১১১

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় ‘অনুচ্ছেদ - তাকদীরের প্রতি ঈমান

১১১-[৩৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! মু’মিনদের (নাবালেগ) বাচ্চাদের (জান্নাত-জাহান্নাম সংক্রান্ত ব্যাপারে) কী হুকুম? তিনি উত্তরে বললেন, তারা বাপ-দাদার অনুসারী হবে। আমি বললাম, কোন (নেক) ’আমল ছাড়াই? তিনি বললেন, আল্লাহ অনেক ভালো জানেন, তারা জীবিত থাকলে কী ’আমল করতো। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা মুশরিকদের (নাবালেগ) বাচ্চাদের কী হুকুম? তিনি বললেন, তারাও তাদের বাপ-দাদার অনুসারী হবে। (অবাক দৃষ্টিতে) আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন (বদ) ’আমল ছাড়াই? উত্তরে তিনি বললেন, সে বাচ্চাগুলো বেঁচে থাকলে কী ’আমল করত, আল্লাহ খুব ভালো জানেন। (আবূ দাঊদ)[1]

باب الإيمان بالقدر - الفصل الثاني

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَرَارِيُّ الْمُؤْمِنِينَ؟ قَالَ: «مِنْ آبَائِهِمْ» . فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ بِلَا عَمَلٍ؟ قَالَ: «اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ» . قُلْتُ فذاراري الْمُشْرِكِينَ؟ قَالَ: «مِنْ آبَائِهِمْ» . قُلْتُ: بِلَا عَمَلٍ؟ قَالَ: «اللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا عَامِلِينَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: قلت: يا رسول الله ذراري المومنين؟ قال: «من اباىهم» . فقلت: يا رسول الله بلا عمل؟ قال: «الله اعلم بما كانوا عاملين» . قلت فذاراري المشركين؟ قال: «من اباىهم» . قلت: بلا عمل؟ قال: «الله اعلم بما كانوا عاملين» . رواه ابو داود

Chapter: Belief in the Divine Decree - Section 2


‘A’isha said:
I asked, “Messenger of God, what happens to the offspring of believers?’’ He replied, “They are joined to their parents." I asked, “Although they have done nothing, messenger of God” lie replied, “God knows best what they were doing.” I asked, “What happens to the offspring of polytheists?” He replied, “They are joined to their parents.” I asked, “Although they have done nothing?” He replied, “God knows best what they were doing.”

Abu Dawud transmitted it.

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা তুরবিশতী (রহঃ) বলেছেন, তারা তাদেরই অন্তর্গত হবে তারা জান্নাতী হলে জান্নাতী আর জাহান্নামী হলে জাহান্নামী হবে। কেননা, ইসলামী শারী‘আতে পিতা-মাতা যদি ইসলামের উপর তার বিধান দিয়ে থাকে এবং আদেশ দেয় তাদের (এই সমস্ত শিশুর) জানাযার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। অনুরূপভাবে মুশরিকদের সন্তানদের দাস বানিয়ে রাখতে এবং মুসলিম ও মুশরিকের মাঝে উত্তরাধিকার বাতিল করে। অতএব, হাদীসের বাহ্যিক অর্থে তারা তাদের পিতামাতার সাথেই মিলিত হবে।

(قُلْتُ بِلَا عَمَلٍ) হাদীসের এ অংশটুকু ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর পক্ষ থেকে বের হয়েছে যা তিনি স্বভাবতই আশ্চার্যান্বিত হয়ে বলেছেন।

(قَالَ اللّهُ أَعْلَمُ بِمَا كَانُوا) অর্থাৎ- ‘যদি তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়’ এ অংশটুকু ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর আশ্চর্যান্বিত হয়ে করা প্রশ্নের প্রতি উত্তর পাশাপাশি তা তাক্বদীরের প্রতি ইঙ্গিতবাহী, এজন্যই অত্র হাদীসটিকে তাক্বদীরের অধ্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

ইমাম তুরবিশতী (রহঃ) বলেন, তারা দুনিয়াতে তাদের পিতামাতার অনুগামী, তবে আখিরাতের বিষয় আল্লাহর ওপর ন্যাস্ত, তিনিই ভালো জানেন তাদের কি হবে?

ক্বাযী ‘ইয়াযও এমনটাই মতামত পোষণ করেছেন যে, সাওয়াব এবং শাস্তি কোনটাই ‘আমলের কারণে হবে না। কেননা যদি ‘আমলের কারণেই জান্নাত জাহান্নাম বা শাস্তি সাওয়াব হতো তাহলে মুশরিক সন্তানেরা জাহান্নামী আর মুসলিমদের সন্তানেরা জান্নাতী হওয়ার কথা নয়। বরং আল্লাহর অনুগ্রহ এবং তার শাস্তি এগুলো সব তাক্বদীরের বিষয়। অতএব, এ বিষয়ে আবশ্যক হচ্ছে বিষয়টিকে স্থগিত রাখা এবং তা আল্লাহর দিকে ন্যাস্ত করে দেয়া, এটা হচ্ছে পরকালের ক্ষেত্রে। আর দুনিয়াতে ভালো কাজ জান্নাতী হওয়ার আর খারাপ কাজ জাহান্নামী হওয়ার দলীল বহন করে।

‘আল্লামা ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, আমি বলবো, মুসলিমের সন্তান জান্নাতী সকলের ঐকমত্যে হবে, মুশরিকের সন্তানের ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে কিন্তু সবচেয়ে সঠিক এবং বিশ্লেষণমূলক মত হচ্ছে তারাও জান্নাতী। আর অত্র হাদীস সহ অন্যান্য এমন যত হাদীস আছে এগুলোকে তা‘বীল করতে হবে অথবা এগুলোর অর্থ এমন হবে যে, আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন, তারা যে জান্নাতী এ খবর জানার আগেই। আল্লাহই ভালো জানেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان)