পরিচ্ছেদঃ ৭০. সূরা আল-জিন্ন
৩৩২৩। ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, জিনদেরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না কিছু (কুরআন) পাঠ করে শুনিয়েছেন আর না তাদেরকে প্রত্যক্ষ করেছেন। (বরং ঘটনা এই যে, একদিন) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার একদল সাহাবীকে সঙ্গে নিয়ে উকায নামক বাজারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। ইতোমধ্যে আকাশের সংবাদ শোনার বিষয়ে জিনদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হয়।
অতঃপর শাইতান জিনেরা নিজেদের সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসলে তখন তাদের অপরাপর জিনেরা প্রশ্ন করে, কি বিষয়! তারা বলে, আকাশের সংবাদ সংগ্ৰহ করতে আমাদের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হচ্ছে এবং আমাদের প্রতি উল্কাপিণ্ড নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। তারা বলল, অবশ্যই নতুন কিছু ঘটার কারণে আমাদের ও আকাশের সংবাদ সংগ্রহের মধ্যে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম সব জায়গায় তোমরা ঘুরে দেখ, কি ব্যাপার ঘটেছে যার কারণে তোমাদের ও আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং পৃথিবীর পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত তারা তাদের আকাশের সংবাদের মাঝে বাধার কারণ বের করার জন্য বেরিয়ে পড়ল।
যারা তিহামার উদ্দেশে বেরিয়েছিল তারা “নাখলা" নামক জায়গায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উকাযের বাজারে যাওয়ার পথে এখানে অবস্থান করছিলেন। সে সময় সাহাবীদেরকে নিয়ে তিনি ফজরের নামায আদায় করছিলেন। জিনদের ঐ দলটি কুরআন মাজীদের তিলাওয়াত শুনতে পেয়ে গভীর মনোযোগের সাথে তা শুনে। তারা বলল, আল্লাহর কসম! এটাই সেই জিনিস যা তোমাদের ও আকাশের খবরের মধ্যে বাধার কারণ ঘটিয়েছে।
বর্ণনাকারী বলেন, সে সময় তারা তাদের গোত্রে ফিরে গিয়ে বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়! আমরা এক বিস্ময়কর কুরআন শুনেছি, আমাদেরকে যা কল্যাণের পথ দেখায়। তাই তার উপর আমরা ঈমান এনেছি। আর কখনো আমরা আমাদের প্রভুর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করব না। আল্লাহ তা’আলা তার নবীর নিকট আয়াত অবতীর্ণ করেন (অনুবাদ) “আপনি বলুন, আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, জিনদের একদল মনোযোগ সহকারে (কুরআন) শুনেছে"- (সূরা জিন ১)। এভাবে ওয়াহী দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিনদের আলাপচারিতা প্রসঙ্গে জানানো হয়। "
সহীহঃ বুখারী (হাঃ ৪৯২১), মুসলিম (হাঃ ২/৩৫, ৩৬)।
একই সনদে ইবনু আব্বাস (রাযিঃ) হতে আরো বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ এটাও জিনদের কথা যা তারা তাদের গোত্রকে বলেছিল, “আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাকে ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় সে সময় তারা তার নিকট ভিড় জমায়”— (সূরা জিন ১৯)। আর যখন এই জিনেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে নামায আদায় করতে ও তার সাহাবীদেরও তার সঙ্গে নামায আদায় করতে এবং তার সিজদার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকেও সিজদা করতে দেখে সে সময়েই তারা তার প্রতি সাহাবীদের এ আনুগত্যে অবিভূত হয়। তারা তাদের সম্প্রদায়কে বলে, আল্লাহ তা’আলার বান্দা যখন তাকে (আল্লাহ তা’আলাকে) ডাকার জন্য দৃঢ়বদ্ধ হয় তখন তারা তার নিকট জড়ো হয়”।
হাদীসটির সানাদ সহীহ।
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، حَدَّثَنِي أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، رضى الله عنهما قَالَ مَا قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْجِنِّ وَلاَ رَآهُمُ انْطَلَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي طَائِفَةٍ مِنْ أَصْحَابِهِ عَامِدِينَ إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَقَدْ حِيلَ بَيْنَ الشَّيَاطِينِ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْهِمُ الشُّهُبُ فَرَجَعَتِ الشَّيَاطِينُ إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا مَا لَكُمْ قَالُوا حِيلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ وَأُرْسِلَتْ عَلَيْنَا الشُّهُبُ . فَقَالُوا مَا حَالَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ إِلاَّ مِنْ أَمْرٍ حَدَثَ فَاضْرِبُوا مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا فَانْظُرُوا مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ قَالَ فَانْطَلَقُوا يَضْرِبُونَ مَشَارِقَ الأَرْضِ وَمَغَارِبَهَا يَبْتَغُونَ مَا هَذَا الَّذِي حَالَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ فَانْصَرَفَ أُولَئِكَ النَّفَرُ الَّذِينَ تَوَجَّهُوا إِلَى نَحْوِ تِهَامَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ بِنَخْلَةَ عَامِدًا إِلَى سُوقِ عُكَاظٍ وَهُوَ يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ صَلاَةَ الْفَجْرِ فَلَمَّا سَمِعُوا الْقُرْآنَ اسْتَمَعُوا لَهُ فَقَالُوا هَذَا وَاللَّهِ الَّذِي حَالَ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ خَبَرِ السَّمَاءِ . قَالَ فَهُنَالِكَ رَجَعُوا إِلَى قَوْمِهِمْ فَقَالُوا يَا قَوْمَنَا : ( إنَّا سَمِعْنَا قُرْآنًا عَجَبًا * يَهْدِي إِلَى الرُّشْدِ فَآمَنَّا بِهِ وَلَنْ نُشْرِكَ بِرَبِّنَا أَحَدًا ) فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى نَبِيِّهِ : ( قلْ أُوحِيَ إِلَىَّ أَنَّهُ اسْتَمَعَ ) وَإِنَّمَا أُوحِيَ إِلَيْهِ قَوْلُ الْجِنِّ .
قَالَ وَبِهَذَا الإِسْنَادِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَوْلُ الْجِنِّ لِقَوْمِهِمْ (لمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا ) قَالَ لَمَّا رَأَوْهُ يُصَلِّي وَأَصْحَابُهُ يُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ فَيَسْجُدُونَ بِسُجُودِهِ قَالَ تَعَجَّبُوا مِنْ طَوَاعِيَةِ أَصْحَابِهِ لَهُ قَالُوا لِقَوْمِهِمْ : (لمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ كَادُوا يَكُونُونَ عَلَيْهِ لِبَدًا ) . قَالَ هَذَاَ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
Ibn Abbas [may Allah be pleased with them] said:
the Messenger of Allah did not recite for the jinns nor did he see them. The Messenger of Allah went out with a group of his Companions towards the Ukaz market. Something had been intervening between the Shayatin and the news from the heavens, and shooting stars has been sent upon them, so the Shayatin returned to their people and they said to them: ‘What is wrong with you?’ They replied: ‘Something has been intervening between us and the news of the heavens except that something has happened. So travel east and west in the earth and look for what is it that intervenes between you an between the news of the heavens.’” He said: “So they went traveling east and west on the earth, seeking whatever it was that had been intervening between them and the news of the heavens. A group of those who were traveling towards Tihamah headed in the direction of the Messenger of Allah, while he was at Nakhlah, enroute to the Ukaz market. He was performing Salat Al-Fajr with his Companions. When they heard the Quran they listened to it, and they said: ‘By Allah! This is what has been intervening between us and the news of the heavens.’” He said: “Then they returned to their people and said: ‘O our people! Verily we heard a wonderful Recitation! It guides to the Right Path, and we have believed therein, and we shall never join anything with our Lord.’ So Allah, Blessed is He and Most High, revealed to His Prophet: Say: ‘It has been revealed to me that a group of the jinn listened.’ So the saying of the jinns was only revealed to him.”