৩৬৩৮

পরিচ্ছেদঃ ৮. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেহের গঠন

৩৬৩৮। আলী (রাঃ)-এর নাতি ইবরাহীম ইবনু মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়্যা (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আলী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বৈশিষ্ট বর্ণনা করতে গিয়ে বলতেনঃ তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না এবং অত্যন্ত বেঁটেও ছিলেন না, বরং লোকদের মাঝে মধ্যম আকৃতির ছিলেন। তার মাথার চুল খুব বেশি কোকড়ানোও ছিল না এবং একেবারে সোজাও ছিল না, বরং কিছুটা ঢেউ খেলানো ছিল। তিনি স্থূলকায় ছিলেন না, তার মুখাবয়ব সম্পূর্ণ গোলাকার ছিল না, বরং কিছুটা গোলাকার ছিল। তিনি ছিলেন সাদা-লাল মিশ্রিত গৌরবর্ণের এবং লম্বা ভ্রুযুক্ত কালো চোখের অধিকারী। তার হাড়ের গ্রন্থিগুলো ছিল মজবুত, বাহু ছিল মাংসল।

তার দেহে অতিরিক্ত লোম ছিল না, বুক হতে নাভি পর্যন্ত হালকা লোমের একটি রেখা ছিল। তার হাতের তালু ও পায়ের পাতা ছিল মাংসে পুরু। তিনি দৃঢ় পদক্ষেপে চলতেন, যেন তিনি ঢালবিশিষ্ট স্থান হতে (নীচে সমতলে) নামছেন। তিনি কারো দিকে ফিরে তাকালে গোটা দেহ ঘুরিয়ে তাকাতেন। তার দুই কাধের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল নাবুওয়াতের মোহর। তিনি ছিলেন খাতামুন নাবিয়ীন (নবীগণের মোহর বা তাদের আগমন ধারার পরিসমাপ্তিকারী)। তিনি ছিলেন মানুষের মধ্যে প্রশস্ত হৃদয়ের অধিকারী ও দানশীল, বাক্যালাপে সত্যবাদী, কোমল হৃদয়ের অধিকারী এবং বন্ধু-বান্ধব ও সহোচরদের সাথে সম্মানের সাথে বসবাসকারী (অথবা সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত বংশোদ্ভূত)। যে কেউ তাকে প্রথম বারের মত দেখেই সে প্রভাবান্বিত হত। যে ব্যক্তি তার সাথে মিশত এবং তার প্রসঙ্গে জানতো সে তার প্রতি বন্ধু ভাবাপন্ন হয়ে যেত। তার বর্ণনা প্রদানকারী বলতে বাধ্য হত, তার আগে বা পরে আমি আর কাউকে তার এরকম (সৌন্দর্যময়) দেখিনি।

যঈফ, মুখতাসার শামায়িল, মিশকাত (৫৭৯১)

আবূ ঈসা বলেনঃ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসের সনদসূত্র মুত্তাসিল (অবিচ্ছিন্ন) নয়। আবূ জাফর বলেন, আমি আল-আসমাঈকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বৈশিষ্ট্য ও গঠনাকৃতি সম্পর্কিত বর্ণনার ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলতে শুনেছিঃ “মুম্মাগিত” অর্থ অতিরিক্ত লম্বা। আল-আসমাঈ আরো বলেন, আমি এক বিদুঈনকে কথা প্রসঙ্গে বলতে শুনেছি, “তামাগগাতা কী নুশশাবাতিন” (সে তার তীর খুব টেনেছে)।

"মুতারাদ্দিদ” অর্থ স্থূলতার কারণে বেঁটে দেহের একাংশ অপরাংশের মধ্যে প্রবিষ্ট মনে হওয়া। “কাতাত” অর্থ কুঞ্চিত ও কোকড়ানো। “রাজিল” যে ব্যক্তির মাথার চুল কোকড়ানো সে। “মুতাহহাম" অর্থ স্থল দেহ, মাংসল দেহ। "মুকালসাম” গোলগাল চেহারা। “মুশরাব" এমন রং যা সাদা-লালে (দুধে আলতায়) মিশ্ৰিত, গৌর, এটা সবচেয়ে সুন্দর বর্ণ। “আদআজ” অর্থ চোখ ঘোর কালো। “আহদাব” যার ভ্রু লম্বা। “কাতাদ” দুই কাঁধের সঙ্গমস্থল, একে কাহিল’ও বলা হয়। “মাসরুবাত” বুকের পশমের সরল রেখা যা বুক হতে নাভী পর্যন্ত প্রলম্বিত। “আশ-শাছন" অর্থ যার হাত ও পায়ের অঙ্গুলীসমূহ এবং হাত ও পায়ের পাতা মাংসবহুল। “আত-তাকাল্লাউ" অর্থ দৃঢ় পদক্ষেপে পথ অতিক্রম। “সাবাব” অর্থ (উপর হতে নীচে) ঢালু স্থান দিয়ে নেমে আসা। যেমন আমরা বলি, আমরা উপর হতে নীচে নামছি। “জালীলুল মুশাশ” বড় গ্রন্থিযুক্ত অর্থাৎ বাহুর অগ্রভাগ, উদ্ধবাহু। “ইশরাত” অর্থ সাহচর্য, “আশীরু" অর্থ সঙ্গী-সহচর, “বাদীহাতু" অর্থ দৈবাৎ, হঠাৎ। যেমন আরবরা বলে, বাদাহ্তুহু বিআমরিন অর্থাৎ আমি তাকে হঠাৎ কোন বিষয়ে ভীত-বিহব্বল করে দিয়েছি।

حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ أَبِي حَلِيمَةَ مِنْ قَصْرِ الأَحْنَفِ وَأَحْمَدُ بْنُ عَبْدَةَ الضَّبِّيُّ وَعَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ الْمَعْنَى وَاحِدٌ قَالُوا حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، مَوْلَى غُفْرَةَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، مِنْ وَلَدِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ كَانَ عَلِيٌّ رضى الله عنه إِذَا وَصَفَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمْ يَكُنْ بِالطَّوِيلِ الْمُمَغَّطِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ الْمُتَرَدِّدِ وَكَانَ رَبْعَةً مِنَ الْقَوْمِ وَلَمْ يَكُنْ بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ وَلاَ بِالسَّبِطِ كَانَ جَعْدًا رَجِلاً وَلَمْ يَكُنْ بِالْمُطَهَّمِ وَلاَ بِالْمُكَلْثَمِ وَكَانَ فِي الْوَجْهِ تَدْوِيرٌ أَبْيَضُ مُشْرَبٌ أَدْعَجُ الْعَيْنَيْنِ أَهْدَبُ الأَشْفَارِ جَلِيلُ الْمُشَاشِ وَالْكَتِدِ أَجْرَدُ ذُو مَسْرُبَةٍ شَثْنُ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ إِذَا مَشَى تَقَلَّعَ كَأَنَّمَا يَمْشِي فِي صَبَبٍ وَإِذَا الْتَفَتَ الْتَفَتَ مَعًا بَيْنَ كَتِفَيْهِ خَاتَمُ النُّبُوَّةِ وَهُوَ خَاتَمُ النَّبِيِّينَ أَجْوَدُ النَّاسِ كَفًّا وَأَشْرَحُهُمْ صَدْرًا وَأَصْدَقُ النَّاسِ لَهْجَةً وَأَلْيَنُهُمْ عَرِيكَةً وَأَكْرَمُهُمْ عِشْرَةً مَنْ رَآهُ بَدِيهَةً هَابَهُ وَمَنْ خَالَطَهُ مَعْرِفَةً أَحَبَّهُ يَقُولُ نَاعِتُهُ لَمْ أَرَ قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ مِثْلَهُ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو جَعْفَرٍ سَمِعْتُ الأَصْمَعِيَّ يَقُولُ فِي تَفْسِيرِهِ صِفَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْمُمَغَّطِ الذَّاهِبُ طُولاً ‏.‏ وَسَمِعْتُ أَعْرَابِيًّا يَقُولُ تَمَغَّطَ فِي نَشَّابَةٍ أَىْ مَدَّهَا مَدًّا شَدِيدًا ‏.‏ وَأَمَّا الْمُتَرَدِّدُ فَالدَّاخِلُ بَعْضُهُ فِي بَعْضٍ قِصَرًا وَأَمَّا الْقَطَطُ فَالشَّدِيدُ الْجُعُودَةِ وَالرَّجِلُ الَّذِي فِي شَعَرِهِ حُجُونَةٌ قَلِيلاً وَأَمَّا الْمُطَهَّمُ فَالْبَادِنُ الْكَثِيرُ اللَّحْمِ وَأَمَّا الْمُكَلْثَمُ فَالْمُدَوَّرُ الْوَجْهِ ‏.‏ وَأَمَّا الْمُشْرَبُ فَهُوَ الَّذِي فِي بَيَاضِهِ حُمْرَةٌ وَالأَدْعَجُ الشَّدِيدُ سَوَادِ الْعَيْنِ وَالأَهْدَبُ الطَّوِيلُ الأَشْفَارِ وَالْكَتِدُ مُجْتَمَعُ الْكَتِفَيْنِ وَهُوَ الْكَاهِلُ وَالْمَسْرُبَةُ هُوَ الشَّعْرُ الدَّقِيقُ الَّذِي هُوَ كَأَنَّهُ قَضِيبٌ مِنَ الصَّدْرِ إِلَى السُّرَّةِ ‏.‏ وَالشَّثْنُ الْغَلِيظُ الأَصَابِعِ مِنَ الْكَفَّيْنِ وَالْقَدَمَيْنِ وَالتَّقَلُّعُ أَنْ يَمْشِيَ بِقُوَّةٍ وَالصَّبَبُ الْحُدُورُ يَقُولُ انْحَدَرْنَا فِي صَبُوبٍ وَصَبَبٍ وَقَوْلُهُ جَلِيلُ الْمُشَاشِ يُرِيدُ رُءُوسَ الْمَنَاكِبِ وَالْعَشِيرَةُ الصُّحْبَةُ وَالْعَشِيرُ الصَّاحِبُ وَالْبَدِيهَةُ الْمُفَاجَأَةُ يُقَالَ بَدَهْتُهُ بِأَمْرٍ أَىْ فَجَأْتُهُ ‏.‏

حدثنا ابو جعفر، محمد بن الحسين بن ابي حليمة من قصر الاحنف واحمد بن عبدة الضبي وعلي بن حجر المعنى واحد قالوا حدثنا عيسى بن يونس، حدثنا عمر بن عبد الله، مولى غفرة حدثني ابراهيم بن محمد، من ولد علي بن ابي طالب قال كان علي رضى الله عنه اذا وصف النبي صلى الله عليه وسلم قال لم يكن بالطويل الممغط ولا بالقصير المتردد وكان ربعة من القوم ولم يكن بالجعد القطط ولا بالسبط كان جعدا رجلا ولم يكن بالمطهم ولا بالمكلثم وكان في الوجه تدوير ابيض مشرب ادعج العينين اهدب الاشفار جليل المشاش والكتد اجرد ذو مسربة شثن الكفين والقدمين اذا مشى تقلع كانما يمشي في صبب واذا التفت التفت معا بين كتفيه خاتم النبوة وهو خاتم النبيين اجود الناس كفا واشرحهم صدرا واصدق الناس لهجة والينهم عريكة واكرمهم عشرة من راه بديهة هابه ومن خالطه معرفة احبه يقول ناعته لم ار قبله ولا بعده مثله ‏.‏ قال ابو عيسى هذا حديث حسن غريب ليس اسناده بمتصل ‏.‏ قال ابو جعفر سمعت الاصمعي يقول في تفسيره صفة النبي صلى الله عليه وسلم الممغط الذاهب طولا ‏.‏ وسمعت اعرابيا يقول تمغط في نشابة اى مدها مدا شديدا ‏.‏ واما المتردد فالداخل بعضه في بعض قصرا واما القطط فالشديد الجعودة والرجل الذي في شعره حجونة قليلا واما المطهم فالبادن الكثير اللحم واما المكلثم فالمدور الوجه ‏.‏ واما المشرب فهو الذي في بياضه حمرة والادعج الشديد سواد العين والاهدب الطويل الاشفار والكتد مجتمع الكتفين وهو الكاهل والمسربة هو الشعر الدقيق الذي هو كانه قضيب من الصدر الى السرة ‏.‏ والشثن الغليظ الاصابع من الكفين والقدمين والتقلع ان يمشي بقوة والصبب الحدور يقول انحدرنا في صبوب وصبب وقوله جليل المشاش يريد رءوس المناكب والعشيرة الصحبة والعشير الصاحب والبديهة المفاجاة يقال بدهته بامر اى فجاته ‏.‏


Narrated Ibrahim bin Muhammad, one of the offspring of 'Ali bin Abi Talib:
said: "When 'Ali [may Allah be pleased with him] described the Prophet (ﷺ) he would say: 'He was not extremely tall (Mummaghit), nor was he extremely short (Mutaraddid), and he was of medium height in relation to the people. The wave of his hair was not completely curly (Qatat), nor straight, but it was in between. He did not have a large head, nor a small head (Mukaltham), his face was round and a blended-white color (Mushrab), his eyes were dark black (Ad'aj), his eye-lashes were long (Ahdab). He was big-boned and broad shouldered (Al-Katad), his body hair was well-placed, and he had a Masrubah, his hands and feet were thick (Shathn). When he walked he walked briskly (Taqalla'), he leaned forward as if he was walking on a decline (Sabab). And if he turned his head, his body turned as well, between his two shoulders was the seal of Prophethood, and he was the seal of the Prophets. He was the most generous of people [in hand, and the most big-hearted of them] in breast. He was the most truthful of people in speech, the softest of them in nature, and the most noble of them in his relations ('Ishrah). Whoever saw him for the first time (Badihah) would fear him, and whoever got to know him, loved him. The one who tried to describe him would have to say: 'I have not seen before him or after him anyone who resembles him (ﷺ).'"


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৪৬/ রাসূলুল্লাহ ﷺ ও তার সাহাবীগণের মর্যাদা (كتاب المناقب عن رسول الله ﷺ)