৬৬২

পরিচ্ছেদঃ ২৮. দানের মর্যাদা

৬৬২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ; নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা দান-খাইরাত কুবুল করেন এবং তা ডান হাতে গ্রহণ করেন। সেগুলো প্রতিপালন করে তিনি ঘোড়ার বাচ্চা লালন-পালন করে বড় করতে থাকে। (এ দানের) এক একটি গ্রাস বাড়তে বাড়তে উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ হয়ে যায়। এর প্রমাণে আল্লাহ তা’আলার কিতাবে আছেঃ তিনি তার বান্দাদের তাওবা কুবুল করেন এবং তাদের দান গ্রহণ করেন" (সূরাঃ তাওবা- ১০৪)। “আল্লাহ তা’আলা সুদকে নির্মুল করেন এবং দান-খাইরাত বাড়িয়ে দেন" (সূরাঃ বাকারা- ২৭৬)

হাদীসের বর্ধিত অংশ এর প্রমাণে আল্লাহ্ তা’আলার কিতাব রয়েছে. মুনকার। ইরওয়া (৩/৩৯৪), তা’লীকুর রাগীব (২/১৯)

আবূ ঈসা বলেন; এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আয়িশাহ (রাযিঃ)-এর সূত্রেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। অনেক বিদ্বানগণই এ হাদীস বা এর অনুরূপ বর্ণনা যাতে আল্লাহর গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে, যেমন আল্লাহ প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন, এ বর্ণনাগুলো সহীহ সাব্যস্ত আছে। ঐগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। এমন বলা যাবে না যে, এটা কিভাবে? এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের বিদ্বানগণের অভিমত।

জাহমিয়াহ সম্প্রদায় এ ধরনের বর্ণনাগুলো অস্বীকার করে। আর বলে, এতে সাদৃশ্য সাব্যস্ত হয়। আল্লাহ তা’আলা কুরআনের অনেক জায়গায় হাত, শ্রবণ এবং দৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন। জাহমিয়াহগণ তার অপব্যাখ্যা করে বলেছে হাত অর্থ শক্তি।

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম বলেনঃ সাদৃশ্য তখন সাব্যস্ত হবে যখন বলা হবে অমুক হাতের মত হাত, অমুক শ্রবণের মত শ্রবণ। কিন্তু যদি বলে, হাত, শ্রবণ ও দৃষ্টি তা সৃষ্টির শ্রবণের মত নয় তবে সাদৃশ্য সাবস্ত হবে না। যেমনটি আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, “তার সাদৃশ্য কিছুই নেই। তিনি শ্রবণকারী ও দ্রষ্টা।”

 


৬৬২। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা দান-খাইরাত কবুল করেন এবং তা ডান হাতে গ্রহণ করেন, আর সেগুলো তিনি প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চা লালন-পালন করে বড় করে, এমনকি তা বাড়তে বাড়তে উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ হয়ে যায়। এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার কিতাবে আছে, “তিনি তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন এবং তাদের দান গ্রহণ করেন” [সূরা আত-তাওবা: ১০৪]। “আল্লাহ সুদকে নির্মুল করেন এবং দান-খাইরাত বাড়িয়ে দেন” [সূরা আল-বাকারা: ২৭৬]

আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহার সূত্রেও নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। অনেক আলেমগণই বলেছেন, এ হাদীস বা এর অনুরূপ বর্ণনা যাতে আল্লাহর গুণাবলি বর্ণিত হয়েছে, যেমন আল্লাহ প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন, এ বর্ণনাগুলো সহীহ সাব্যস্ত আছে, সুতরাং সেগুলোর প্রতি ঈমান আনতে হবে এবং এগুলোর বিষয়ে ধারণা করে কিছু বলা যাবে না, আর এমন বলা যাবে না যে, এটা কীভাবে?

এমনটিই বর্ণিত হয়েছে মালিক, সুফইয়ান, ইবন উওয়াইনাহ ও আবদুল্লাহ ইবনুল মুবারক রাহিমাহুমুল্লাহ থেকে। তারা এ সকল হাদীসের ব্যাপাারে বলেছেন: এগুলোকে ধরণ নির্ধারণ ছাড়াই চালিয়ে নাও। এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমগণের অভিমত।

জাহমিয়া সম্প্রদায় এ ধরনের বর্ণনাগুলো অস্বীকার করে। আর বলে, এতে সাদৃশ্য সাব্যস্ত হয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে অনেক জায়গায় হাত, শ্রবণশক্তি এবং দৃষ্টিশক্তির কথা উল্লেখ করেছেন। জাহমিয়ারা তার অপব্যাখ্যা করেছে এবং সেগুলোকে আলেমগণ যে অর্থ ও ব্যাখ্যা করেছেন তা থেকে ভিন্ন দিকে নিয়ে অপব্যাখ্যা করেছে এবং বলেছে আল্লাহ তা‘আলা আদমকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেননি, আর তারা আরো বলেছে এখানে হাত অর্থ শক্তি।

ইসহাক ইবন ইবরাহীম বলেন, সাদৃশ্য তো তখন সাব্যস্ত হবে যখন বলা হবে হাতের মতো হাত, অথবা হাতের অনুরূপ হাত, অথবা বলা হবে শ্রবণের মতো শ্রবণ বা শ্রবণের অনুরূপ শ্রবণ। এটিই হচ্ছে সাদৃশ্য প্রদানের প্রকৃত রূপ। কিন্তু যদি তা বলে যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: হাত, শ্রবণ ও দৃষ্টি, কিন্তু ধরণ নির্ধারণ না করে তাহলে সাদৃশ্য সাব্যস্ত হবে না। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে বলেছেন: “তাঁর সদৃশ কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।” [সূরা আশ-শূরা: ১১]


অনুবাদে ত্রুটি থাকার কারনে তা সংশোধন করা হল। - হাদিসবিডি এডমিন

باب مَا جَاءَ فِي فَضْلِ الصَّدَقَةِ

حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا الْقَاسِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ إِنَّ اللَّهَ يَقْبَلُ الصَّدَقَةَ وَيَأْخُذُهَا بِيَمِينِهِ فَيُرَبِّيهَا لأَحَدِكُمْ كَمَا يُرَبِّي أَحَدُكُمْ مُهْرَهُ حَتَّى إِنَّ اللُّقْمَةَ لَتَصِيرُ مِثْلَ أُحُدٍ ‏"‏ ‏.‏ وَتَصْدِيقُ ذَلِكَ فِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏(‏وهُوَ الَّذِي يَقبَلُ التَّوبَةَ عَنْ عِبَادِهِ ‏)‏ ويَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ‏‏ ‏(يَمْحَقُ الله الرَّبَا ويُرْبِي الصَّدَقَاتِ‏)‏‏.‏
قَالَ أَبُو عِيسَى: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوُ هَذَا. وَقَدْ قَالَ غَيْرُ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ وَمَا يُشْبِهُ هَذَا مِنَ الرِّوَايَاتِ مِنَ الصِّفَاتِ وَنُزُولِ الرَّبِّ تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالُوا قَدْ تَثْبُتُ الرِّوَايَاتُ فِي هَذَا وَيُؤْمَنُ بِهَا وَلاَ يُتَوَهَّمُ وَلاَ يُقَالُ كَيْفَ هَكَذَا رُوِيَ عَنْ مَالِكٍ وَسُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ أَنَّهُمْ قَالُوا فِي هَذِهِ الأَحَادِيثِ أَمِرُّوهَا بِلاَ كَيْفٍ. وَهَكَذَا قَوْلُ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ. وَأَمَّا الْجَهْمِيَّةُ فَأَنْكَرَتْ هَذِهِ الرِّوَايَاتِ وَقَالُوا هَذَا تَشْبِيهٌ. وَقَدْ ذَكَرَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي غَيْرِ مَوْضِعٍ مِنْ كِتَابِهِ الْيَدَ وَالسَّمْعَ وَالْبَصَرَ فَتَأَوَّلَتِ الْجَهْمِيَّةُ هَذِهِ الآيَاتِ فَفَسَّرُوهَا عَلَى غَيْرِ مَا فَسَّرَ أَهْلُ الْعِلْمِ وَقَالُوا إِنَّ اللَّهَ لَمْ يَخْلُقْ آدَمَ بِيَدِهِ. وَقَالُوا إِنَّ مَعْنَى الْيَدِ هَاهُنَا الْقُوَّةُ. وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ إِنَّمَا يَكُونُ التَّشْبِيهُ إِذَا قَالَ يَدٌ كَيَدٍ أَوْ مِثْلُ يَدٍ أَوْ سَمْعٌ كَسَمْعٍ أَوْ مِثْلُ سَمْعٍ. فَإِذَا قَالَ سَمْعٌ كَسَمْعٍ أَوْ مِثْلُ سَمْعٍ فَهَذَا التَّشْبِيهُ وَأَمَّا إِذَا قَالَ كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى يَدٌ وَسَمْعٌ وَبَصَرٌ وَلاَ يَقُولُ كَيْفَ وَلاَ يَقُولُ مِثْلُ سَمْعٍ وَلاَ كَسَمْعٍ فَهَذَا لاَ يَكُونُ تَشْبِيهًا وَهُوَ كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى فِي كِتَابِهِ: (لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ).

حدثنا ابو كريب، محمد بن العلاء حدثنا وكيع، حدثنا عباد بن منصور، حدثنا القاسم بن محمد، قال سمعت ابا هريرة، يقول قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏"‏ ان الله يقبل الصدقة وياخذها بيمينه فيربيها لاحدكم كما يربي احدكم مهره حتى ان اللقمة لتصير مثل احد ‏"‏ ‏.‏ وتصديق ذلك في كتاب الله عز وجل ‏(‏وهو الذي يقبل التوبة عن عباده ‏)‏ وياخذ الصدقات‏‏ ‏(يمحق الله الربا ويربي الصدقات‏)‏‏.‏ قال ابو عيسى: هذا حديث حسن صحيح. وقد روي عن عاىشة عن النبي صلى الله عليه وسلم نحو هذا. وقد قال غير واحد من اهل العلم في هذا الحديث وما يشبه هذا من الروايات من الصفات ونزول الرب تبارك وتعالى كل ليلة الى السماء الدنيا قالوا قد تثبت الروايات في هذا ويومن بها ولا يتوهم ولا يقال كيف هكذا روي عن مالك وسفيان بن عيينة وعبد الله بن المبارك انهم قالوا في هذه الاحاديث امروها بلا كيف. وهكذا قول اهل العلم من اهل السنة والجماعة. واما الجهمية فانكرت هذه الروايات وقالوا هذا تشبيه. وقد ذكر الله عز وجل في غير موضع من كتابه اليد والسمع والبصر فتاولت الجهمية هذه الايات ففسروها على غير ما فسر اهل العلم وقالوا ان الله لم يخلق ادم بيده. وقالوا ان معنى اليد هاهنا القوة. وقال اسحاق بن ابراهيم انما يكون التشبيه اذا قال يد كيد او مثل يد او سمع كسمع او مثل سمع. فاذا قال سمع كسمع او مثل سمع فهذا التشبيه واما اذا قال كما قال الله تعالى يد وسمع وبصر ولا يقول كيف ولا يقول مثل سمع ولا كسمع فهذا لا يكون تشبيها وهو كما قال الله تعالى في كتابه: (ليس كمثله شيء وهو السميع البصير).


Abu Hurairah narrated that :
the Messenger of Allah said: "Indeed Allah accepts charity, and He accepts it with His Right (Hand) to nurture it for one of you, just like one of you would nuture his foal, until the bite (of food) becomes as large as Uhud." The Book of Allah, the Mighty and Sublime testifies to that: 'He accepts repentance from His worshipers, and accepts charity.'And: 'Allah will destroy Riba and give increase for charity.' (Abu Eisa) said: This Hadith is (Hasan) Sahih.


হাদিসের মানঃ মুনকার (সহীহ হাদীসের বিপরীত)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সুনান আত তিরমিজী (তাহকীককৃত)
৫/ যাকাত (كتاب الزكاة عن رسول الله ﷺ)