২২০

পরিচ্ছেদঃ ৫৪. ইসলাম গ্রহণ এবং হিজরত ও হজ্জ পালনের দ্বারা পূর্ববর্তী গুনাহসমূহমাফ হয়ে যায়।

২২০-(১৯২/১২১) মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না আল আনায়ী, আবূ মা’ন আর রাকাশী ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ..... ইবনু শামাসাহ আল মাহরী (রহঃ) বলেন, আমরা ’আমর ইবনু আস (রাযিঃ) কে মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে দেখতে উপস্থিত হলাম। তখন তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে অনেক্ষণ কাঁদছিলেন। তার পুত্র তাকে তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বিভিন্ন সুসংবাদের উল্লেখ পূর্বক সান্তুনা দিচ্ছে যে, আব্বা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কি আপনাকে অমুক সুসংবাদ দেননি? রাবী বলেন, তখন তিনি পুত্রের দিকে মুখ ফিরালেন এবং বললেন, আমার সর্বোৎকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে “লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্ল-হ” এ কালিমার সাক্ষ্য দেয়া।

আর আমি অতিক্রম করেছি আমার জীবনের তিনটি পর্যায়। এক সময় তো আমি এমন ছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধাচরণে আমার চেয়ে কঠোরতর আর কেউই ছিল না। সে সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে কবজায় পেয়ে হত্যা করা ছিল আমার সবচাইতে প্রিয় ভাবনা। যদি সে অবস্থায় আমার মৃত্যু হত তবে নিশ্চিত আমাকে জাহান্নামে যেতে হত।

এরপর আল্লাহ যখন আমার অন্তরে ইসলামের অনুরাগ সৃষ্টি করে দিলেন, তখন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দরবারে উপস্থিত হয়ে অনুরোধ জানালাম যে, আপনার ডান হাত বাড়িয়ে দিন, আমি বাই’আত করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন, তখন আমি আমার হাত টেনে নিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমর, কি ব্যাপার? বললাম, পূর্বে আমি শর্ত করে নিতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, কি শর্ত করবে? আমি উত্তর করলাম, আল্লাহ যেন আমার সব গুনাহ মাফ করে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ’আমর! তুমি কি জান না যে, ইসলাম পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়। আর হিজরত পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? আর হজ্জ পূর্ববর্তী সকল অন্যায় মিটিয়ে দেয়? আমর বলেন, এ পর্যায়ে আমার অন্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপেক্ষা বেশি প্রিয় আর কেউ ছিল না। আমার চোখে তিনি অপেক্ষা মহান আর কেউ নেই। অপরিসীম শ্রদ্ধার কারণে আমি তার প্রতি চোখভরে তাকাতেও পারতাম না। আজ যদি আমাকে তার দৈহিক আকৃতির বর্ণনা করতে বলা হয় তবে আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারণ চোখ ভরে আমি কখনোই তার প্রতি তাকাতে পারিনি। ঐ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হত তবে অবশ্যই আমি জান্নাতী হওয়ার আশাবাদী থাকতাম।

পরবর্তীকালে আমরা নানা বিষয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছি, তাই জানি না, এতে আমার অবস্থান কোথায়? সুতরাং আমি যখন মারা যাব, তখন যেন কোন বিলাপকারিণী অথবা আগুন সে জানাযার সাথে না থাকে। আমাকে যখন দাফন করবে তখন আমার উপর আস্তে আস্তে মাটি ফেলবে এবং দাফন সেরে একটি উট যাবাহ করে তার মাংস বণ্টন করতে যে সময় লাগে ততক্ষণ আমার কবরের পাশে অবস্থান করবে। যেন তোমাদের উপস্থিতির কারণে আমি আতঙ্ক মুক্ত অবস্থায় থাকি ও চিন্তা করতে পারি যে, আমার প্রতিপালকের দূতের কি জবাব দিব। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২১, ইসলামিক সেন্টারঃ ২২৯)

باب كَوْنِ الإِسْلاَمِ يَهْدِمُ مَا قَبْلَهُ وَكَذَا الْهِجْرَةُ وَالْحَجُّ ‏‏

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى الْعَنَزِيُّ، وَأَبُو مَعْنٍ الرَّقَاشِيُّ وَإِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ كُلُّهُمْ عَنْ أَبِي عَاصِمٍ، - وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى - حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ، - يَعْنِي أَبَا عَاصِمٍ - قَالَ أَخْبَرَنَا حَيْوَةُ بْنُ شُرَيْحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، عَنِ ابْنِ شَمَاسَةَ الْمَهْرِيِّ، قَالَ حَضَرْنَا عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ وَهُوَ فِي سِيَاقَةِ الْمَوْتِ ‏.‏ فَبَكَى طَوِيلاً وَحَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الْجِدَارِ فَجَعَلَ ابْنُهُ يَقُولُ يَا أَبَتَاهُ أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِكَذَا أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِكَذَا قَالَ فَأَقْبَلَ بِوَجْهِهِ ‏.‏ فَقَالَ إِنَّ أَفْضَلَ مَا نُعِدُّ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ إِنِّي قَدْ كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلاَثٍ لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَمَا أَحَدٌ أَشَدَّ بُغْضًا لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنِّي وَلاَ أَحَبَّ إِلَىَّ أَنْ أَكُونَ قَدِ اسْتَمْكَنْتُ مِنْهُ فَقَتَلْتُهُ فَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَكُنْتُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَلَمَّا جَعَلَ اللَّهُ الإِسْلاَمَ فِي قَلْبِي أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ ابْسُطْ يَمِينَكَ فَلأُبَايِعْكَ ‏.‏ فَبَسَطَ يَمِينَهُ - قَالَ - فَقَبَضْتُ يَدِي ‏.‏ قَالَ ‏"‏ مَا لَكَ يَا عَمْرُو ‏"‏ ‏.‏ قَالَ قُلْتُ أَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِطَ ‏.‏ قَالَ ‏"‏ تَشْتَرِطُ بِمَاذَا ‏"‏ ‏.‏ قُلْتُ أَنْ يُغْفَرَ لِي ‏.‏ قَالَ ‏"‏ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الإِسْلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ ‏"‏ ‏.‏ وَمَا كَانَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَىَّ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَلاَ أَجَلَّ فِي عَيْنِي مِنْهُ وَمَا كُنْتُ أُطِيقُ أَنْ أَمْلأَ عَيْنَىَّ مِنْهُ إِجْلاَلاً لَهُ وَلَوْ سُئِلْتُ أَنْ أَصِفَهُ مَا أَطَقْتُ لأَنِّي لَمْ أَكُنْ أَمْلأُ عَيْنَىَّ مِنْهُ وَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الْحَالِ لَرَجَوْتُ أَنْ أَكُونَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ثُمَّ وَلِينَا أَشْيَاءَ مَا أَدْرِي مَا حَالِي فِيهَا فَإِذَا أَنَا مُتُّ فَلاَ تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ وَلاَ نَارٌ فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي فَشُنُّوا عَلَىَّ التُّرَابَ شَنًّا ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي ‏.‏

حدثنا محمد بن المثنى العنزي، وابو معن الرقاشي واسحاق بن منصور كلهم عن ابي عاصم، - واللفظ لابن المثنى - حدثنا الضحاك، - يعني ابا عاصم - قال اخبرنا حيوة بن شريح، قال حدثني يزيد بن ابي حبيب، عن ابن شماسة المهري، قال حضرنا عمرو بن العاص وهو في سياقة الموت ‏.‏ فبكى طويلا وحول وجهه الى الجدار فجعل ابنه يقول يا ابتاه اما بشرك رسول الله صلى الله عليه وسلم بكذا اما بشرك رسول الله صلى الله عليه وسلم بكذا قال فاقبل بوجهه ‏.‏ فقال ان افضل ما نعد شهادة ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله اني قد كنت على اطباق ثلاث لقد رايتني وما احد اشد بغضا لرسول الله صلى الله عليه وسلم مني ولا احب الى ان اكون قد استمكنت منه فقتلته فلو مت على تلك الحال لكنت من اهل النار فلما جعل الله الاسلام في قلبي اتيت النبي صلى الله عليه وسلم فقلت ابسط يمينك فلابايعك ‏.‏ فبسط يمينه - قال - فقبضت يدي ‏.‏ قال ‏"‏ ما لك يا عمرو ‏"‏ ‏.‏ قال قلت اردت ان اشترط ‏.‏ قال ‏"‏ تشترط بماذا ‏"‏ ‏.‏ قلت ان يغفر لي ‏.‏ قال ‏"‏ اما علمت ان الاسلام يهدم ما كان قبله وان الهجرة تهدم ما كان قبلها وان الحج يهدم ما كان قبله ‏"‏ ‏.‏ وما كان احد احب الى من رسول الله صلى الله عليه وسلم ولا اجل في عيني منه وما كنت اطيق ان املا عينى منه اجلالا له ولو سىلت ان اصفه ما اطقت لاني لم اكن املا عينى منه ولو مت على تلك الحال لرجوت ان اكون من اهل الجنة ثم ولينا اشياء ما ادري ما حالي فيها فاذا انا مت فلا تصحبني ناىحة ولا نار فاذا دفنتموني فشنوا على التراب شنا ثم اقيموا حول قبري قدر ما تنحر جزور ويقسم لحمها حتى استانس بكم وانظر ماذا اراجع به رسل ربي ‏.‏

Chapter: Islam destroys that which came before it, as do Hijrah (Emigration) and Hajj


It is narrated on the authority of Ibn Shamasa Mahri that he said: We went to Amr b. al-As and he was about to die. He wept for a long time and turned his face towards the wall. His son said: Did the Messenger of Allah (may peace be upon him not give you tidings of this? Did the Messenger of Allah (ﷺ) not give you tidings of this? He (the narrator) said: He turned his face (towards the audience) and said: The best thing which we can count upon is the testimony that there is no god but Allah and that Muhammad is the Messenger of Allah. Verily I have passed through three phases. (The first one) in which I found myself averse to none else more than I was averse to the Messenger of Allah (ﷺ) and there was no other desire stronger in me than the one that I should overpower him and kill him. Had I died in this state, I would have been definitely one of the denizens of Fire. When Allah instilled the love of Islam in my heart, I came to the Apostle (ﷺ) and said: Stretch out your right hand so that may pledge my allegiance to you. He stretched out his right hand, I withdrew my hand, He (the Holy Prophet) said: What has happened to you, O 'Amr? replied: I intend to lay down some condition. He asked: What condition do you intend to put forward? I said: should be granted pardon. He (the Holy Prophet) observed: Are you not aware of the fact that Islam wipes out all the previous (misdeeds)? Verily migration wipes out all the previous (misdeeds), and verily the pilgrimage wipes out all the (previous) misdeeds. And then no one as or dear to me than the Messenger of Allah and none was more sublime in my eyes than he, Never could I, pluck courage to catch a full glimpse of his face due to its splendour. So if I am asked to describe his features, I cannot do that for I have not eyed him fully. Had I died in this state had every reason to hope that I would have bee among the dwellers of Paradise. Then we were responsible for certain things (in the light of which) I am unable to know what is in store for me. When I die, let neither female mourner nor fire accompany me. When you bury me, fill my grave well with earth, then stand around it for the time within which a camel is slaughtered and its meat is distributed so that I may enjoy your intimacy and (in your company) ascertain what answer I can give to the messengers (angels) of Allah.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী)
১। ঈমান [বিশ্বাস] (كتاب الإيمان)