পরিচ্ছেদঃ ২৩/১২. সারীদ -এর উপরাংশ থেকে খাওয়া নিষেধ
৩/৩২৭৭। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খাদ্যদ্রব্য এনে রাখা হলে তার চারপাশ থেকে খাও এবং মধ্যভাগ রেখে দাও। কারণ এ মধ্যস্থলে বরকত নাযিল হয়।
بَاب النَّهْيِ عَنْ الْأَكْلِ مِنْ ذُرْوَةِ الثَّرِيدِ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ السَّائِبِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " إِذَا وُضِعَ الطَّعَامُ فَخُذُوا مِنْ حَافَتِهِ وَذَرُوا وَسَطَهُ فَإِنَّ الْبَرَكَةَ تَنْزِلُ فِي وَسَطِهِ " .
তাহকীক আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আলী ইবনুল মুনযীর সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শিয়া মতাবলম্বী। মাসলামাহ বিন কাসিম বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই তবে তিনি শিয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৪০, ১২/১৪৫ নং পৃষ্ঠা) ২. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনু মাঈন তাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা) ৩. আতা ইবনুস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করেছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনু হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। (তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা)
হাদিসটির ৭০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি ১৮০৫, আবু দাউদ ৩৭৭২, ৩৭৭৩, দারিমী ২০৪৬, আহমাদ ২৪৩৫, ২৭২৫, ৩১৮০, ৩০২৪, ৩৪২৮, ১৫৫৭৬, শারহুস সুন্নাহ ২৮৭৩।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
১। এই হাদীসটির দাবি মোতাবেক এটা প্রমাণিত হয় যে, মুসলিম ব্যক্তি যেন খাদ্যদ্রব্যের মাঝখান হতে খাওয়া শুরু না করে বরং নিজের পাশ থেকে খাওয়া শুরু করে। আর খাওয়ার সময় নিজের হাত যেন অন্য লোকদের প্রতিও প্রসারিত না করে। এবং খাবারের মাঝখান থেকেও খবার খেতে শুরু না করে। কিন্তু যখন বিভিন্ন প্রকারের খাবার বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে থাকবে অথবা মাঝখানে থাকবে, তখন ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো দিক থেকে কিংবা মাঝখান থেকেও খাবার নিয়ে খাওয়া বৈধ। এবং এই অবস্থায় বিভিন্ন দিক থেকে অথবা মাঝখান থেকে খাবার খেলে কোনো সমস্যা নেই। (এই বিধানটি ওই সময়ে উপযোগী যখন একটি বড়ো ডিশ বা বড় রেকাবি অথবা বড় প্লেটে কয়েক জন ব্যক্তি এক সাথে খেতে বসবে)।
১। এই হাদীসটির মধ্যে (আলবারাকা - الْبَرَكَةُ) শব্দটির ভাবার্থ হলো: অধিকতর কল্যাণ ও মঙ্গল। আর অধিকতর কল্যাণ ও মঙ্গলের নিদর্শন হলো: স্বাস্থ্য, সুখ, সুস্থতা, তৃপ্তি এবং মনের মধ্যে নিরাপত্তা, আরাম ও শান্তি অনুভব করা আর ভয় ও উদ্বেগ হতে নিরাপদ উপলব্ধি করা। এবং অকল্যাণ ও অমঙ্গলের নিদর্শন হলো: অন্তরের মধ্যে প্রবল লোভ, তীব্র লালসা, স্বার্থপরায়ণতা, অতৃপ্ত থাকা, আত্যন্তিক আত্মম্ভরিতা, অত্যধিক মতলবী হওয়া, বিদ্বেষ ও অমঙ্গল, দরিদ্র্যতা বা দীনতা, উদ্বেগ ও অস্বস্তিকর অবস্থা এবং অশান্ত মনোভাব বিরাজ করা।
It was narrated from Ibn ‘Abbas that the Messenger of Allah (ﷺ) said:
“When food is served, take from the sides and leave the middle, for the blessing descends in the middle.”