৬৪০২

পরিচ্ছেদঃ ২. নফল সালাত ও অন্য যে কোন নফল ইবাদাতের উপর মাতা-পিতার খিদমাত আগ্রাধিকার প্রাপ্ত

৬৪০২-(৭/২৫৫০) শাইবান ইবনু ফাররূখ (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুরায়জ (বনী ইসরাঈলের একজন আবিদ ব্যক্তি) তার ইবাদাতখানায় ইবাদাতে নিমগ্ন থাকতেন। (একবার) তার মাতা তার কাছে আসলেন। হুমায়দ (রহঃ) বলেন, আমাদের কাছে আবু রাফি এমন ভঙ্গিতে ব্যক্ত করেন, যেমনভাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মায়ের ডাকের ভঙ্গিতে আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) এর কাছে ব্যক্ত করেছেন। কিভাবে তার হাত তাঁর ভ্রুর উপর রাখছিলেন। এরপর তার দিকে মাথা উঁচু করে তাকে ডাকছিলেন। বললেন, হে জুরায়জ! আমি তোমার মা, আমার সাথে কথা বলো। এ কথা এমন অবস্থায় বলছিলেন, যখন জুরায়জ সালাতে নিমগ্ন ছিলেন। তখন তিনি মনে মনে বলতে লাগলেন, “হে আল্লাহ! (একদিকে) আমার মা আর (অপরদিকে) আমার সালাত (আমি কী করি?)"।

রাবী বলেন, অবশেষে তিনি তার সালাতকে অগ্রাধিকার দিলেন এবং তার মা ফিরে গেলেন। পরে তিনি দ্বিতীয়বার আসলেন এবং বললেন, হে জুরায়জ। আমি তোমার মা, তুমি আমার সঙ্গে কথা বলো। তিনি বললেন, ইয়া আল্লাহ! আমার মা, আমার সালাত। তখন তিনি তার সালাতে ব্যস্ত রইলেন। তখন তার মা বললেন, “হে আল্লাহ! এ জুরায়জ আমারই ছেলে। আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিলাম। সে আমার সাথে কথা বলতে অস্বীকার করল। হে আল্লাহ তার মৃত্যু দিয়ো না, যে পর্যন্ত তাকে ব্যভিচারিণীর মুখ না দেখাও।” তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যদি তার মাতা তার বিরুদ্ধে অন্য কোন বিপদের জন্য বদদু’আ করতেন তাহলে অবশ্যই সে, বিপদে পতিত হত।

তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এক মেষ রাখাল জুরায়জ এর ইবাদাতখানার নিকটেই (মাঝে মাঝে) আশ্রয় নিত। তিনি বলেন, এরপর গ্রাম থেকে এক মহিলা বের হয়ে এলে উক্ত রাখাল তার সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়। এতে মহিলাটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। তখন লোকেরা তাকে জিজ্ঞেস করল, এ (সন্তান) কোথা থেকে? সে উত্তর দিল, এ ইবাদাতখানায় যে বাস করে, তার থেকে। তিনি বলেন, এরপর তারা শাবল কোদাল ইত্যাদি নিয়ে এলো এবং চীৎকার করে ডাক দিল। তখন জুরায়জ সালাতে মশগুল ছিলেন। কাজেই তিনি তাদের সাথে কথা বললেন না। তিনি বলেন, এরপর তারা তার ইবাদাতখানা ধ্বংস করতে লাগল।

তিনি এ অবস্থা দেখে নীচে নেমে এলেন। এরপর তারা বলল, এ মহিলাকে জিজ্ঞেস করো (সে কী বলছে)। তিনি বলেন, তখন জুরায়জ মুচকি হেসে শিশুটির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, তোমার পিতা কে? তখন শিশুটি বলল, আমার পিতা সে মেষ রাখাল। যখন তারা সে শিশুটির মুখে এ কথা শুনতে পেল তখন তারা বলল, (হে দরবেশ) আমরা তোমার ইবাদাতখানার (গীর্জার) যতটুকু ভেঙ্গে ফেলেছি তা সোনা-রূপা দিয়ে পুনঃনির্মাণ করে দেব। তিনি বললেন, না; বরং তোমরা মাটি দ্বারাই পূর্বের ন্যায় তা নির্মাণ করে দাও। এরপর তিনি তার ইবাদাতগাহে উঠে বসলেন। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬২৭৭, ইসলামিক সেন্টার ৬৩২৬)

باب تَقْدِيمِ بِرِّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى التَّطَوُّعِ بِالصَّلاَةِ وَغَيْرِهَا ‏‏

حَدَّثَنَا شَيْبَانُ بْنُ فَرُّوخَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ الْمُغِيرَةِ، حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ هِلاَلٍ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ كَانَ جُرَيْجٌ يَتَعَبَّدُ فِي صَوْمَعَةٍ فَجَاءَتْ أُمُّهُ ‏.‏ قَالَ حُمَيْدٌ فَوَصَفَ لَنَا أَبُو رَافِعٍ صِفَةَ أَبِي هُرَيْرَةَ لِصِفَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّهُ حِينَ دَعَتْهُ كَيْفَ جَعَلَتْ كَفَّهَا فَوْقَ حَاجِبِهَا ثُمَّ رَفَعَتْ رَأْسَهَا إِلَيْهِ تَدْعُوهُ فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ كَلِّمْنِي ‏.‏ فَصَادَفَتْهُ يُصَلِّي فَقَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَرَجَعَتْ ثُمَّ عَادَتْ فِي الثَّانِيَةِ فَقَالَتْ يَا جُرَيْجُ أَنَا أُمُّكَ فَكَلِّمْنِي ‏.‏ قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي ‏.‏ فَاخْتَارَ صَلاَتَهُ فَقَالَتِ اللَّهُمَّ إِنَّ هَذَا جُرَيْجٌ وَهُوَ ابْنِي وَإِنِّي كَلَّمْتُهُ فَأَبَى أَنْ يُكَلِّمَنِي اللَّهُمَّ فَلاَ تُمِتْهُ حَتَّى تُرِيَهُ الْمُومِسَاتِ ‏.‏ قَالَ وَلَوْ دَعَتْ عَلَيْهِ أَنْ يُفْتَنَ لَفُتِنَ ‏.‏ قَالَ وَكَانَ رَاعِي ضَأْنٍ يَأْوِي إِلَى دَيْرِهِ - قَالَ - فَخَرَجَتِ امْرَأَةٌ مِنَ الْقَرْيَةِ فَوَقَعَ عَلَيْهَا الرَّاعِي فَحَمَلَتْ فَوَلَدَتْ غُلاَمًا فَقِيلَ لَهَا مَا هَذَا قَالَتْ مِنْ صَاحِبِ هَذَا الدَّيْرِ ‏.‏ قَالَ فَجَاءُوا بِفُئُوسِهِمْ وَمَسَاحِيهِمْ فَنَادَوْهُ فَصَادَفُوهُ يُصَلِّي فَلَمْ يُكَلِّمْهُمْ - قَالَ - فَأَخَذُوا يَهْدِمُونَ دَيْرَهُ فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ نَزَلَ إِلَيْهِمْ فَقَالُوا لَهُ سَلْ هَذِهِ - قَالَ - فَتَبَسَّمَ ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَ الصَّبِيِّ فَقَالَ مَنْ أَبُوكَ قَالَ أَبِي رَاعِي الضَّأْنِ ‏.‏ فَلَمَّا سَمِعُوا ذَلِكَ مِنْهُ قَالُوا نَبْنِي مَا هَدَمْنَا مِنْ دَيْرِكَ بِالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ ‏.‏ قَالَ لاَ وَلَكِنْ أَعِيدُوهُ تُرَابًا كَمَا كَانَ ثُمَّ عَلاَهُ ‏.‏

حدثنا شيبان بن فروخ، حدثنا سليمان بن المغيرة، حدثنا حميد بن هلال، عن ابي رافع، عن ابي هريرة، انه قال كان جريج يتعبد في صومعة فجاءت امه ‏.‏ قال حميد فوصف لنا ابو رافع صفة ابي هريرة لصفة رسول الله صلى الله عليه وسلم امه حين دعته كيف جعلت كفها فوق حاجبها ثم رفعت راسها اليه تدعوه فقالت يا جريج انا امك كلمني ‏.‏ فصادفته يصلي فقال اللهم امي وصلاتي ‏.‏ فاختار صلاته فرجعت ثم عادت في الثانية فقالت يا جريج انا امك فكلمني ‏.‏ قال اللهم امي وصلاتي ‏.‏ فاختار صلاته فقالت اللهم ان هذا جريج وهو ابني واني كلمته فابى ان يكلمني اللهم فلا تمته حتى تريه المومسات ‏.‏ قال ولو دعت عليه ان يفتن لفتن ‏.‏ قال وكان راعي ضان ياوي الى ديره - قال - فخرجت امراة من القرية فوقع عليها الراعي فحملت فولدت غلاما فقيل لها ما هذا قالت من صاحب هذا الدير ‏.‏ قال فجاءوا بفىوسهم ومساحيهم فنادوه فصادفوه يصلي فلم يكلمهم - قال - فاخذوا يهدمون ديره فلما راى ذلك نزل اليهم فقالوا له سل هذه - قال - فتبسم ثم مسح راس الصبي فقال من ابوك قال ابي راعي الضان ‏.‏ فلما سمعوا ذلك منه قالوا نبني ما هدمنا من ديرك بالذهب والفضة ‏.‏ قال لا ولكن اعيدوه ترابا كما كان ثم علاه ‏.‏


Abu Huraira reported that Juraij was one who was devoted to (prayer) in the temple. His mother came to him. Humaid said that Abu Rafi' demonstrated before us like the demonstration made by abu Huraira to whom Allah's Messenger (ﷺ) had demonstrated as his mother called him placing her palms upon the eyebrows and lifting her head for calling him and said:
Juraij, it is your mother, so talk to her. She found him at that time absorbed in prayer, so he said (to himself): O Lord, my mother (is calling me) (whereas I am absorbed) in my prayer. He opted for prayer. She (his mother) went back, then came again for the second time and said: O Juraij, it is your mother (calling you), so talk to me. He said: O Allah. there is my mother also and my prayer, and he opted for prayer. She said: O Allah, this Juraij is my son. I pray to talk to him but he refuses to talk to me. O Allah, don't bring death to him unless he has seen the prostitutes, and had she invoked the curse upon him (from the heart of her heart) he would have been involved in some turmoil. There was a shepherd living near by his temple (the temple where Juraij was engaged in prayer). It so happened that a woman of that village came there and that shepherd committed fornication with her and she became pregnant and gave birth to a child. It was said to her: Whose child is this? She said: He is the child of one who is living in this temple. So there came persons with hatchets and spades. They called Juraij. He was absorbed in prayer and he did not talk to them and they were about to demolish that temple that he saw them and then came to them and they said: Ask her (this woman) what she says. He smiled and then touched the head of the child and said: Who is your father? He (the child) said: My father is the shepherd of the sheep, and when they heard this, they said: We are prepared to rebuild with gold and silver what we have demolished from your temple. He said: No, rebuild it with clay as it had been before. He then went up (to his room and absorbed himself in prayer).


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
৪৬। সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب)