কেননা, আল্লাহর নাফরমানী হবে এমন বিষয়ে কোন সৃষ্টির আনুগত্য নেই। এ বিষয়ে হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছেঃ যদি হাবশী গোলামকেও তোমাদের আমীর করে দেয়া হয়, তারও আনুগত্য করবে।

এরপর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার পরে যখন তোমরা মতবিরোধ দেখবে, তখন আমার ও খুলাফায়ি রাশিদীনের সুন্নাতকে আঁকড়িয়ে ধরবে। কারণ এই যে, খুলাফায়ি রাশিদার তরীকা খোদ রসূলেরই তরীকা, তারা সার্বিক অবস্থায় এবং সকল বিষয়ে রসূলের তরীকা অনুযায়ী আ‘মাল করতেন।

মাসাবীহ গ্রন্থের শারাহতে ‘আল্লামা তুরবিশতী বলেছেন, খুলাফায়ি রাশিদাহ্ দ্বারা উদ্দেশ হচ্ছে, প্রথম চার খলীফাহ্। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, খিলাফাতের সময়কাল হবে ত্রিশ বছর। আর ত্রিশ বছর শেষ হয় ‘আলী  (রাঃ)-এর খিলাফাতের মাধ্যমে। অবশ্য এর দ্বারা অন্যদের খিলাফাতের নিষেধাজ্ঞা বুঝায় না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان)