পরিচ্ছেদঃ ৩২. (রাতের নামাযের বিশেষ দু'আ)
৩৪২২। আলী ইবনু আবী তালিব (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (রাতে তাহাজ্জুদ) নামাযে দণ্ডায়মান হতেন তখন বলতেনঃ “একনিষ্ঠভাবে আমি আমার মুখমণ্ডল তার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম যিনি আকাশমণ্ডলী ও দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের দলভুক্ত নই” (সূরা আন’আম ৭৯)। "আমার নামায, আমার ইবাদাত (হাজ্জ ও কুরবানী), আমার প্রাণ, আমার মৃত্যু বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহ তা’আলার জন্য। তার কোন অংশীদার নেই এবং আমি এজন্যই আদিষ্ট হয়েছি। আমি একজন মুসলিম”— (সূরা আন’আম ১৬২-১৬৩)।
“হে আল্লাহ! তুমিই বাদশাহ, তুমি ব্যতীত আর কোন মা’বূদ নেই, তুমিই আমার প্রভু, আমি তোমার দাস। আমার আত্মার প্রতি আমি যুলুম করেছি এবং আমি আমার কৃত অন্যায় স্বীকার করেছি। সুতরাং আমার সকল অপরাধ তুমি ক্ষমা করে দাও। কেননা তুমি ছাড়া অপরাধ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। তুমি আমাকে সর্বোত্তম চরিত্রের পথে পরিচালিত কর। কেননা তুমি ব্যতীত অন্য কেউ সর্বোত্তম চরিত্রের রাস্তায় পরিচালিত করতে পারে না।
আমাকে অপরাধ হতে তুমি ফিরিয়ে রাখ, কেননা তুমি ছাড়া অন্য কেউ আমাকে খারাপ পথ হতে ফিরিয়ে রাখতে পারে না। তোমার সমীপে আমি উপস্থিত, সকল সৌভাগ্য ও মঙ্গল তোমার আয়ত্তাধীন। আর খারাপের কিছুই তোমার দিকে সম্পর্কিত করা যায় না। আমি তোমার জন্যই এবং তোমার নিকটেই আমার ফিরে আসা। তুমি মঙ্গলময় ও সুমহান। তোমার কাছে আমি মাফ চাই এবং তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তন করি”।
তিনি রুকূ’তে গিয়ে বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রুকূ করলাম, তোমার উপর ঈমান আনলাম এবং তোমার নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। সুতরাং আমার কান, আমার চোখ, আমার সকল হাড় ও স্নায়ুগুলো তোমার জন্যই অবনমিত”।
তিনি (রুকূ’ হতে) মাথা তুলে বলতেনঃ “হে আল্লাহ, আমাদের প্রভু! তোমার জন্য সকল প্রশংসা-আকাশ, যমীন ও এ দু’য়ের মাঝে যা কিছু আছে এবং তুমি যা চাও এ সকল পূর্ণ পরিমাণ”।
তিনি সিজদাতে গিয়ে বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি সিজদা করলাম, তোমার উপর ঈমান আনলাম, আমি তোমার নিকট আত্মসমর্পণ করলাম। আমার চেহারা তার উদ্দেশে সিজদা করল, যিনি তা সৃষ্টি করেছেন, তাকে সুন্দর আকৃতি দান করেছেন এবং (তা ভেদ করে) তার কান ও চোখ ফুটিয়েছেন। সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ তা’আলা বারাকাতময়”।
তারপর তাশাহহুদ ও সালামের মাঝে সবশেষে তিনি বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি পূর্বে ও পরে, লুকায়িত ও প্রকাশ্য যে গুনাহ করেছি, যে উচ্ছৃঙ্খলতা করেছি এবং আমার প্রসঙ্গে তোমার জানা মতে, যা কিছু আমি (অন্যায়-অপরাধ) করেছি সে সব তুমি ক্ষমা করে দাও। তুমিই শুরু এবং তুমিই শেষ। তুমি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই"।
সহীহঃ প্রাগুক্ত।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
باب مِنْهُ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْخَلاَّلُ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي سَلَمَةَ، وَيُوسُفُ بْنُ الْمَاجِشُونِ، قَالَ عَبْدُ الْعَزِيزِ حَدَّثَنِي عَمِّي، وَقَالَ، يُوسُفُ أَخْبَرَنِي أَبِي، حَدَّثَنِي الأَعْرَجُ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ " وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ أَنْتَ رَبِّي وَأَنَا عَبْدُكَ ظَلَمْتُ نَفْسِي وَاعْتَرَفْتُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي ذُنُوبِي جَمِيعًا إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ وَاهْدِنِي لأَحْسَنِ الأَخْلاَقِ لاَ يَهْدِي لأَحْسَنِهَا إِلاَّ أَنْتَ وَاصْرِفْ عَنِّي سَيِّئَهَا لاَ يَصْرِفُ عَنِّي سَيِّئَهَا إِلاَّ أَنْتَ لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ كُلُّهُ فِي يَدَيْكَ وَالشَّرُّ لَيْسَ إِلَيْكَ أَنَا بِكَ وَإِلَيْكَ تَبَارَكْتَ وَتَعَالَيْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ " . فَإِذَا رَكَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَعِظَامِي وَعَصَبِي " . فَإِذَا رَفَعَ قَالَ " اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَاءِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ " . فَإِذَا سَجَدَ قَالَ " اللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ سَجَدَ وَجْهِي لِلَّذِي خَلَقَهُ فَصَوَّرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ فَتَبَارَكَ اللَّهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِينَ " . ثُمَّ يَقُولُ مِنْ آخِرِ مَا يَقُولُ بَيْنَ التَّشَهُّدِ وَالتَّسْلِيمِ " اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ " . قَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Ali bin Abi Talib narrated that whenever the Messenger of Allah would stand for Salat, he would say:
“I have directed my face towards the One who has created the heavens and the earth, as a Hanif, and I am not of the idolaters. Indeed, my Salat, my sacrifice, my living, my dying, is for Allah, the Lord of all that exists, without partner, and with this have I been ordered and I am of the Muslims. O Allah, You are the King, there is none worthy of worship except You. You are My Lord, and I am Your slave, I have wronged myself and I admit to my sin, so forgive me all my sins, verily, there is none who forgives sins but You, and guide me to the best of manners, none guides to the best of them except You, and turn away from me the evil of them, none can turn away from me the evil of them except You. Here I am in obedience to You, and in aiding Your cause, and the good, all of it is in Your Hands, and the evil is not attributed to You, I am reliant upon You and ever-turning towards You, Blessed are You and Exalted are You. I seek Your forgiveness and I repent to you (Wajjahtu wajhiya lilladhī faṭaras-samāwāti wal-arḍa ḥanīfan wa mā ana min al-mushrikīn, inna ṣalātī wa nusukī wa maḥyāya wa mamātī lillāhi rabbil-`ālamīn, lā sharīka lahū wa bidhālika umirtu wa ana min al-muslimīn. Allāhumma antal-maliku lā ilāha illā ant, anta rabbī, wa ana `abduka ẓalamtu nafsī wa`taraftu bidhanbī faghfirlī dhunūbī jamī`an, innahū lā yaghfir adh-dhunūba illā ant. Wahdinī li-aḥsanil-akhlāqi lā yahdī li-aḥsanihā illā ant. Waṣrif `annī sayyi’ahā lā yaṣrifu `annī sayyi’aha illā ant. Labaika wa sa`daika wal-khairu kulluhū fī yadaika, wash-sharru laisa ilaik, tabārakta wa ta`ālaita astaghfiruka wa atūbu ilaik).” And when he would bow in Ruku he would say: “O Allah, to You have I bowed, and in You have I believed, and to You have I submitted. My hearing, my sight, my bones, and my sinew are humbled to you (Allāhumma laka raka`tu wa bika āmantu wa laka aslamtu. Khasha`a laka sam`ī wa baṣarī wa `iẓāmī, wa `aṣabī).” And when he would rise he would say: “O Allah, our Lord, to You is praise filling the heaven and filling the earth, and filling what is between them, and filling whatever You have wished of things afterward (Allāhumma rabbanā lakal-ḥamdu mil’as-samāwāti wa mil’al-arḍ wa mil’a mā bainahumā, wa mil’a mā shi’ta min shay’in ba`d).” Then, when he prostrated, he would say: “O Allah, to You have I prostrated, and in You have I believed, and to You have I submitted (in Islam), my face has prostrated to the One Who created it, and fashioned it, and gave it its hearing and sight, [so] Blessed is Allah, the Best of Creators (Allāhumma laka sajadtu wa bika āmantu wa laka aslamtu, sajada wajhi lilladhī khalaqahū fa ṣuwwarahū wa shaqqa sam`ahū wa baṣarahū fatabārak Allāhu ahsanul-khāliqīn).” Then the last of what he would say between At-Tashahud and At-Taslim was: “O Allah, forgive me what I have done, before and after, and what I have hidden, and what I have done openly, and what I have transgressed the limit in, and what You know about more than me, You are the One Who sends forth and the One Who delays, there is none worthy of worship except You (Allāhummaghfirlī mā qaddamtu wa mā akhkhartu wa mā asrartu wa mā a`lantu wa mā asraftu wa mā anta a`lamu bihī minnī antal-Muqaddimu wa antal-Mu’akhkhiru, lā ilāha illā ant).”